চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ উঠেছিল তুফানগঞ্জের এক তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার রাতে সেই টাকা ফেরত চাইতে কোচবিহার জেলা পরিষদের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাধিপতি পুষ্পিতা রায় ডাকুয়ার বাড়িতে গিয়েছিলেন পাঁচ চাকরিপ্রার্থী। অভিযোগ, সেখানে তাঁদের উপরে হামলা করে ওই নেত্রীর পরিবারের লোকেরা। কেড়ে নেওয়া হয় এক জনের সোনার হার। যদিও অভিযোগ অস্বীকরা করে পুষ্পিতা জানিয়েছেন, রাতের তাঁর বাড়িতে চড়াও হয়ে স্বামীকে মারধর করে ওই পাঁচ জন। ঘরের চেয়ার টেবিল ভাঙচুর করা হয়। রাতেই ঘটনাস্থলে যায় বক্সিরহাট থানার পুলিশ। পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। চাকরিপ্রার্থীদের এক জনকে আটক করে পুলিশ।
অভিযোগ, মাস কয়েক আগেও চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা লেনদেন বিষয়ক কথোপোকথনের একটি ভিডিও ভাইরাল হয় পুষ্পিতার। ফের এমন অভিযোগ ওঠায় অস্বস্তিতে পরেছে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব। তুফানগঞ্জের বিজেপি বিধায়ক মালতী রাভা বলেন, ‘‘এক জনের বিরুদ্ধে একাধিক বার চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা নেওয়ার অভিযোগ উঠছে। পুলিশ এই ঘটনার সঠিক তদন্ত না করে নিরপরাধ চাকরিপ্রার্থীদের ধরছে। আমরা নৈরাজ্যে বাস করছি।’’ এসডিপিও (তুফানগঞ্জ) কান্নিধারা মনোজ কুমার বলেন, ‘‘বিষয়টি নিয়ে আমার কিছু জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখছি।’’
পুলিশের হাতে আটক দেবাশিস বর্মণ নামে এক চাকরি প্রার্থী জানিয়েছেন, ২০১৬ সাল নাগাদ চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর থেকে আট লাখ টাকা নিয়েছিলেন পুষ্পিতা রায় ডাকুয়া। কিন্তু চাকরি হয়নি। দেবাশিস বলেন, ‘‘বৃহস্পতিবার টাকা ফেরত পাওয়ার জন্য তাগদা দিতে তুফানগঞ্জের শালবাড়ি এলাকায় নেত্রীর বাড়িতে যাই। তখন উনি লোকজন দিয়ে আমাদের মারধর করেন। আমার গলার চেন ছিনতাই করেন।’’ ওই চাকরিপ্রার্থীর আরও অভিযোগ, ওই নেত্রী ও তাঁর পরিবার নিজেরাই নিজেদের ঘরের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করেন। পরে মিথ্যা অভিযোগ দিয়ে তাঁকে পুলিশের হাতে তুলে দেন।
আর এক চাকরিপ্রার্থী মিঠুন বর্মণ বলেন, ‘‘সিভিক ভলান্টিয়ারের চাকরি দেওয়ার নামে আমার থেকে টাকা নিয়েছিলেন ওই তৃণমূল নেত্রী। চাকরি না হলে আমাকে ধাপে-ধাপে কিছু টাকা ফেরত দেন। আরও এক লাখ টাকা বাকি ছিল। তা চাইতে গেলে পুষ্পিতা রায় ডাকুয়ার ছেলে আমাদের উপরে হামলা করে। আমি আহত হই।’’
অভিযোগ অস্বীকার করে পুষ্পিতা রায় ডাকুয়া বলেন, ‘‘আমার বিরুদ্ধে আগেও চক্রান্ত করেছে। এখনও চক্রান্ত করে মিথ্যা অভিযোগ তুলছে। আমি কারও থেকে টাকা নিইনি। আমার বাড়িতে এসে স্বামীর উপরে হামলা করে। স্বামী আইসিইউ-তে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় বক্সিরহাট থানায় অভিযোগ করেছি।’’ রাজ্য তৃণমূলের উত্তরবঙ্গে মুখপাত্র উদয়ন গুহ বলেন, ‘‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে দেখবো।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)