দিনহাটার পুঁটিমারিতে অর্ধসমাপ্ত স্টেডিয়াম। নিজস্ব চিত্র
বছর পাঁচেক আগের ঘটনা। সে সময়ে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছিলেন, দিনহাটা ও সিতাইয়ে দু’টি নতুন কলেজ স্থাপন করা হবে। তৎকালীন শিক্ষামন্ত্রীর প্রতিশ্রুতিতে এলাকাবাসীর একাংশ ধরে নেন, কলেজ তৈরির অনুমোদন শুধু সময়ের ব্যাপার। শাসক দল পোস্টার, ব্যানার টাঙিয়ে গোটা দিনহাটা মহকুমা ছয়লাপ করে দিয়েছিল। দিনহাটায় তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহকে সামনে রেখে তৈরি হয়েছিল কলেজ নির্মাণ কমিটিও। তার পরে, বানিয়াদহ নদী দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। ওই কলেজ স্থাপন আর হয়নি। এখনও দিনহাটা মহকুমার ছাত্রছাত্রীরা একটি কলেজের উপরেই নির্ভরশীল। ফি বছর সে কলেজে গাদাগাদি করে ছাত্রছাত্রীরা ভর্তি হন।
উদাহরণ আরও আছে। দিনহাটা শহর থেকে মেরেকেটে কিলোমিটার পাঁচেক দূরে একটি স্টেডিয়াম রয়েছে। বাম আমল থেকেই সেটি রয়েছে। নামেই স্টেডিয়াম। একটি বড় মাঠের চার দিক পাঁচিল দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছিল। সে পাঁচিল ধীরে ধীরে ভেঙে পড়ে। চুরি হয়ে যায় ইট। এক সময়ের মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ থেকে শুরু করে বর্তমানে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতরের মন্ত্রী উদয়ন গুহ সেখানে একটি স্টেডিয়াম তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন। তা আজও পূরণ হয়নি।
এমন নজির আছে আরও। দিনহাটা মহকুমা জুড়ে ছোট-বড় রাস্তা, সেতু, পানীয় জলের ব্যবস্থা, সৌর প্রযুক্তি ব্যবহার করে সেচের ব্যবস্থার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল ভুরি-ভুরি। যার অনেকগুলি আজও পূরণ হয়নি। নাজিরহাটের মৌদাম এলাকায় তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উদয়ন গুহ। সে কাজও শুরু হয়নি। নাজিরহাট ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে পানীয় জলের দু’টি রিজ়ার্ভার হওয়ার কথা ছিল, যে ‘কথা’ কেউই রাখেননি। ফকিরতকেয়া থেকে নারায়ণগঞ্জ পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার রাস্তা নতুন করে তৈরির আশ্বাস দিয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। সে কাজও শুরু হয়নি।
অবশ্য শুধু রাজ্যের শাসক দল নয়, কেন্দ্রের শাসক দলের সাংসদ ও মন্ত্রীর আশ্বাসও পূরণ না হওয়ার অভিযোগ রয়েছে। দিনহাটার ভেটাগুড়ি রইরুয়ের কুঠি এলাকায় বাঁশের সাঁকো সরিয়ে নতুন সেতু তৈরি করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ এবং বর্তমান স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তা আজও হয়নি।
তবে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, কিছু কাজ করতে সফলও হয়েছেন নেতা-মন্ত্রীরা। ভেটাগুড়ির উত্তরপাড়া থেকে জিরানপুর পর্যন্ত রাস্তার কাজের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন উদয়ন গুহ। তা শুরু হয়েছে। পুঁটিমারি-২ গ্রাম পঞ্চায়েতের কালিরপাট থেকে লক্ষ্মীর বাজার পর্যন্ত সাড়ে তিন কিলোমিটার রাস্তার কাজ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী শুরু হয়েছে। গোসানিমারীর বিনানই গ্রামে নদীর উপরে সেতুরপ্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন বিধায়ক জগদীশচন্দ্র বর্মা বসুনিয়া। সে সেতুর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। উদয়ন বলেন, “কোথাও শিলান্যাস করিনি। প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কাজ আমরা করতে পেরেছি। বাকি কাজও করা হবে। দিনহাটার কলেজ তৈরি কোনও নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিল না।” জগদীশেরও বক্তব্য, “প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রায় সব কাজই করা হচ্ছে।” বিজেপির কোচবিহার দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক নিখিলরঞ্জন দে-র আবার দাবি, “আমাদের কাজ করতে বাধা দেওয়া হয়। ঢিমেতালে টাকা ছাড়া হয়। তার মধ্যেও কাজ করে যাচ্ছি আমরা। শাসক দল প্রতিশ্রুতি পালনে ব্যর্থ।” এ বিষয়ে নিশীথ প্রামাণিককে ফোন করা হলেও তিনি ধরেননি। মেসেজেরও উত্তর দেননি তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy