চিকিৎসক অনির্বাণ দত্ত। ছবি: ফেসবুক।
চিকিৎসকের মৃত্যুর ঘটনায় নয়া মোড়। এ বারে মৃত চিকিৎসক অনির্বাণ দত্তকে খুন করা হয়েছে বলে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি চট্টোপাধ্যায় বহরমপুর থানায় ১০ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন। অভিযুক্তের তালিকায় অনির্বাণের বর্তমান স্ত্রী অর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায় থেকে শুরু করে শ্বশুর শান্তব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, শাশুড়ি, মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়া হোমিও চিকিৎসক বিভাস কুণ্ডু এবং অনির্বাণের দেহ সৎকারের সময়ে শ্মশান ও বাড়িতে থাকা অনির্বাণের শ্বশুরের বেশ কয়েক জন পরিচিত ও বন্ধু রয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক জানান, ময়না তদন্ত ছাড়াই দ্রুত অনির্বাণের মৃতদেহ সৎকারের মতো বিষয়ে অভিযোগ তুলে তাঁর প্রাক্তন স্ত্রী এ দিন লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগ পাওয়ার পরে খুনের মামলা করে তদন্ত শুরু হয়েছে। তবে বরাবরই অনির্বাণের শ্বশুরবাড়ির লোকজন তাঁদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছেন।
অনির্বাণের বর্তমান শ্বশুর শান্তব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘কোনও মামলা হয়েছে বলে জানি না। তবে আমি জ্ঞানত কোনও অন্যায় করিনি। অনির্বাণের মৃতদেহ দ্রুত সৎকারের অভিযোগ ঠিক নয়। স্বাভাবিক মৃত্যুর শংসাপত্র দেওয়ায় ময়না তদন্ত করাইনি। সে দিন আমাদের মানসিক অবস্থা ভাল ছিল না। বাড়িতে বা শ্মশানে কেউ ময়না তদন্তের জন্য আমাদের পরামর্শ দেননি।’’
গত ২৫ জুন শ্বশুরবাড়িতে মৃত্যু হয়েছে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের প্যাথোলজি বিভাগের চিকিৎসক অনির্বাণ দত্তের। বহরমপুরের হোমিও বিশেষজ্ঞ বিভাস কুণ্ডুর দেওয়া মৃত্যুর শংসাপত্র অনুযায়ী সেদিন সকালে ৯টা ৪৫ মিনিটে বহরমপুরের ইন্দ্রপ্রস্থে শ্বশুরবাড়িতে অনির্বাণের হৃদরোগে (কার্ডিয়াক ফেলিওরে) মৃত্যু হয়েছে। ঘটনার পর থেকে তাঁর মৃত্যু নিয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। অনির্বাণ মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক হলেও সেখানে তাঁর মৃতদেহ নিয়ে যাওয়া হয়নি। ইন্দ্রপ্রস্থে একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে জানান। সেখান থেকে অনির্বাণের মৃতদেহ বাড়িয়ে ফিরিয়ে এনে এক জন হোমিও বিশেষজ্ঞকে বাড়িতে ডেকে মৃত্যুর শংসাপত্র লেখানো হয়। তাঁর মৃতদেহের ময়না তদন্ত করানো হয়নি। অনির্বাণের একমাত্র পুত্রকে না জানিয়ে দ্রুত মৃতদেহ সৎকার করা হয়েছে। অনির্বাণের আত্মীয় পরিজনদের সময় মতো মৃত্যুর খবর দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ। তাঁদের অনেকেরই শ্মশানে আসার আগে দেহ সৎকরার করা হয়।
ঘটনার পরেই রাজ্যের একাধিক চিকিৎসক সংগঠনের পক্ষ থেকে রাজ্য ও জেলা স্বাস্থ্য দফতর এবং রাজ্য ও জেলা প্রশাসনের কর্তাদের কাছে ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানানো হয়েছে। এ বার অনির্বাণের প্রাক্তন স্ত্রী শর্মি চট্টোপাধ্যায় অনির্বাণের মৃত্যু নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলে বহরমপুর থানায় এফআইআর করলেন। অনির্বাণের বর্তমান স্ত্রী চিকিৎসক। প্রাক্তন স্ত্রীও চিকিৎসক। তাঁদের এক পুত্রসন্তান রয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy