Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Death Sentence

মূল সাক্ষী বাবা, ফাঁসি ছেলের

তিন জনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে সরজু। তিন হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ধ্রুব-সরজুদের বাবা ধনবাহাদুর।

প্রতীকী ছবি

প্রতীকী ছবি

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০২০ ০২:৩৭
Share: Save:

পরিবারের বড় ছেলে মারা গিয়েছেন। তাঁর সিঙ্কোনা বাগানের চাকরি কে পাবেন, এই ঝগড়ায় এক রাতে দাদা ধ্রুব ভুজেলের বাড়িতে ঢুকে বৌদি জুনিতা লামাকে (২৮) কুপিয়ে খুন করে ভাই সরজু ভুজেল। বাদ যায়নি দুই ভাইপো আকৃত (৮) এবং অথিতও (৬)। তিন জনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করে সরজু। তিন হত্যাকাণ্ডের প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন ধ্রুব-সরজুদের বাবা ধনবাহাদুর। অন্য তথ্যপ্রমাণের সঙ্গে তাঁর সাক্ষ্যের ভিত্তিতেই সরজুকে সোমবার দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন কালিম্পঙের জেলা ও দায়রা বিচারক পার্থসারথী মুখোপাধ্যায়। মঙ্গলবার সরজুকে ফাঁসির সাজা শোনালেন তিনি। ২০১৮ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি এই ঘটনা ঘটে। পরদিনই গ্রেফতার হয় সরজু। প্রায় দু’বছর বাদে সাজা শোনালেন বিচারক।

কালিম্পং জেলা ও দায়রা আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রেম প্রধান বলেন, ‘‘একসঙ্গে তিনজনকে রাতের অন্ধকারে এ ভাবে খুন করাটা গর্হিত অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়ে‌ছে। মায়ের সঙ্গে তাঁর দু’টি শিশুও ছিল।’’ তিনি জানান, সরজুকে যে ফাঁসির আদেশ দেওয়া হয়েছে, তার বিরুদ্ধে অভিযুক্তপক্ষ উচ্চতর আদালতে আবেদন জানাতে পারেন। সরজুর আইনজীবীও জানান, তাঁরা উচ্চ আদালতে আবেদন করবেন।

পুলিশ এবং আদালত সূত্রের খবর, ঘটনাটি কালিম্পং জেলার জলঢাকা থানার দারাগাঁও এলাকার। এলাকার অধিকাংশ বাসিন্দাই সিঙ্কোনা বাগানের শ্রমিক, কর্মী। নিহত জুনিতা লামার স্বামী ধ্রুব ভুজেলও সিঙ্কোনা বাগানের কর্মী ছিলেন। ২০১৭ সালে তিনি অসুস্থ হয়ে মারা যান। এর পরে সরকারি চাকরি পরিবারের কে পাবেন, তা নিয়ে নিজেদের মধ্যে অশান্তি শুরু হয় বলে অভিযোগ। নিয়ম মেনে প্রশাসনের তরফে জুনিতাদেবীকে কয়েক মাস পর সিঙ্কোনা বাগানে চাকরি দেওয়া হয়। এতেই ক্ষেপে যায় পেশায় গাড়ির চালক সরজু। বৌদির সঙ্গে সে নিয়মিত ঝগড়া করত বলে অভিযোগ।

ঘটনার দিন রাত ৮টা নাগাদ জুনিতাদেবী দুই শিশু পুত্রকে খাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিয়েছিলেন। শীতের রাত। তাই নিজেও তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। সেই সময় আচমকা দরজা ধাক্কিয়ে ধারাল অস্ত্র নিয়ে ঘরে ঢোকে সরজু। জুনিতাদেবীর বাড়ির পাশেই একটি বাড়িতে সে থাকত। আদালতে মামলার তদন্তকারী অফিসার তথা জলঢাকা থানার ওসি নীলম সঞ্জীব কুজুর জানিয়েছেন, কোনও কিছু বোঝার আগেই মা ও দুই শিশুপুত্রকে কুপিয়ে খুন করে অভিযুক্ত। তার পরে সে পালানোর চেষ্টা করে। জুনিতাদেবীর পাশের ঘরেই থাকতেন বৃদ্ধ ধনবাহাদুর। তিনি ছোট ছেলের কাণ্ড দেখে আঁতকে ওঠেন। রক্তাক্ত জুনিতাদেবীর চিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে আসে। তারাই সরজুকে ধরে ফেলে।

মা ও দুই শিশুপুত্রকে লাগায়ো হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা মৃত বলে ঘোষণা করেন। সরজুর বিরুদ্ধে তিনটি খুনের মামলা দায়ের করা হয়। এর আগে দার্জিলিঙে এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করে খুনের দায়ে এক ব্যক্তিকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছিল পকসো আদালত।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Sentence Kalimpong Murder
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy