‘নিরাপদ শিবিরে’ বিজেপি প্রার্থীরা। —নিজস্ব চিত্র।
পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দেওয়া ইস্তক তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। মনোনয়ন প্রত্যাহারের জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু তাঁরা ভোটে লড়বেনই। তাই বাড়িঘর ছেড়ে প্রায় ১০০ বিজেপি প্রার্থী আশ্রয় নিয়েছেন একটি শিবিরে। সেখানে এক সঙ্গে থাকছেন। রান্না-খাওয়া, ভোটের কৌশল, সব ঠিক হচ্ছে কোচবিহারের ওই এক ছাদের নীচে। বাড়িঘর ছেড়ে শরণার্থী শিবিরের মতো ওই ঘরে আছেন কোচবিহারের বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির বিজেপি প্রার্থী।
দিনহাটা-২ ব্লক ,নাটাবাড়ি বিধানসভা এবং কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের ১০৫ জন গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির প্রার্থী জানাচ্ছেন, শাসকদলের সন্ত্রাসের ভয়ে এই আশ্রয়স্থলে আছেন। দিনে দু’বেলা নিয়ম করে শীর্ষ নেতৃত্ব খোঁজ রাখছেন প্রার্থীদের। সকালে মুড়ি, দুপুরে ডাল-ভাত, সন্ধ্যায় টুকিটাকি খাবার থেকে নৈশভোজ তৈরি করছেন নিজেরাই। এক বিজেপি প্রার্থীর কথায়, ‘‘গত ৩ দিন হল এই ভবনই আমাদের আপাতত ঠিকানা হয়েছে।’’
মনোনয়ন জমা দেওয়ার পর্ব শেষ হয়ে গিয়েছে। চলছে মনোনয়ন পরীক্ষা এবং প্রত্যাহার পর্ব। কোচবিহারে এই বিজেপির প্রার্থীদের অভিযোগ, তৃণমূলের তরফে ক্রমাগত হুমকি আসছে। এমনকি, মনোনয়ন প্রত্যাহার না করলে প্রাণ খোয়াতে হবে বলেও কেউ কেউ ‘বার্তা’ পেয়েছেন। কারও কারও বাড়ির সামনে বোমাবাজিও হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে বাড়িছাড়া হয়েছেন। দিনহাটা-২ ব্লকের একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রার্থী সাধনা বর্মণ বলেন, ‘‘তৃণমূলের পক্ষ থেকে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে মনোনয়ন প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য। যদি মনোনয়ন প্রত্যাহার না করি তবে বাড়িতে বোমাবাজি করবে। তাই ভয়ে পরিবার, সন্তান ফেলে এখানে এসে রয়েছি।’’ দিনহাটা-২ ব্লকের জিৎপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজেপি প্রার্থী ফুলমালা রায় বলেন, ‘‘মনোনয়ন দেওয়ার সময় থেকে আমাকে ভয় দেখানো হয়েছে। আমায় লক্ষ্য করে বোমাও ছোড়া হয়েছে। তাই ভয়ে এখানে আশ্রয় নিয়েছি।’’ একই কথা বলছেন দিনহাটা হাড়িভাঙা অঞ্চলের প্রার্থী বিনোদিনী রায়-সহ অন্যান্যরা। তাঁদের প্রত্যকের অভিযোগ, তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করতে চায়। সেই কারণে হুমকি দিয়ে মনোনয়ন তুলে দেওয়ার ‘কাজ’ করছে। এই প্রসঙ্গে জেলা বিজেপির সভাপতি সুকুমার রায় বলেন, ‘‘দিনহাটা-২ ব্লক, নাটাবাড়ি এবং কোচবিহার দক্ষিণ বিধানসভা কেন্দ্রের বিজেপি মনোনীত গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতির শতাধিক বিজেপি কর্মীকে আমরা একটি নিরাপদে আশ্রয় রেখেছি। আমাদের প্রার্থীদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে সবাইকে একত্রিত করে একটি বেসরকারি ভবনে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা করেছি। আগামিকাল (মঙ্গলবার) মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন। এর পরেই তাঁরা তাঁদের এলাকায় চলে যেতে পারবেন।’’
যদিও পুরোটাই বিজেপির ‘নাটক’ বলে কটাক্ষ করেছে শাসক শিবির। তৃণমূলের জেলার মুখপাত্র পার্থপ্রতিম রায় বলেন, ‘‘ইতিমধ্যেই তিনটি গ্রাম পঞ্চায়েতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আমরা জয়লাভ করেছি। বিজেপি সেখানে ব্যর্থ হয়েছে। প্রার্থী দিতে পারেনি । এসব করে নিজেদের ব্যর্থতা ঢাকার চেষ্টা করছে। কিছু প্রার্থীকে নিয়ে এসে আলাদা করে একটা ভবনে রেখে গল্প তৈরি করছে যে, তৃণমূল সন্ত্রাস সৃষ্টি করছে। আসলে কোথাও এই রকম পরিবেশ বা পরিস্থিতি নেই। যদি কোথাও সন্ত্রাসের পরিবেশ বা বাতাবরণ থাকত তাহলে বিজেপি জেলা প্রশাসন বা নির্বাচন কমিশনের কাছে কেন অভিযোগ জানাল না?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy