—প্রতীকী চিত্র।
ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লকের দুই নেতার গ্রেফতারি এবং দল থেকে বহিষ্কারের পরে এ বার পুলিশ প্রশাসনের নজর এক শ্রমিক নেতার দিকে। পুলিশ-প্রশাসন সূত্রের খবর, সম্প্রতি নবান্ন থেকে শিলিগুড়ির পুলিশের শীর্ষ স্তরের কাছে ওই শ্রমিক নেতার সম্পর্কে খোঁজখবর করার নির্দেশ আসে। তার পরে বিভিন্ন স্তর থেকে খোঁজখবর নেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে। বাম আমলে বামপন্থী, পরে ডানপন্থী হয়ে যাওয়া ওই নেতা সম্পর্কে কলকাতায় প্রাথমিক রিপোর্টও গিয়েছে বলে খবর।
জলপাইগুড়ি জেলার ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লকে তিনি শ্রমিক সংগঠনের গুরুত্বপূর্ণ পদে আছেন। সাধারণ জীবন-যাপন থেকে গত কয়েক বছরে তাঁর ‘উত্থান’ সম্পর্কে খোঁজ চলছে আপাতত। এই ব্লকের ক্যানাল রোড থেকে শুরু করে আমবাড়ি, ‘ভোরের আলো’র দিকে এগোতে অন্তত ৬০-৭০টি বড় মাপের কারখানা তৈরি হয়েছে। এর বাইরে এনজেপি লাগোয়া এলাকায় রয়েছে ড্রাই পোর্ট। সেখান থেকে নিয়মিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ব্যবসা হচ্ছে। এই ব্যবসায়ী এবং শিল্পগোষ্ঠীদের তরফেও কিছু তথ্য সরকারের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তেমনিই, ওই নেতার তরফে কোথাও কোনও চাপ তৈরি করে টাকা আদায় হয়েছে কি না তাও দেখা হচ্ছে।
জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের অন্যতম এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘ডাবগ্রাম ফুলবাড়ির পরিস্থিতি নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। সমস্ত কিছুই নবান্ন-এর নির্দেশে করা হচ্ছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, সম্প্রতি জমি দখলের অভিযোগের মামলায় তৃণমূলের ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি ব্লক সভাপতি দেবাশিস প্রামাণিক, সহ সভাপতি গৌতম গোস্বামীকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। দল থেকেও দু’জনকে বহিষ্কার করা হয়। এ বার রাজগঞ্জ ব্লকে, বিশেষ করে ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি এলাকায় নতুন করে খোঁজ শুরু হয়েছে। তাতে নতুন ২১ জনের নামের একটি তালিকা তৈরি হয়েছে। তাতে প্রথম দিকেই রয়েছে ওই শ্রমিক নেতার নাম।
তাঁর বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ শোনার পরে তা খতিয়ে দেখার নির্দেশ জারি করা হয়েছে। বিশেষ করে, তাঁর আয়ের উৎস, বাড়িঘর, সম্পত্তি, জমির হদিস তো বটেই, গত পাঁচ বছরে তিনি কোথা থেকে কোথায় এসে দাঁড়িয়েছেন তা দেখতে বলা হয়েছে। পাশাপাশি, দলের একাংশের তরফে তাঁর সম্পর্কেও বিভিন্ন ‘তথ্য’ জমা দেওয়া হয়েছে।
প্রশাসনের তরফে কয়েকজন কর্তা জানান, কয়েক বছর আগে ড্রাই পোর্টে শ্রমিক সরবরাহ থেকে শুরু করে নানা কাজের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দল হয় বলে অভিযোগ। দুই নেতার গোলমালে এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। এক জনের বিরুদ্ধে গুলি চালানোর অভিযোগও ওঠে। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে গ্রেফতার হন প্রসেনজিৎ রায়। দল থেকে তাঁকে বহিষ্কার করা হয়। সে সময় দ্বিতীয় এক নেতার সম্পর্কে রাজ্য পুলিশ-প্রশাসনের কাছে কিছু খবর গিয়েছিল। সম্প্রতি ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির জমি থেকে অনৈতিক কাজকর্ম নিয়ে আবার খোঁজখবর শুরু হয়েছে। সেখানেই কিছু জায়গায় ওই নেতার নাম উঠে এসেছে বলে অভিযোগ। তা নিশ্চিত হতেই পুলিশ-প্রশাসনের কাছে ওই শ্রমিক নেতার সম্পর্কে বিস্তারিত খোঁজ নিয়ে দ্রুত রিপোর্ট দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy