অসুস্থ মাকে কোলে নিয়ে মানিকচক ঘাটে লঞ্চ থেকে নামছেন ঝাড়খন্ডের বাসিন্দা নুরুল ও দুবড়ি শেখ। নিজস্ব চিত্র
ঝিরঝিরিয়ে পড়ছিল বৃষ্টি। শনিবার তখন দুপুর দেড়টা। পড়শি ঝাড়খণ্ড থেকে গঙ্গা পেরিয়ে মালদহের মানিকচক ঘাটে পৌঁছল যাত্রী ও পণ্যবাহী লঞ্চ। পক্ষাঘাতে আক্রান্ত মাকে কোলে করে সেই লঞ্চ থেকে নামালেন ঝাড়খণ্ডের রাজমহলের দুই ভাই— নুরুল ও দুবড়ি শেখ। ষাটোর্ধ্ব মা রাসমা বেওয়াকে চিকিৎসা করাতে মালদহে এসেছেন তাঁরা।
কোথাও কি স্বাস্থ্যপরীক্ষার মুখে পড়তে হল?
নুরুল শেখ বলেন, ‘‘ভোট বা অন্য অন্য গুরুত্বপূর্ণ দিনে পুলিশি তল্লাশি হয়। শুনছি করোনাভাইরাস নিয়ে সীমানায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হচ্ছে। তবে এখানে কিছুই চোখে পড়ল না।’’
অভিযোগ, নুরুলদের মতোই কোনও স্বাস্থ্যপরীক্ষা ছাড়াই ‘অবাধে’ দিনে শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ওই সীমানা দিয়ে যাতায়াত করছে।
ঝাড়খণ্ড ও মালদহের মধ্যে দিয়ে বয়েছে গঙ্গা। দু’রাজ্যের বাসিন্দাদের নদীপথে যোগাযোগের জন্য লঞ্চ পরিষেবা চালু রয়েছে। প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, মানিকচক ঘাটে তিনটি যাত্রী ও পণ্যবাহী লঞ্চ চলাচল করে। এ ছাড়া দশটিরও বেশি যন্ত্রচালিত নৌকা রয়েছে। মানিকচক থেকে নদীপথে রাজমহলের দূরত্ব ১০ কিলোমিটার। লঞ্চে প্রায় এক ঘণ্টা সময় লাগে। সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ফেরিঘাট পরিষেবা চালু থাকে। দিনে গড়ে চারশো যাত্রী লঞ্চে গঙ্গা পারাপার করেন বলে দাবি ফেরিঘাট মালিক রাজেন্দ্র সিংহের।
দিনে শয়ে শয়ে মানুষ আন্তঃরাজ্য সীমানা দিয়ে যাতায়াত করছেন। এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, কিন্তু সেখানে স্বাস্থ্যপরীক্ষার উদ্যোগ নেই। তাতে আশঙ্কায় রয়েছেন বাসিন্দারা। ফুলমতী মণ্ডল, দিলরুবা বিবি বলেন, ‘‘অবাধেই ঝাড়খণ্ড থেকে বাংলায় আসা যায়। এমন অবস্থায় করোনা ভাইরাস নিয়ে সকলেই আতঙ্কিত। প্রশাসনের উচিৎ আন্তঃরাজ্য সীমান্ত দিয়ে যাতায়াত করা যাত্রীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা।” ঝাড়খণ্ডের প্রকাশ মণ্ডল বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে চিকিৎসা করাতে অনেকে গঙ্গা পেরিয়ে মালদহে আসেন। অনেকে আসেন ব্যবসার কাজেও। কিন্তু নদী-সীমানায় করোনা রুখতে কোনও ব্যবস্থা এখনও চোকে পড়েনি।”
আন্তঃরাজ্য সীমানায় স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে বলে জানিয়েছেন মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র। তিনি বলেন, ‘‘সোমবার থেকে মানিকচক ঘাটে যাত্রীদের স্বাস্থ্যপরীক্ষা করা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy