—প্রতীকী চিত্র।
শিলিগুড়ি শহরে ডেঙ্গিতে এক বালিকার মৃত্যুর পরে এ বার উত্তরবঙ্গে ম্যালেরিয়ায় আরও এক জনের মৃত্যুর খবর প্রকাশ্যে এল। আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালে দিন ১২ আগে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়ে লক্ষ্মীরাম মুর্মু (১৬) নামে এক কিশোরের মৃত্যু হয়েছে বলে জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর। স্বাস্থ্য দফতরের একাধিক সূত্রে খবর, সে ছেলেটি জ্বরে আক্রান্ত, সেই খবর স্বাস্থ্য দফতরে পৌঁছতে কয়েক দিন সময় লেগে যায়। তার পরে ওই কিশোরকে সরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু তাকে বাঁচানো সম্ভব হয়নি। কিন্তু ওই কিশোর যে জ্বরে আক্রান্ত তা জানতে তাঁদের দেরি হল কেন, তা নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি আলিপুরদুয়ারের স্বাস্থ্যকর্তারা।
স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়েক বছর পরে এ বছর ফের এক বার আলিপুরদুয়ার জেলায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ দেখা দিয়েছে। চলতি বছর জেলায় এখনও পর্যন্ত ৮৭ জন ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন। যাঁদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হয়েছেন আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকে। ম্যালেরিয়ায় মৃত্যু হওয়া লক্ষ্মীরাম মুর্মু নামে ওই কিশোরের বাড়িও আলিপুরদুয়ার ২ ব্লকের সম্বলপুর এলাকায়। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরে কিশোরের পরিবারের লোকেরা তাকে প্রথমে স্থানীয় এক গ্রামীণ চিকিৎসকের (হাতুড়ে) কাছে নিয়ে যান। তাঁর ‘নির্দেশে’ কিশোরের রক্তের নমুনার পরীক্ষাও হয়। কিন্তু তখন ম্যালেরিয়া ধরা পড়েনি। দিন চার-পাঁচ পরে কিশোরের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে, তাকে যশোডাঙা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। সেখানে নমুনা পরীক্ষায় কিশোরের ম্যালেরিয়া ধরা পড়ে। কিন্তু সেই সময় কিশোরের শারীরিক অবস্থা গুরুতর থাকায়, তাকে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানেই চিকিৎসা চলাকালীন ১০ জুলাই তার মৃত্যু হয়।
আলিপুরদুয়ার জেলা হাসপাতালের সুপার পরিতোষ মণ্ডল বলেন, “নমুনা পরীক্ষায় ওই কিশোরের শরীরে প্লাসমোডিয়াম ফ্যালসিফেরামের জীবাণু মিলেছে। যশোডাঙা হাসপাতাল থেকে জেলা হাসপাতালে আনার সময় তার শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত গুরুতর ছিল। ডাক্তারেরা চেষ্টা করেও তাকে বাঁচাতে পারেননি।” সুপার আরও বলেন, “সে জন্যই সকলের কাছে অনুরোধ, কেউ জ্বরে আক্রান্ত হলে সরাসরি তাঁকে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যান। এবং সেখানকার ডাক্তারদের পরামর্শ অনুযায়ী, চিকিৎসা করান। যাতে শুরু থেকেই সেই রোগী যথাযথ চিকিৎসা পান।” ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বৃদ্ধি পেতেই আলিপুরদুয়ার ২ ব্লক-সহ জেলার যে সব জায়গায় মশাবাহিত এই রোগ ছড়াচ্ছে, সেখানে ‘ফিভার সার্ভেল্যান্স’-সহ নানা কর্মসূচির উপরে জোর দিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর। তার পরেও ষোলো বছরের ওই কিশোর জ্বরে আক্রান্ত হওয়ার পরে প্রথম কয়েক দিন হাতুড়ের চিকিৎসায় কেন থাকল? কেনই বা কিশোরের অবস্থার অবনতি হওয়ার আগে পর্যন্ত তার সম্পর্কে কোনও খোঁজ পেল না স্বাস্থ্য দফতর? এ সব বিষয়ে প্রশ্ন উঠছে। যদিও এ নিয়ে আলিপুরদুয়ার জেলার সিএমওএইচ সুমিত গঙ্গোপাধ্যায় বা ডেপুটি সিএমওএইচ সুপ্রিয় চৌধুরী কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে স্বাস্থ্য দফতর সূত্রে খবর, এই ঘটনার কথা মাথায় রেখে, কাল, বুধবার গ্রামীণ চিকিৎসকদের নিয়ে বৈঠকে বসবেন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy