মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র
ঠিক দু’বছর আগের কথা। নভেম্বরের কোনও একটা দিন উত্তরকন্যায় প্রশাসনিক বৈঠকে কোচবিহারের একশো দিনের প্রকল্পের কাজকর্ম নিয়ে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের রীতিমতো ধমক দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক স্তরের অনেকেই আজ নির্দ্বিধায় মানছেন, একশো দিনের কাজে পরপর তিনবার দেশের সেরা জেলাগুলির মধ্যে কোচবিহারের জায়গা পাওয়াটা সেদিনের ওই ধমকেরই সুফল!
একশো দিনের কাজে পরপর তিনবার দেশের সেরা জেলাগুলির মধ্যে একটি কোচবিহার। এবারে দেশে দ্বিতীয় হয়েছে এই জেলা। এই অভাবনীয় সাফল্যে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের সঙ্গে খুশি মুখ্যমন্ত্রীও।
প্রশাসন সূত্রের খবর, কেন্দ্রের গ্রামোন্নয়নমন্ত্রক দেশের সেরা জেলাগুলিকে দিল্লিতে আগামী ১৯ ডিসেম্বর দিল্লিতে পুরস্কৃত করবে। একশো দিনের কাজ প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত রাজ্যের কমিশনার কৌশিক সাহা বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মেনেই প্রকল্পের কাজ রূপায়ণে প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল। তাতেই সাফল্য এসেছে।” জেলাশাসক পবন কাদিয়ন বলেন, “পরপর তিনবার জাতীয় স্তরের পুরস্কারপ্রাপ্তিতে আমরা খুশি।”
বাংলাদেশ সীমান্ত-ঘেঁষা এই প্রত্যন্ত জেলার অধিকাংশ বাসিন্দারই জীবিকা কৃষিকাজ। কেউ কেউ ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। চাকরি করেন খুব কম লোকই। এমন একটি জেলায় একশো দিনের কাজ নিয়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহ ছিল প্রবল। প্রথমদিকে ওই প্রকল্প রাস্তা তৈরির মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। তাতে বছরশেষের হিসেবে ঝুলি প্রায় ফাঁকা ছিল। মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পর অবশ্য নতুন নতুন প্রকল্প এনে তা রূপায়ণের দিকে নজর দেওয়া হয়। একশো দিনের কাজের কোচবিহার জেলা আধিকারিক সত্যজিৎ বিশ্বাস জানান, ২০১৮-’১৯ আর্থিক বছরে কোচবিহারে আড়াই লক্ষ পরিবার একশো দিনের প্রকল্পে কাজ পেয়েছেন। সবচেয়ে পোলট্রি শেড তৈরিতে রাজ্যে এগিয়ে আছে কোচবিহার। জেলায় ৫২৪টি পোলট্রি শেড তৈরি হয়েছে। ৪৬২টি অঙ্গনওয়াড়ি সেন্টার তৈরিতে একাধিক দফতরের সঙ্গে সহযোগিতায় একশো দিনের প্রকল্পে কাজ হয়েছে। ১২০০টি ‘ফিশ ট্যাঙ্ক’ তৈরি হয়েছে। বারো হাজার মানুষকে কলাবাগান তৈরিতে সহযোগিতা করা হয়েছে। পাঁচটি মাশরুম শেড তৈরি করা হয়েছে। এর বাইরেও রাস্তা তৈরি, বাঁধের কাজ হয়েছে।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিক জানালেন, প্রকল্পের মাধ্যমে জবকার্ডধারীদের বিকল্প কর্মসংস্থান ও আয়ের দিশা দেখানো, বাসিন্দাদের অর্থনৈতিক জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে পদক্ষেপের চেষ্টা করা হয়েছে। যা দেখে খুশি হয়েছেন কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরা।
২০১৭ সালে মুখ্যমন্ত্রীর ধমকের পরেই ঘুরে দাঁড়াতে কোমর বেঁধে নামেন প্রশাসনের কর্তারা। বছর ঘুরতেই বিভিন্ন রাজ্যের সেরা ১২টি জেলার তালিকায় জাতীয় পুরস্কার পায় কোচবিহার। পরের বছরেও ওই পুরস্কার এসেছে। এবারেও পুরস্কার এল। গোপালপুরের স্মৃতি মণ্ডল একশো দিনের কাজে ফিশ ট্যাঙ্ক করে সাড়া ফেলেছেন। বালিয়ামাড়ির একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যা পোলট্রি শেড করে সাড়া ফেলেছেন। পুরস্কারের খবরে খুশি তাঁরাও। তবে সকলেরই এক বক্তব্য, প্রশাসন পাশে থাকায় তাঁদেরও সাফল্য এসেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy