বিষ দিয়ে মাছ ধরলে এক বছরের কারাদণ্ড হতে পারে বলে জানিয়ে তিস্তাপাড়ে মাইকে ঘোষণা শুরু করেছে মৎস্য দফতর। প্রাথমিক খোঁজখবর নেওয়ার পরে মৎস্য দফতরের অনুমান, মঙ্গলবার গভীর রাতে তিস্তা নদীতে বিষ ঢালা হয়েছিল। শীতের সুখা মরসুমে নির্দিষ্ট সময়ে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়। সেই সময়ের হিসেব করেই গভীর রাতে নদীতে বিষ মেশানো হয়। তখন জল ছিল কম। নদীর জলে বিষ ছড়িয়ে পড়তে দুই থেকে তিন ঘণ্টা সময় লাগে। বুধবার সকাল থেকে রাশি রাশি মরা মাছ ভেসে উঠতে থাকে। সকালের পরে ব্যারাজ থেকে ছাড়া জলে নদীতে স্রোত বেড়ে যায়। সে সময়ে বিষ তেমন কাজ করবে না ধরে নিয়েই গভীর রাতে বিষ ঢালা হয়েছিল বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তিস্তাপাড় জুড়ে মাছ ধরা নিয়ে সতর্কতা জারি করে ঘোষণা চালিয়েছে মৎস্য দফতর। তিস্তা নদীতে বিষের প্রভাব পুরোপুরি কেটেছে কিনা, তা নিয়েও নিশ্চিত নয় দফতর। তবে তিস্তার চরে যে ভাবে চাষ শুরু হয়েছে এবং তাতে কড়া কীটনাশক ছড়ানো হচ্ছে, তা-ও উদ্বেগের বলে দাবি। মৎস্য দফতরের এক আধিকারিকের কথায়, “হতে পারে চাষের জমিতে দেওয়া কড়া কীটনাশক নদীতে ঢেলে দেওয়া হয়েছিল। যাঁরা নদীর তীরে চাষ করছেন, তাঁদের সঙ্গেও কথা বলা হবে।”
তিস্তার জলে ঠিক কী ধরণের বিষ মেশানো হয়েছিল, তা এখনও জানতে পারেনি মৎস্য দফতর। তিস্তার জলের নমুনা পরীক্ষা করা হয়নি, মৃত মাছেরও নমুনা সংগ্রহ করতে পারেনি দফতর। দফতরের দাবি, যতক্ষণে বিষক্রিয়ার খবর পৌঁছেছে, ততক্ষণে ব্যারাজ থেকে জল ছাড়া হয়েছে এবং বিষ দ্রবীভূত হয়ে গিয়েছে। মৎস্য দফতরের জলপাইগুড়ির সহকারী অধিকর্তা রমেশ বিশ্বাস বলেন, “তিস্তার জলে দূষণ তো হয়েছেই, তবে বিষ দেওয়ার পরে জলের নমুনা সংগ্রহ করা হয়নি। কারণ ব্যারাজ থেকে ছড়া ছাড়ায় নদীর স্রোত বেড়ে গিয়েছিল। তিস্তাপাড়ে এ দিন মাইকে ঘোষণা করা হয়েছে। লিফলেট বিলি হবে, সচেতনতার শিবিরও হবে।“ তিস্তাপাড়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের নৌকায় বা অনেক সরঞ্জাম নিয়ে মাছ ধরতে দেখলে প্রশাসনকে খবর দিতে বলা হয়েছে।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)