ফুলবাড়ি সীমান্ত পেরোচ্ছেন বাংলাদেশের দুই নাগরিক। —ফাইল চিত্র।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কারণে ব্যবসায় টান। হতাশ শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীদের একাংশ। যথেষ্ট যাত্রী না-থাকায় বিগত কয়েক সপ্তাহ শিলিগুড়ি এবং বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার মধ্যে বাস চলাচল করেনি। যাত্রী না-মেলায় বাসের টিকিট কাউন্টারগুলিও ফাঁকা। বর্তমান পরিস্থিতিতে এই দেশ থেকে তেমন ভাবে কেউ বাংলাদেশে যাচ্ছেন না। পাশাপাশি চিকিৎসা, পড়াশোনা এবং জরুরি কারণ ছাড়া বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে না নয়াদিল্লিও। এই পরিস্থিতিতে বাস চালিয়ে কোনও লাভ হবে না বলে জানাচ্ছেন ভারত-বাংলাদেশ বাস পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা। অন্য দিকে, বাংলাদেশের পরিস্থিতি শিলিগুড়ির হোটেল ব্যবসাতেও প্রতিকূল প্রভাব ফেলেছে। কত দিন এই ব্যবসায়িক মন্দা চলবে, তা নিয়েই চিন্তিত অনেকে।
পর্যটনের পাশাপাশি চিকিৎসা, পড়াশোনার জন্য বহু মানুষ বাংলাদেশ থেকে এই দেশে আসেন। ঢাকা-সহ আশপাশের এলাকার মানুষ মূলত চ্যাংরাবান্ধা হয়ে ভারতে ঢোকেন। এ কথা মাথায় রেখে একটি বেসরকারি পরিবহণ সংস্থা তাদের এক জোড়া বাস শিলিগুড়ি ও ঢাকার মধ্যে চালাত। অগস্ট মাসের আগে বাসে যাত্রীদের ঠাসা ভিড় থাকলেও বর্তমানে সেখানে সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করেও যাত্রী মিলছে না বলে দাবি ওই পরিবহণ সংস্থার।
বাসমালিকেরা জানিয়েছেন, বর্তমানে শিলিগুড়ি থেকে ঢাকা যাওয়ার ক্ষেত্রে ও পার বাংলার মানুষ ছোট গাড়ি ভাড়া করে চ্যাংরাবান্ধা পর্যন্ত যাচ্ছেন। অন্য দিকে, আগে থেকে বাংলাদেশে গাড়ির বন্দোবস্ত করে রাখছেন। সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশে ঢুকে তার পর সেই গাড়িতেই নিজেদের গন্তব্যের উদ্দেশে রওনা দিচ্ছেন তাঁরা।
শিলিগুড়ি এবং ঢাকার মধ্যে যাতায়াত করা বাসের টিকিট কাউন্টারে কর্মরত পরিবহণ সংস্থার এক কর্মী শিবপ্রসাদ ঘোষ বলেন, “বাংলাদেশের পরিস্থিতির জন্য যাত্রীই হচ্ছে না। যাও বা দু’-এক জন হচ্ছে, তা দিয়ে তো আর বাস চালানো সম্ভব নয়। ভারত সরকার বাংলাদেশের নাগরিকদের ভিসা দিচ্ছে না। ভিসা না-দিলে কী ভাবে বাস চলাচল স্বাভাবিক হবে? আমরা চাইছি ভারত সরকার ফের ভিসা দেওয়া শুরু করুক। তা হলেই আমাদের বাস পরিষেবা ফের চালু হতে পারে।” একই সঙ্গে তাঁর সংযোজন, “আমরা তিন জন কর্মী কাউন্টারে কাজ করি। কাউন্টার চালাতেও একটা খরচ রয়েছে। এমন চললে তো কাউন্টারের ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া অন্য উপায় থাকবে না।”
দু’-চার জন যাত্রীর জন্য যে বাস চালিয়ে লাভ নেই, সে কথা জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট পরিবহণ সংস্থার ম্যানেজার বাবলু ঘোষও। তাঁর কথায়, “দু’মাস ধরেই যাত্রী কম হচ্ছিল। এখন তো যাত্রীই পাওয়া যাচ্ছে না। এ দেশের মানুষের মধ্যে বাংলাদেশ নিয়ে ভয়ের বাতাবরণ তৈরি হয়েছে। প্রতি দিন এক জোড়া বাস দু’দেশের মধ্যে চলাচল করত। দু’টি বাসের পরিষেবাই বর্তমানে বন্ধ করে রাখা হয়েছে।”
অন্য দিকে, শিলিগুড়ির হাসমি চক, মহাত্মা গান্ধী চক, মাল্লাগুড়ি, বিধান মার্কেট এলাকার একাধিক হোটেলে বাংলাদেশ থেকে বিভিন্ন কাজে এ দেশে আসা মানুষজন থাকতেন। বাংলাদেশি নাগরিকদের যাতায়াত কমায় হোটেল ব্যবসাতেও তার প্রভাব পড়েছে। গ্রেটার শিলিগুড়ি হোটেলিয়ার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সম্পাদক উজ্জ্বল ঘোষ এই প্রসঙ্গে বলেন, “হাসিনা সরকারের পতনের পর বাংলাদেশের নাগরিকদের শিলিগুড়ি আসা একেবারে কমে গিয়েছে। অনেক বাংলাদেশি পর্যটকের ‘ট্যুরিস্ট ভিসা’র মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। শিক্ষা ও চিকিৎসার জন্যও বহু মানুষ ভারতে আসেন। কিন্তু সেই সংখ্যা তলানিতে ঠেকায় নিশ্চিত ভাবেই আমাদের আর্থিক ক্ষতি হচ্ছে। পরিস্থিতি কবে স্বাভাবিক হবে, তা জানি না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy