তিস্তার নদীখাত উঁচু হয়েছে। মাটির নীচে পড়ে থাকা জলে চুমুক দিচ্ছে গবাদি পশু। —নিজস্ব চিত্র।
বর্ষার আগে এ বার ছোট নদীও বড় চিন্তা সেচ দফতরের। গত বছরের বন্যা পরিস্থিতির অভিজ্ঞতায় সেচ দফতর দেখেছে, ছোট নদীতেই বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, জল উপচে পড়ে জনপদ ভাসিয়ে দিয়েছে। এর কারণ, ছোট নদীতে কখন জল আসবে তার কোনও পূর্বাভাস সেচ দফতরের কাছে আসে না। জলপাইগুড়ি-আলিপুরদুয়ারের বেশিরভাগ ছোট নদী আসে ভুটান থেকে। গত কয়েক বছরের চেষ্টায় জলঢাকা, রায়ডাক, সঙ্কোশ এবং তোর্সায় জল বাড়ছে কি না সে পূর্বাভাস ভুটান দিলেও, বাকি ছোট নদীগুলির কোনও তথ্য আসে না বলে দফতরের দাবি। এই পরিস্থিতিতে তিস্তা নদীখাতের দেড় মিটার উঁচু হয়ে যাওয়াও ছোট নদী নিয়ে চিন্তায় রেখেছে সেচ দফতরকে। কারণ, বহু ছোট নদী তিস্তায় গিয়ে মিশেছে। তিস্তা উঁচু হয়ে যাওয়ায় ছোট নদীর জল সুষ্ঠু ভাবে বেরোতে না পেরে ফিরে গিয়ে বন্যা পরিস্থিতি বাড়িয়ে দিতে পারে বলে আশঙ্কা।
সেচ দফতরের উত্তরবঙ্গের মুখ্য বাস্তুকার কৃষ্ণেন্দু ভৌমিক বলেন, “ছোট নদী নিয়ে চিন্তার কারণ হল, কখন জল বাড়বে তার কোনও আন্দাজই আমরা পাই না। সে কারণে সবসময়েই প্রস্তুত থাকতে হবে। তারও পরে তিস্তার নদীখাত উঁচু হয়েছে। সেটারও একটা প্রভাব রয়েছে ছোট নদীর উপরে। এ সব নিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বৈঠকে আলোচনা হয়েছে।”
ফি বছর ডুয়ার্সে ফুলে ফেঁপে ওঠে ছোট দুই নদী রেতি, সুকৃতি। এ ছাড়াও পানা, বাসরা, হলং-এর মতো নদীগুলি নিয়েও চিন্তায় সেচ দফতর। জলপাইগুড়িতে করলা, রুকরুকা নদীতেও বন্যা পরিস্থিতি ঠেকাতে কী পদক্ষেপ হবে তা নিয়ে আলোচনা হয়েছে বৈঠকে। সেচ দফতরের সিদ্ধান্ত ছোট নদীর পার বাঁধাই, প্রয়োজনে বাঁধের উচ্চতা বাড়াতে হবে। নদীর গতিপথে কোথাও বাধা থাকলে সরিয়ে দিতে হবে। সর্বোপরি, নদীর উৎসমুখে কেমন এবং কতটা বৃষ্টি হচ্ছে তার নজরদারি চালাতে হবে। সেচ দফতরের সিদ্ধান্ত, প্রতিটি নদীর উৎস বা উৎসের কাছাকাছি এলাকায় রোজ এক বার করে সরেজমিনে দেখে আসা হবে। ডুয়ার্সের একাধিক নদীতে এই ব্যবস্থা কার্যকর রয়েছে।
তিস্তার উচ্চতা বৃদ্ধিতে জলপাইগুড়ি শহর নিয়েও চিন্তা রয়েছে সেচ দফতরের। জলপাইগুড়ি শহরকে দু’ভাগ করে করলা নদী তিস্তায় গিয়ে মিশেছে। যদিও সেচ দফতরের মুখ্য বাস্তুকার দাবি করেছেন, বাঁধ তৈরি করে দুই নদীকে আলাদা করে জলপাইগুড়ি শহর থেকে অনেকটা দূরে গিয়ে মেশানো হয়েছে। কাজেই উচ্চতার কারণে জল যেতে সমস্যা হলেও স্বাভাবিক বর্ষার জলপাইগুড়ি শহরে বন্যা পরিস্থিতির আশঙ্কা অন্তত নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy