জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং বাস পরিষেবার উদ্বোধন। সোমবার। নিজস্ব চিত্র
এক শহর ১৭৩ বছর পেরিয়েছে। অন্যটি ১৫০ ছুঁতে চলেছে। দুই শহরেই পুরসভার পত্তন হয়েছিল ব্রিটিশ ভারতে। দুই শহরেরই সাবেক অর্থনীতিতে জড়িয়ে ছিল চা বাগান। দুই শহরের মধ্যে দূরত্ব ১০০ কিলোমিটারের কিছু বেশি। এত দিন বাসে বা ট্রেনে সরাসরি যোগাযোগের উপায় ছিল না। এ বার দুই প্রাচীন পুর-শহরের যোগাযোগ ঘটিয়ে দিল উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। সোমবার থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে শুরু হল উত্তরবঙ্গের দুই প্রাচীন শহর দার্জিলিং এবং জলপাইগুড়ির মধ্যে সরাসরি বাস যোগাযোগ। সোমবার জলপাইগুড়ির ডিপোয় এই বাস চলাচলের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন নিগমের চেয়ারম্যান পার্থপ্রতিম রায়। আজ, মঙ্গলবার থেকে এই পথে নিয়মিত চলাচল করবে বাস।
এত দিন জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং যেতে হলে শিলিগুড়িতে বাস বা গাড়ি বদলাতে হত। এ বার থেকে জলপাইগুড়ির শান্তিপাড়ার ডিপো থেকে সকাল সাড়ে ৮টায় যাত্রা শুরু করে দার্জিলিঙে বাস পৌঁছবে দুপুর দেড়টা নাগাদ। আবার দার্জিলিং থেকে বিকেল ৩টেয় বাস ছেড়ে জলপাইগুড়ি শহরে পৌঁছবে সন্ধে ৭টা নাগাদ।
জলপাইগুড়ির ডিপো থেকে বর্তমানে সপ্তাহে বেশ কয়েকটি পর্যটন বাস চলে। সেগুলি লাভা, রাজাভাতখাওয়ার মতো পর্যটন কেন্দ্রে যায়। তবে দার্জিলিঙের সঙ্গে সরাসরি সড়ক যোগাযোগের খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে যে ধরনের উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে, তাতে নিগমের কর্তারা মনে করছেন, দার্জিলিঙের বাস পর্যটনের অন্য বাসকে টেক্কা দেবে। যাত্রী টানতে ভাড়াও আয়ত্তের মধ্যে রাখতে চেয়েছে উত্তরবঙ্গ রাষ্ট্রীয় পরিবহণ নিগম। জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের ভাড়া স্থির হয়েছে মাথা-পিছু ১৪০ টাকা।
দার্জিলিং যাতায়াতের বেশির ভাগ পথটাই পাহাড়ি। দু’টি টোল প্লাজায় টিকিট কাটার খরচ মিলিয়ে প্রতি কিলোমিটার যাতায়াতে ২৮ টাকা খরচ পড়বে। তা হলে যে ভাড়া আপাতত ঠিক হয়েছে, তাতে কি বেশি দিন খরচ টানা সম্ভব হবে? বাসটি ৩০ আসনের। ডিপো সূত্রের দাবি, জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিং এবং ফিরতি পথে অর্ধেকের বেশি যাত্রী থাকলেই বাস চালানো যাবে। দিনে এক বারই যাতায়াত করবে বাসটি। শিলিগুড়ি ছেড়ে রোহিণী হয়ে, কার্শিয়াং পেরিয়ে দার্জিলিঙে যাতায়াত করবে নিগমের বাস।
হিলকার্ট রোড ধরেই চলবে জলপাইগুড়ি-দার্জিলিং যাত্রাপথের এই বাসটি। ঠিক হয়েছে, যাতায়াতের পথে শিলিগুড়ি টার্মিনাসে আধ ঘণ্টার মতো থামবে এই বাস। জলপাইগুড়ির ডিপোর দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক দীপক রাহা বলেন, ‘‘শহরের বহু বিশিষ্ট জন এবং কিছু সংগঠনের তরফে দার্জিলিং যাওয়ার বাস চেয়ে আবেদন এসেছিল। আমরা বোর্ডকে প্রস্তাব পাঠাই। বোর্ড সেটি অনুমোদন করেছে।’’
দার্জিলিংগামী বাস স্মৃতিমেদুর করেছে অনেককে। শহরের বাসিন্দা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের প্রাক্তন প্রধান আনন্দগোপাল ঘোষ বলেন, ‘‘যত দূর মনে পড়ে, আশির দশকের শেষে অথবা নব্বইয়ের দশকের শুরুতে জলপাইগুড়ি থেকে দার্জিলিঙের একটি বাস ছাড়ত। তবে সে বাস বেশি দিন চলেনি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy