প্রতীকী ছবি।
জাতীয় সড়ক ফাঁকা। তিরবেগে ছুটছে গাড়ি। পণ্যবাহী ট্রাক দেখেই উঠল ট্র্যাফিক পুলিশের হাত।
ট্রাক থামতেই নির্দেশ কাগজ দেখানোর। কাগজ পরীক্ষা চলল আধঘণ্টা ধরে। তারপর শুরু হল ট্রাকে তল্লাশি, তাতেও আপত্তিকর কিছু পাওয়া না গেলেও, এগোনোর অনুমতি নেই। বলা হল, বড় অফিসার আসবে, অপেক্ষা করতে। সময়ে পৌঁছতে ট্রাক চালকের তাড়া রয়েছে, তাগাদা দিলেও কাজ হচ্ছে না। শর্ত একটাই ট্র্যাফিক পুলিশের হাতে টাকা গুঁজে না দিলে এগোনোর অনুমতি মিলবে না। আলিপুরদুয়ার থেকে ডুয়ার্স এমন শয়ে শয়ে অভিযোগ প্রতিদিন উঠছে। কোথাও লিখিত অভিযোগ হচ্ছে, কোথাও রোষে পড়ার আশঙ্কায় ট্রাক চালকরা লিখিত অভিযোগ করা থেকে পিছিয়ে আসছেন। তবে দিন কয়েক আগে দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকে খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ‘পুলিশের টাকা তোলা’ নিয়ে সরব হওয়ায় মুখ খুলছেন অনেকেই।
‘তোলা আদায়’ নিয়ে আলিপুরদুয়ারে ট্রাফিক পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। কিছুদিন আগে বীরপাড়ার ট্রাক মালিকরা পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের আভিযোগ তুলে স্থানীয় থানা ঘেরাও অবধি করেছিলেন। তাঁদের অভিযোগ ছিল, ভুটান থেকে দলগাঁও রেলস্টেশন পর্যন্ত ডলোমাইট বহনকারী প্রতিটি ট্রাককে নিয়ম করে তোলা দিতে হয় পুলিশকে। ওই ঘটনার পর গত শুক্রবার ট্রাফিক পুলিশের একাংশের বিরুদ্ধে তোলা আদায় নিয়ে ক্ষোভ উগরে দেন তৃণমূলের জেলা শীর্ষ নেতারা। তাঁরা অভিযোগ করেন, ‘‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচিকে হাতিয়ার করে পুলিশের একাংশ জাতীয় সড়ক থেকে তোলা আদায় করে চলছে।’’
বিভিন্ন মহলের অভিযোগ, সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ কর্মসূচি চালু হওয়ার পর উত্তরের বিভিন্ন জায়গার মতোই আলিপুরদুয়ারেও জাতীয় ও রাজ্য সড়কের অনেক জায়গায় গার্ডরেল বসানো হয়। খোদ জেলার শাসক দলের নেতাদের একাংশের অভিযোগ, পুলিশের তরফে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য গার্ডরেল দেওয়ার কথা বলা হলেও, আসলে সেগুলির কোথাও কোথাও গাড়ি আটকে চলে তোলা আদায়। যদিও আলিপুরদুয়ারের জেলা পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, “আলিপুরদুয়ারে এমন কোনও ঘটনার নজির নেই। এমন ঘটনা যাতে জেলায় কোনও অবস্থাতেই না হয়, সে জন্য অভিজ্ঞ পুলিশ আধিকারিকরা সর্বদা নজরদারি চালিয়ে যাচ্ছেন।“
ডুয়ার্সের ছবিতেও একই মিল। লাভাগামী পর্যটকদের গাড়ি গরুবাথান এলাকায় দাঁড় করিয়ে নানা কাগজ পত্র দেখার নাম করে নাকাল করা হয় বলে দীর্ঘ দিনের অভিযোগ। টাকা দিলেই অবশ্য ছাড় মেলে বলেও দাবি। বনচৌকি থেকে তিস্তা, গজলডোবা সেতু সর্বত্র ভারী যান উঠলেও গাড়ি থেকে হাত বাড়িয়ে টাকা দিলেই ছাড় মেলে বলেও দাবি পথচারীদের। মাত্রাতিরিক্ত ওজন সম্পন্ন বালি, পাথরের গাড়িকেও এ ভাবেই ছাড়া হয় বলে দাবি। তবে মালবাজারের এসডিপিও দেবাশিস চক্রবর্তী জানান, ‘‘ট্র্যাফিক পুলিশ অন্যায় ভাবে টাকা চেয়েছে এমন কোনও অভিযোগ মেলেনি৷ পেলে ব্যবস্থা হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy