পুলিশের জলকামানের মুখে তির-ধনুক নিয়ে এগিয়ে গেলেন এক সিপিএম কর্মী। রায়গঞ্জে। নিজস্ব চিত্র
জেলার তৃণমূল পরিচালিত একাধিক পঞ্চায়েত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে সিপিএমের আন্দোলনকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার দুপুরে ধুন্ধুমার বাধল উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জে। দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে এ দিন অন্য জেলার মতো উত্তর দিনাজপুরের জেলাশাসকের দফতরেও অভিযানের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর উপস্থিতিতে দলের নেতা-কর্মীদের একাংশ ব্যারিকেড ভেঙে জেলাশাসকের দফতর চত্বরে ঢুকে পড়েন। পুলিশ আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে জলকামান চালায়। সে সময় সিপিএমের নেতা-কর্মীদের একাংশ পুলিশকর্মীদের তাক করে লাঠি, ইট, কাঠের বাটাম এমনকি, ধনুক থেকে তির ছোড়েন বলেও অভিযোগ। অভিযোগ না মেনে সুজনের দাবি, পুলিশের লাঠির বাড়িতে তাঁদের আট জন কর্মী জখম হয়েছেন। তির-ধনুক নিয়ে জমায়েত করার অভিযোগ প্রসঙ্গে তাঁর মন্তব্য, ‘‘চুরির বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত প্রতিবাদ।’’ লাঠি চালানোর অভিযোগ মানেনি পুলিশ। দুর্নীতির অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব।
সুজন, সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পলাশ দাস ও দলের জেলা সম্পাদক আনওয়ারুল হকের নেতৃত্বে এ দিন দুপুরে ও জেলার বিভিন্ন ব্লকের কয়েক হাজার সিপিএম নেতা-কর্মী রায়গঞ্জের কর্ণজোড়া এলাকায় জেলাশাসকের দফতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। পুলিশ আগে থেকেই সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের দফতরে ঢোকা রুখতে ওই দফতরের অদূরে একাধিক বাঁশের ব্যারিকেড তৈরি করে রেখেছিল। কিন্তু আন্দোলনকারীরা তার সামনে পৌঁছতেই উত্তেজনা চরমে ওঠে।
সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের একাংশ পর পর দু’টি ব্যারিকেড এবং একটি লোহার দরজার তালা ভেঙে জেলাশাসকের দফতর চত্বরে ঢোকেন। পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করতে জলকামান থেকে জল ছুড়তে শুরু করে। অভিযোগ, তখন সিপিএমের নেতা ও কর্মীদের একাংশ পুলিশকর্মীদের লক্ষ করে পাল্টা লাঠি, কাঠের বাটাম ও ইট ছুড়তে শুরু করেন। কয়েক জন পুলিশকে তাক করে তির ছোড়েন বলেও অভিযোগ। কিছু ক্ষণের মধ্যেই জল শেষ হয়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের ধ্বস্তাধ্বস্তি বেধে যায়।
সিপিএম নেতারা এর পরে, জেলাশাসকের কাছে স্মারকলিপি দেওয়ার দাবিতে সুর চড়ান। কিন্তু জেলাশাসক সে সময় দফতরে না থাকায় আন্দোলন তুলে নেওয়া হয়। সুজন বলেন, “জেলার বিভিন্ন পঞ্চায়েতে দুর্নীতিবাজ তৃণমূল নেতাদের গ্রেফতার না করা পর্যন্ত দলের তরফে একটানা আন্দোলন চলবে। খুব শীঘ্রই জেলাশাসককে দফতর থেকে নীচে নেমে এসে দুর্নীতিবাজদের ধরার দাবিতে সিপিএমের দেওয়া স্মারকলিপি জমা নিতে হবে।” সুজনের অভিযোগ, পুলিশের হামলা ও লাঠির আঘাতে তাঁদের দলের আট জন আহতের মধ্যে এক জনের মাথা ফেটে গিয়েছে। দু’জনকে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি করানো হয়েছে। তাঁর দাবি, পুলিশের উপরে দলের কেউ হামলা চালাননি।
রায়গঞ্জ পুলিশ জেলার সুপার মহম্মদ সানা আখতার বলেন, “পুলিশ আইন মেনেই আন্দোলনকারীদের জেলাশাসকের দফতরে ঢোকা রুখতে উপযুক্ত ব্যবস্থা নিয়েছে।” পুলিশের পাল্টা দাবি, আন্দোলনকারীদের উপরে পুলিশ হামলা করেনি বা লাঠি চালায়নি। ঘটনার তদন্ত করে আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগ কার্যত নস্যাৎ করে তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক অসীম ঘোষ বলেন, “জনসমর্থনহীন সিপিএম তৃণমূলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ তুলে হিংসাত্মক আন্দোলন করে রাজ্যে রাজনৈতিক মাটি শক্ত করতে পারবে না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy