বেঙ্গালুরুর ক্যাফেতে বিস্ফোরণের ঘটনায় বাংলা থেকে ধৃত দুই অভিযুক্ত। —ফাইল চিত্র ।
রামেশ্বরম কাফে বিস্ফোরণের মামলায় পশ্চিমবঙ্গ থেকে ধৃত আব্দুল মাথিন আহমেদ ত্বহা এবং মুসাভির হুসেন শাজিবকে আজ ১০ দিনের হেফাজতের নির্দেশ দিল বিশেষ এনআইএ আদালত। গত কাল গ্রেফতারের পরে কলকাতা থেকে ট্রানজ়িট রিমান্ডে বেঙ্গালুরু নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। আজ আদালতের নির্দেশের পরে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা হয় তাদের। এনআইএ জানিয়েছে, গত ১ মার্চের বিস্ফোরণে কাফেয় বিস্ফোরক রেখেছিল শাজিব। আর এই ঘটনার মূল চক্রী ছিল ত্বহা। গোটা ঘটনার পরিকল্পনার পাশাপাশি গ্রেফতারি এড়াতে কী ভাবে পালিয়ে যাওয়া হবে, তার ছক কষেছিল ত্বহা।
এই দুই জঙ্গিকে গ্রেফতারের জন্য এনআইএ এবং রাজ্য পুলিশকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া।
এনআইএ সূত্রের খবর, ধৃত দু’জনের আইএস জঙ্গি যোগ রয়েছে। পাঁচ বছর ধরে ত্বহা ‘ওয়ান্টেড’। ২০২২ সালের মেঙ্গালুরু বিস্ফোরণ, শিবমোগ্গায় বিস্ফোরণে জড়িত ছিল সে। ২০২০ সালের আল হিন্দ মডিউল মামলাতেও যুক্ত ছিল। দক্ষিণ ও মধ্য ভারতের একাধিক মামলায় কর্নেল নামে এক জনের নাম উঠে এসেছে। এই কর্নেলের সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল ত্বহার। ত্বহা ও শাজিবকে জেরার পাশাপাশি ঘটনাস্থলে নিয়ে গিয়ে সে দিনের ঘটনার পুনর্নির্মাণ করা হবে। এর পাশাপাশি খতিয়ে দেখা হবে বেঙ্গালুরু ও চেন্নাইয়ে কোথায় তারা আত্মগোপন করেছিল। ইতিমধ্যেই মুজ়াম্মিল শরিফ নামে আর এক অভিযুক্তকে এই মামলায় গ্রেফতার করা হয়েছে। ত্বহার নির্দেশে সে-ই আইইডি তৈরির উপকরণ জোগাড় করেছিল। বিস্ফোরণের আগে দিন সাতেক ধরে রামেশ্বরম কাফে ও সংলগ্ন অঞ্চল ঘুরে পরিকল্পনা করেছিল ত্বহা। কর্নাটকের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জি পরমেশ্বর জানিয়েছেন, ত্বহা ও শাজিব পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশ কিংবা অন্যত্র পালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিল কি না, তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
বিস্ফোরণের পরেই সন্দেহভাজনদের ছবি ও ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়ে। সেই সূত্রে উঠে এসেছে ত্বহা ও শাজিবের ব্যক্তিগত তথ্য।
কর্নাটকের মালাড় অঞ্চলের একটি শহর তিরথাহাল্লি নানা সময়ে গোষ্ঠী সংঘর্ষের জেরে খবরের শিরোনামে উঠে এসেছিল। সেই সূত্রে ২০১৮-১৯ সালে এই শহরে পৌঁছে গিয়েছিল এনআইএ। ২০১৯ নাগাদ ত্বহার নাম উঠে আসে রাজ্য পুলিশের সন্দেহের তালিকায়। আল হিন্দ কর্নাটক মডিউলের সঙ্গে যোগ ছিল তার।
ত্বহার বাবা মনসুর আহমেদ প্রাক্তন সেনাকর্মী। দেশসেবার জন্য যিনি গর্ব করতেন, ছেলের সন্ত্রাস যোগের খবরে সেই মনসুর মুষড়ে পড়েছিলেন। সেনা থেকে অবসরের পরে তিরথাহাল্লিতে থাকতে শুরু করেন মনসুর। সেখানেই গত বছর হৃদ্রোগে মৃত্যু হয় তাঁর।
অন্য দিকে, শাজিবের বাবা মহম্মদ নুরুল্লা চিক্কামাগালুরুর কেনগাট্টে অঞ্চলে কৃষিবিদ ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর পরে সন্তানদের নিয়ে নুরুল্লার স্ত্রী তিরথাহাল্লিতে বাবার বাড়ি ওঠেন। চার ভাইয়ের মধ্যে শাজিব তৃতীয়। তার দুই বড় ভাইয়ের এক জনের পোশাকের দোকান অন্য জনের মোবাইল ফোনের দোকান রয়েছে। ছোট ভাই পড়াশোনা করছেন।
ত্বহা ও শাজিব ছোটবেলার বন্ধু। তিরথাহাল্লির স্কুলে তারা একসঙ্গে পড়ত। পরে শাজিব শিবমোগ্গার কলেজে ভর্তি হয়। তবে ত্বহার সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy