Advertisement
২২ জানুয়ারি ২০২৫
Sick

শীতের মুখে শরীর কাবু

প্রতিটি নার্সিংহোম এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে সকাল-সন্ধ্যা লম্বা লাইনও দেখা গিয়েছে। ভিড় বাড়ছে বিশেষজ্ঞ ইএনটি চিকিৎসকদের কাছেও।

ঠান্ডা সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা।

ঠান্ডা সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা। -প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

কৌশিক চৌধুরী
শেষ আপডেট: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:৩৭
Share: Save:

বছরের শেষ মাসে শীতের আমেজ বাড়তে থাকার সঙ্গে সঙ্গে ঠান্ডা সংক্রান্ত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে শিশু থেকে শুরু করে বয়স্করা। প্রতিনিয়ত সরকারি শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতাল বা উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের আউটডোরে হাজারেরও বেশি রোগীর মধ্যে অধিকাংশই জ্বর, সর্দি-কাশি তো বটেই, অন্য নানা ধরনের সংক্রমণে ভুগছেন। প্রতিটি নার্সিংহোম এবং শিশুরোগ বিশেষজ্ঞদের চেম্বারে সকাল-সন্ধ্যা লম্বা লাইনও দেখা গিয়েছে। ভিড় বাড়ছে বিশেষজ্ঞ ইএনটি চিকিৎসকদের কাছেও।

বিশেষজ্ঞ চিকিসকেরা জানাচ্ছেন, ভোরবেলা ঠান্ডা আর প্রতিদিন বিকেলের পর থেকে ঠান্ডা পড়ছে। এর বাইরে দিনভর সাধারণত গরম থাকছে। গত কয়েকদিনে গরমের পরিমাণ একটু কমলেও দিনের বেলায় হাল্কা জামাকাপড় খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না। কিন্তু ভোরবেলা বা সন্ধ্যার পর গরম জামাকাপড়, জ্যাকেট, টুপি বা মাস্কের ব্যবহার ঠিকঠাক না হলেও রোগী আক্রান্ত হচ্ছে।

একেবারে এক মাস থেকে ছ’মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ‘আরএসভি’ বা রেসপিরেটরি সিনসিশিয়াল ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। একটু বড় বাচ্চা বা শিশুদের মধ্যে বুকে ঠান্ডার সংক্রমণ বেড়েছে। অনেকেই হাঁপানির মতো আওয়াজ করে শ্বাস নিচ্ছেন। অনেককে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ, নিবুলাইজার ব্যবহার করিয়ে স্বাভাবিক করতে হচ্ছে। শিশুরোগ বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, ‘‘শিশুদের দু’এক দিনে পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে চিকিৎসকদের কাছে নেওয়া বাধ্যতামূলক। কারণ, বহু শিশু ২৪ ঘণ্টার মধ্যে খারাপ হয়ে যাচ্ছে। তাতে হাসপাতাল বা নার্সিংহোমে ভর্তি করানোর মতো পরিস্থিতি তৈরি হয়ে যাচ্ছে।’’ তাঁরা জানাচ্ছেন, অনেক ক্ষেত্রে বমি, পায়খানা এবং কাশি বা কফের সঙ্গে রক্তও আসছে। সবই সংক্রমণের লক্ষণ।

বয়স্ক বা প্রবীণদের একই অবস্থা। শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, শরীরের ব্যথা এ সময় বাড়ছে বলে চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে ‘সিওপিডি’র রোগীদের বাড়তি নজরদারির প্রয়োজন হয়। ধুলো, ঠান্ডা বাতাস থেকে সুরক্ষিত থাকাটা প্রয়োজন। নইলে বড়দের জ্বর, সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্টের মতো পরিস্থিতি হচ্ছে। মাথা যন্ত্রণা বা শরীরে ব্যথা দিয়েই সব শুরু হচ্ছে। ভাল ভাবে শীত পড়া অবধি এই পরিস্থিতি চলবে বলে শহরের একাধিক চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। সেই সঙ্গে পাহাড়ে গেলে তা থাকলে বাড়তি সতর্কতা, পোশাকের ব্যবহারের কথা বলা হচ্ছে।

দার্জিলিং ও কালিম্পং জেলায় ঠান্ডার সঙ্গে পাহাড়ে তুষারপাতের সম্ভাবনা তৈরি হচ্ছে। পশ্চিমী ঝঞ্ঝার প্রভাবে সান্দাকফু, নাথু লা ছাড়াও দার্জিলিংয়ের আশপাশে উঁচু এলাকাগুলিতে তুষারপাতের ইঙ্গিত রয়েছে। আবহাওয়া দফতরের আধিকারিকেরা জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে উত্তরবঙ্গে পশ্চিমি ঝঞ্ঝার দাপট শুরু হয়েছে। মেঘের আনাগোনাও বেড়েছে উত্তরবঙ্গ জুড়েই। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের ভারপ্রাপ্ত অধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘আগামী দু-তিন দিন উত্তরবঙ্গ জুড়ে বিক্ষিপ্ত হাল্কা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। পাহাড়ের উঁচু এলাকাগুলিতে তুষারপাতের সম্ভাবনাও প্রবল।’’

গত কয়েকদিন থেকেই দিনের তাপমাত্রা রোদের জন্য বেড়েছিল। শনিবার থেকে মেঘাচ্ছন্ন পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় উত্তরবঙ্গের অনেক জেলাতেই দিনের তাপমাত্রা অনেকটা কমে আসে। আধিকারিকেরা জানান, তুষারপাতের পরে আকাশ পরিষ্কার হলে রাতের তাপমাত্রাও ধীরে ধীরে নামবে। শীতের আমেজ আরও বাড়বে।

অন্য বিষয়গুলি:

Sick Winter Hospital
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy