বিধিভঙ্গ: দূরত্ব বিধি উড়িয়ে লক্ষ্মীপুজোর বাজারে ভিড়। বুধবার জলপাইগুড়ি শহরে। ছবি: সন্দীপ পাল।
পুজো শুরু প্রায় সপ্তাহদুয়েক আগে থেকে শুরু হয়েছিল কেনাকাটা। তার জেরে ভিড়ও হচ্ছিল উত্তরের জেলাগুলির হাটে-বাজারে, রাস্তায়। সম্প্রতি স্বাস্থ্য দফতরের করোনা পরীক্ষার রিপোর্ট বলছে ওই কেনাকাটার সময়ে অর্থাৎ অক্টোবরের প্রথম তিন সপ্তাহের পরে উত্তরবঙ্গে সংক্রমণের হার বেড়ে হয়েছে ১৬ শতাংশের মতো। সেপ্টেম্বর পর্যন্ত যা ছিল সর্বাধিক ১৪ শতাংশের মতো। স্বাস্থ্য দফতর এবং চিকিৎসকদের একাংশ মনে করছেন পুজোর আগে কেনাকাটার হিড়িক এবং বাজারে ভিড়ের কারণেই এই বৃদ্ধি যা এখন বোঝা যাচ্ছে।
উত্তরবঙ্গে করোনা নিয়ন্ত্রণের ওএসডি সুশান্ত রায় বলেন, ‘‘সংক্রমণ কিছুটা তো বেড়েছেই। বাজারে ভিড় করে কেনাকাটার প্রভাব রয়েছে। পুজোর সময় নবমী এবং দশমীর দিন ভিড়ও চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে।’’
স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে সংক্রমণের হার ১৬ শতাংশের কিছু বেশি বলেই জানানো হয়েছে। জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং, আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার, কালিম্পং থেকে লালারসের নমুনা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে পাঠানো হয়। ইসলামপুর, চোপড়া থেকে করোনা রোগীরাও শিলিগুড়িতে আসেন। মেডিক্যালে ভাইরোলজি রিসার্চ অ্যান্ড ডায়গন্যাস্টিক ল্যাবরেটরিতে আরটিপিসিআর যন্ত্রে নমুনা পরীক্ষা করা হয়। তাতেই সংক্রমণের যে হার মিলেছে তাতে সেপ্টেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে পুজোর আগে পর্যন্ত সংক্রমণ অন্তত আগের চেয়ে ২ শতাংশ বেড়েছে বলেই স্বাস্থ্য দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে। অন্য দিকে দুই দিনাজপুর এবং মালদহের নমুনা মালদহ মেডিক্যালে আরটিপিসিআর পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। সেখানেও সংক্রমণের হার ১২ শতাংশের ওপরে। যা আগের থেকে অন্তত ২ শতাংশ বেশি।
পুজোর দিনগুলোতে ভিড়ের জন্য সংক্রমণ বৃদ্ধি কতটা তা জানতে সপ্তাহখানেক অপেক্ষা করতে হবে। তার আগে এই রিপোর্ট সতর্ক হওয়ারই বার্তা দিচ্ছে। নবমী এবং দশমীতে ভিড়ের জেরে ইতিমধ্যেই উত্তরবঙ্গের জেলাগুলোকে আগামী ৭-১৪ দিন সংক্রমণের গতিপ্রকৃতির উপর নজর রাখতে বলা হয়েছে। সংক্রমণ আরও বাড়বে বলে আশঙ্কা চিকিৎসকদের অনেকেরই। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে জেলাগুলোতে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর কথাও জানানো হয়েছে ওএসডি-র দফতর থেকে। পুজোর সময় মণ্ডপগুলো কন্টেনমেন্ট জ়োন করতে নির্দেশ দেয় হাইকোর্ট। ভিড় কমাতে পুলিশ-প্রশাসনের তরফেও তৎপরতা শুরু হয়েছিল। তার পরেও শেষ দিনগুলোয় ভিড় হয়েছে। লক্ষ্মীপুজোর বাজারে বিধিনিষেধের কিছু নেই। ফলে সেটা দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে স্বাস্থ্য দফতরের। ওএসডি বলেন, ‘‘মানুষকে সচেতন হতে হবে। হাইকোর্ট বলার পরেও লোকে নবমীর দিন এবং বিসর্জনের দিন রাস্তায় ভিড় করেছে। সচেতন না হলে সামনে বিপদ ঘটতে পারে।’’
উত্তর দিনাজপুর, মালদহ, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিঙের মতো জেলাগুলোতে নমুনা পরীক্ষা বাড়ানোর প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শুরু হয়েছে। তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্ট বাড়ানোর কথা জানিয়েছে সংশ্লিষ্ট জেলাগুলো। যদিও র্যাপিড অ্যান্টিজেন টেস্টের রিপোর্টের ভিত্তিতে সংক্রমণের হার বিচার করা ঠিক হবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ র্যাপিড অ্যান্টিজেন পরীক্ষায় পজিটিভ রিপোর্ট এলে সেটা চূড়ান্ত বলে ধরা হয়। কিন্তু নেগেটিভ এলে সেটা ঠিক বলে বিবেচিত হয় না। সেক্ষেত্রে নিশ্চিত হতে আরটিপিসিআর পরীক্ষার প্রয়োজন হয়। অথচ জেলাগুলোতে বর্তমানে অ্যান্টিজেন পরীক্ষাই বেশি হচ্ছে। সেই কারণে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে ভিআরডিএল-এ আরটিপিসিআর পরীক্ষায় সংক্রমণের হার ১৬ শতাংশ হলেও জেলাগুলোতে মোট পরীক্ষার নিরিখে সংক্রমণের হার অনেকটাই কম। কোথাও ৫ শতাংশ, কোথাও বা ৪ শতাংশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy