একের পর এক ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সড়কপথ। —নিজস্ব চিত্র।
পাহাড় থেকে সমতল, উত্তরবঙ্গে বৃষ্টিপাত অব্যাহত। সোমবার সকাল থেকে খানিক বিরতি ছিল। কিন্তু দুপুরের পর পাহাড় থেকে তরাই ডুয়ার্সে চলছে অবিরাম বর্ষণ। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, আগামী তিন-চার দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ি জেলার জন্য জারি হয়েছে লাল সতর্কতা। উত্তরের বাকি জেলাগুলোর জন্য হলুদ এবং কমলা কমলা সতর্কতা দিয়েছে হাওয়া অফিস। তার মধ্যে ধসের পর ধসে বিপর্যস্ত স্বাভাবিক জনজীবন। রবিবার থেকে বন্ধ রয়েছে শিলিগুড়ি থেকে সিকিমগামী ‘লাইফলাইন’ ১০ নম্বর জাতীয় সড়ক। লিকুভির, গেইলখোলা, বিড়িকদাড়া, ২৭ মাইল, ২৯ মাইল-সহ একাধিক জায়গায় ধসের ঘটনা ঘটেছে। দার্জিলিং, কালিম্পং, মিরিক, কার্শিয়াংয়ে টানা বৃষ্টির জন্য নতুন করে ধস দেখা দিয়েছে। ধসে প্রাণ গিয়েছে দার্জিলিংয়ের এক বাসিন্দারও। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বহু বাড়ি। এই পরিস্থিতিতে সংস্কারের জন্য পাঁচ কোটি টাকা বরাদ্দ করল গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিটিএ)।
সেবক করনেশন ব্রিজ পেরিয়ে কালিম্পং যাওয়ার রাস্তায় রম্ভি থানার কাছাকাছি একাধিক জায়গা ধসের কবলে পড়েছে। সে জন্য পুরোপুরি ভাবে বন্ধ রয়েছে জাতীয় সড়ক। কালিম্পং জেলা প্রশাসন থেকে ধস সরিয়ে রাস্তা তৈরির কাজ শুরু করলেও বাধা সেই বৃষ্টি। তিস্তার ধার ঘেঁষে যাওয়া একাধিক রাস্তার অবস্থা ভয়াবহ। এখন ডুয়ার্সের গরুবাথান থেকে লাভা হয়ে কালিম্পং থেকে সিকিম যেতে হচ্ছে যাত্রীদের। বৃষ্টির জলে মহানন্দা, লিস, ঘিস, রায়ডাক-সহ শহরের মধ্যে দিয়ে বয়ে যাওয়া জোড়াপানি, ফুলেশ্বরী এবং জলপাইগুড়ি দিয়ে বয়ে যাওয়া করলা নদীতেও জলস্তর বৃদ্ধি পেয়েছে।
জিটিএ সূত্রে খবর, কার্শিয়াং মহকুমার বালাসন নদী সংস্কারের জন্য ১৭ লক্ষ ৫২ হাজার, আপার নয়াবস্তি এবং সিটং এলাকায় ধস কবলিত এলাকার সংস্কার ও বাঁধ নির্মাণের জন্য ২৬ লক্ষ চার হাজার টাকা এবং ৪২ লক্ষ ৩১ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়েছে। পাশাপাশি গয়াবাড়িগাঁও এলাকার গোলাইঝোরা এলাকায় ধস কবলিত এলাকায় বাঁধ নির্মাণের জন্য ২০ লক্ষ ১২ হাজার টাকা বরাদ্দ করেছে জিটিএ। একই ভাবে মংপু, রিশপ, অধিকারীঝোরার ধস কবলিত এলাকা সংস্কারের জন্য ২৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা, দুধিয়ার বরারেঝোরার জন্য ১৯ লক্ষ ৭৪ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। বগোরা গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ১৪ লক্ষ ৩৫ হাজার টাকা, ডুমারাম বস্তির জন্য ১৪ লক্ষ ৪৭ হাজার টাকা, কার্শিয়াং পুরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ডের জন্য প্রোটেকশন ওয়াল, বাঁধ ও ধস এলাকা সংলগ্ন ২৩ লক্ষ ৪৩ হাজার টাকা, অম্বোটিয়া গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ১২ লক্ষ ৫১ হাজার টাকা, গাড়িধুরার জন্য ১৫ লক্ষ ৯৯ হাজার টাকা, গিটাঙ্গে গ্রাম পঞ্চায়েতের জন্য ২০ লক্ষ ৭২ হাজার টাকা, শান্তিনগরের জন্য ১৬ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ধস কবলিত এলাকা মেরামত ও সংস্কারের জন্য।
জিটিএ-র মুখপাত্র শক্তিপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘অন্য বারের তুলনায় এ বার ধসে পাহাড়ে ক্ষতির পরিমাণ অনেকটা কম। তবে বেশ কিছু জায়গায় ধস নেমে ক্ষতি হয়েছে। সেই সব জায়গা মেরামত এবং সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। মোট ১৭টি মতো প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। প্রয়োজনে আরও প্রকল্প নেওয়া হবে। টেন্ডার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে সেই সব কাজ শেষ করার লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে।’’ বৃষ্টি পরিস্থিতি নিয়ে সিকিম আবহাওয়া দফতরের ডিরেক্টর ডক্টর গোপীনাথ রাহা বলেন, “আগামী চার থেকে পাঁচ দিন উত্তরবঙ্গ এবং সংলগ্ন পাহাড়ে বৃষ্টিপাত চলবে। হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত প্রায় সর্বত্রই হয়েছে। বিক্ষিপ্ত ভাবে কিছু কিছু জায়গায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টিপাতের সতর্কতা দেওয়া হয়েছে। দার্জিলিং ও জলপাইগুড়ি জেলার জন্য আজ (সোমবার) লাল সতর্কতা দেওয়া রয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy