মালদহের হিমঘরে আলু বাছাই হচ্ছে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
হিমঘর থেকে আলু বার করা হচ্ছে চার থেকে ছ’টাকা কেজি দরে। সে আলু খুচরো বাজারে ২০ থেকে ২২ টাকা দামে কিনতে হচ্ছে আম-আদমিদের। হিমঘর থেকে বাজারে আলুর দামে এত ফারাক কেন? আলু চাষিদের দাবি, ‘মিডল ম্যান’ সেজে ফড়েরা চাষিদের কাছ থেকে হিমঘরের আলু কিনে পাইকারদের বেশি দামে বিক্রি করছে, যার প্রভাব বাজারে পড়ছে।
হিমঘরে আলু মজুতের দিনক্ষণ বেঁধে দিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রশাসনের দাবি, হিমঘর থেকে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আলু ছেড়ে দেওয়ার কথা থাকলেও সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর করা হয়েছে। হিমঘর থেকে তাই কৃষকদের আলু বের করতেই হচ্ছে। ‘সস্তা’ দরে তা বিক্রি করতে শুরু করেছেন কৃষকেরা। সেই আলুই হাত ঘুরে বাজারে পৌঁছে হয়ে উঠছে দামি। এমনই ছবি মালদহে। অভিযোগ, হিমঘর থেকে বাজারে আসতে আলুর দাম তিন থেকে চার গুণ বেড়ে যাচ্ছে। অথচ, সে লাভ মিলছে না কৃষকদের।
পুরাতন মালদহের আলু চাষি সনাতন রাজবংশী বলেন, “উৎপাদনের মাত্র ১০ শতাংশ আলু হিমঘরে মজুত রাখতে পারি। বাকি আলু ওঠার পরেই নাম মাত্র দামে পাইকারদের বিক্রি করে দিতে হয়। এ বার ১০ শতাংশ আলু হিমঘরে রেখেও বিপাকে পড়তে হয়েছে।’’ তিনি আরও বলেন, “এখন হিমঘরের আলু সবাই বেচছে। তাই সেটার দামও মিলছে না। চার থেকে ছ’টাকা কেজি দরে আলু পাইকারদের বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।’’ অভিযোগ উঠেছে, আলুর দাম বৃদ্ধির নেপথ্যে রয়েছে ‘ফড়ে-রাজ’। কৃষকদের দাবি, প্রশাসনের নজরদারির ‘অভাবে’ ফড়েরাজ অব্যাহত। লাভের গুড় ফড়েরাই খাচ্ছে। যদিও নজরদারি আরও বাড়ানো হবে বলে জানিয়েছেন মালদহের জেলাশাসক নীতিন সিংহানিয়া। তিনি বলেন, “নিয়ন্ত্রিত বাজার সমিতি বাজারে নিয়মিত নজরদারি চালাচ্ছে। হিমঘরগুলিতেও আমাদের নজরদারি চলছে। প্রয়োজনে, নজরদারি আরও বাড়ানো হবে।’’
মালদহে সাড়ে তিন লক্ষ টন আলু গড়ে প্রতি বছর উৎপাদন হয়।পুরাতন মালদহ, গাজলে জেলার মধ্যে সব থেকে বেশি আলু চাষ হয়। তবে, জেলায় মাত্র ন’টি হিমঘর রয়েছে। সেখানে ৯৪৫৪৯.১০ টন মজুত রাখা হয়। পরিকাঠামোর এই অভাবকেই কাজে লাগিয়ে মরসুমের শুরু থেকে জেলায় ফড়েরা সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে অভিযোগ কৃষকদের।
বাজারে জ্যোতি ও পোখরাজ আলু এখনও চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রেতা দিলীপ সরকার বলেন, ‘‘পাইকারিতে জ্যোতি ১৮ টাকা এবং পোখরাজ ন’টাকা কেজি দরে কিনতে হচ্ছে।’’ শহরের বাসিন্দা সুমিত্রা পালের ক্ষোভ, “প্রশাসনের নজরদারি নেই। তাই আলুর দাম কমছে না। ’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy