উৎসব: বাবা গিয়েছেন মসজিদে। ইদের পসরা নিয়ে দোকানে খুদে ব্যবসায়ী। শিলিগুড়ির হাসমিচকে। ছবি: স্বরূপ সরকার
বৈশাখ মাস, গ্রীষ্ম ঋতু। গরমের প্রকোপ থাকা স্বাভাবিক বঙ্গীয় আবহাওয়া চক্রে। কিন্তু এ বার মনে হয়, সে স্বাভাবিকতাকে ছাপিয়ে গরমের তেজ বাংলাকে উত্তপ্ত করে তুলেছে অনেকটাই। কলকাতা থেকে জেলা শহর, প্রায় সর্বত্র ৪০ ডিগ্রি থেকে ৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে দৌড়ঝাঁপ করছে তাপমাত্রার পারদ। মানুষ হাঁসফাঁস করছেন। নেট-নাগরিকেরাও কোন জেলা সর্বোচ্চ তাপমাত্রার নিরিখে সবার উপরে, তা নিয়ে জমিয়ে মত বিনিময় করছেন সমাজ মাধ্যমে। শহর থেকে গ্রাম, প্রায় সর্বত্র দুপুর বেলা কার্যত জনমানব শূন্য হয়ে যাচ্ছে।
পাশাপাশি, এখন আরবি রমজান মাস। ইসলাম ধর্মের মানুষের এক মাস রোজা করার সময়। অর্থাৎ, পুরো নির্জলা উপবাস। এই গরমের মধ্যেও ধর্মপ্রাণ সংখ্যালঘু মানুষ দৈনন্দিন স্বাভাবিক কাজকর্ম বজায় রেখে, কৃচ্ছসাধন করে যাচ্ছেন। বঙ্গাব্দ বা খ্রিস্টাব্দ সৌর বর্ষ হিসাবে হয়ে থাকে, যা ৩৬৫ দিনের। অন্য দিকে, আরবি বর্ষ হিজরি সন গণনা হয় চান্দ্র মাস অনুযায়ী। এর সময়কাল কম-বেশি ৩৫৪ দিন। ফলে, বাংলার ১২টি মাসের মধ্যে এই রোজা বা ইদ ( ইদ-উল-ফিতর বা ইদ-উল-আজহা) ঘুরে ফিরে আসে। কখনও শীত কালে, কখনও গ্রীষ্মকালে। এটাই নিয়ম। এই সময়ে মানুষ এক মাস রোজা করার পরে, খুশির ইদে মেতে ওঠেন। ইদের নমাজ পালনের উত্তম পন্থাই হল, খোলা আকাশের নীচে দিনের প্রথম প্রহরে। তীব্র গরমেও নমাজ পড়ে মানুষ খুশির ইদকে পালন করেন। সেখানে ধর্মমত নির্বিশেষে সকলে কোলাকুলিতে মেতে উঠবেন। এটাই ধর্মীয় রীতি। উৎসবের আনন্দ।
যখন ছোট ছিলাম, তখন সাধারণত খুশির ইদের সময় এত গরম পড়ত না। সারা বছর অপেক্ষায় থাকতাম কবে আসে খুশির ইদ। তার ছুটি। বন্ধু-বান্ধব, পরিজনদের সঙ্গে একত্রে নমাজ পড়ে আনন্দে মেতে ওঠা। করোনা-পর্ব আমাদের পড়ুয়াদের এক সময় টানা ছুটিতে থাকতে বাধ্য করেছিল। এ বছর গরমের জন্যই সরকার সঙ্গত ভাবে গত এক সপ্তাহ ছুটি দিয়েছে। করোনা-পর্বে পড়াশোনায় অনেকেই পিছিয়ে পড়েছে। আবার ইদে এক জায়গায় জড়ো হওয়াও করোনা-পর্বে সঙ্গত কারণেই সম্ভব হয়নি। এ বার গরম থাকলেও, সবার মধ্যে নমাজ পড়ার আনন্দ ফিরে এসেছে। সকলের মঙ্গল হোক।
(লেখক গাজলমহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy