অনীত থাপা। —ফাইল চিত্র।
দার্জিলিং ও কালিম্পং পাহাড় মিলিয়ে গোর্খাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের আওতাধীন (জিটিএ) এলাকার বন্ধ ৯টি চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য় ‘এক্সগ্রাশিয়া’র দাবি উঠল। জিটিএ-প্রধান অনীত থাপা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে পুজোর মুখে চিঠি দিয়ে ওই দাবি জানিয়েছেন। তাঁর দাবি, জলপাইগুড়ি এবং আলিপুরদুয়ারের বন্ধ চা বাগানের জন্য় সরকার যে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ভেবেছে, পাহাড়ের ক্ষেত্রেও তা কার্যকর করা হোক।
রবিবার অনীত বলেন, ‘‘শুধু রাজ্য নয়, গোটা দেশে খ্যাত দার্জিলিং তৈরির নেপথ্যে পাহাড়ের চা শ্রমিকেরা আছেন। এত দিন তাঁরা নিরলস কাজ করে চলেছেন। এখন তাঁদের একাংশের বাগানে নানা কারণে সমস্যা রয়েছে বা বন্ধ রয়েছে। সেখানে সরকারের এঁদের পাশে থাকাটা জরুরি।’’ তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী বরাবর পাহাড় নিয়ে ভাবেন। পাহাড়ের জন্য তিনি এ বারের আবেদন শুনবেন বলে আমরা আশাবাদী।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়ে ন’টি চা বাগান বন্ধ হয়েছে। চুংথং, ধোত্রে, পানিঘাটা, নাগরি, রম্বুক সিডর, মুন্ডা, পেশক, পান্ডম এবং সিংতাম চা বাগানে অচলাবস্থা চলেছে। কোনও বাগান বছর খানেক, কোনও বাগান কয়েক বছর ধরে বন্ধ পড়ে রয়েছে। পানিঘাটার মতো বাগান বছর পর বছর বন্ধ। সেখানে সরকারি হস্তক্ষেপে কয়েকবার বাগান খোলার চেষ্টা হলেও তা ফলপ্রসূ হয়নি। বন্ধ ন’টি চা বাগান নিয়ে স্থায়ী শ্রমিকের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার। এর বাইরে অন্তত কয়েক হাজার় অস্থায়ী শ্রমিক আছেন। অপ্রত্যক্ষ ভাবে বহু পরিবারের সদস্য বন্ধ স্থায়ী বাগানের শ্রমিকদের উপর নির্ভরশীল। আপাতত দিনমজুরি, পাথর ভাঙা থেকে নানা কাজ করে এই শ্রমিক পরিবারগুলি সংসার চালাচ্ছে।
পাহাড়ের বোনাস চুক্তি নিয়ে আলোচনার সময়েই পাহাড়ের বন্ধ চা বাগানের বিষয়টিও সামনে এসেছে। চা শ্রমিক সংগঠনগুলি জানাচ্ছে, কোভিড বা করোনা সংক্রমণ-কালে চা শ্রমিকদের জন্য ‘জিটিএ চেয়ারম্যান’স রিলিফ ফান্ড’ তৈরি হয়। কোটি টাকার উপর তহবিলে টাকা জমা পড়ে। শ্রমিক স্বার্থে তা ব্যবহারের সিদ্ধান্ত হয়। যা নিয়ে গত বছর পাহাড়ে বহু বিতর্ক হয়। শেষে, ওই তহবিল থেকে পাহাড়ের বন্ধ চা বাগানের শ্রমিক পরিবারগুলিকে বোনাসের মতো টাকা অনুদান দিয়ে দেয় জিটিএ। বছর গড়িয়ে আর এক বছরের পুজো আসতেই বন্ধ বাগানে বোনাস বা অনুদান নিয়ে শ্রমিকেরা সরব হয়েছেন।
জিটিএ চাইছে, বন্ধ বাগানের সরকারি নিয়মে ১৫০০ টাকা করে শ্রমিকদের ‘ফাউলাই’ দেওয়া হোক। সেই সঙ্গে এক মাসের মজুরি ‘এক্সগ্রাশিয়া’ হিসাবে দেওয়া হোক। পাহাড়ের চা শ্রমিকদের যৌথ মঞ্চের অন্যতম নেতা তথা প্রাক্তন সাংসদ সমন পাঠক বলেন, ‘‘জিটিএ গতবার তহবিল থেকে বন্ধ বাগানে টাকা দিয়েছে। এ বারও তাঁরা সেদিকটা দেখুক, আমরা বলছি। তেমনিই, সরকারও দায়িত্ব অস্বীকার করতে পারে না। তাই সরকারি অনুদানও বন্ধ বাগানের শ্রমিকদের দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy