কৃষ্ণনগর-কাণ্ড নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে পুলিশ সুপার অমরনাথ কে। —নিজস্ব চিত্র।
কৃষ্ণনগরে তরুণীর অস্বাভাবিক মৃত্যুকে এখনই খুন বলতে রাজি নয় পুলিশ। কৃষ্ণনগর পুলিশ জেলার সুপার অমরনাথ কে জানান, তদন্ত প্রক্রিয়া শেষ না হওয়া পর্যন্ত মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত ভাবে কিছু বলা সম্ভব নয়। তবে মৃতার শরীরে ‘বার্নিং স্পট’ (পোড়া দাগ) ছিল বলেও প্রাথমিক তদন্তের পর জানিয়েছেন তিনি। অন্য দিকে, মৃতার শেষ ফেসবুক পোস্ট ঘিরেও রহস্য ঘনীভূত হচ্ছে। ওই পোস্টে লেখা, ‘‘আমার মৃত্যুর জন্য কেউ দায়ী নয়, আমি নিজেই দায়ী। তোমরা ভাল থেকো।’’
বুধবার সকালে কৃষ্ণনগরে ওই তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। স্থানীয়েরাই দেহটি রাস্তায় পড়ে থাকতে দেখে পুলিশে খবর দেন। পরিবারের অভিযোগ, দ্বাদশ শ্রেণির ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের পর খুন করা হয়েছে। আঙুল ওঠে তরুণীর প্রেমিকের দিকে। প্রাথমিক তদন্তে নেমে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। পুলিশ সুপারের দাবি, পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে ধৃত যুবককে মূল অভিযুক্ত হিসাবে ধরে প্রাথমিক ভাবে তদন্ত এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। বেশ কিছু সাক্ষ্যপ্রমাণও মিলেছে। তবে তদন্তের স্বার্থে সে সব নিয়ে এখনই কিছু জানাতে চাইছে না পুলিশ। পুলিশ সুপার অমরনাথ কে বলেন, ‘‘তরুণীর মৃত্যুর নেপথ্যে ধর্ষণ না কি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘পরিবার ইতিমধ্যে অভিযোগ জমা দিয়েছে। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত চলছে। নির্যাতিতার মায়ের অভিযোগের ভিত্তিতে উপযুক্ত ধারা যুক্ত করে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত চলাকালীন যা তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যাবে, সেগুলি তদন্তে সাক্ষ্য হিসেবে যুক্ত করা হবে।’’ কিন্তু এখনই ওই মৃত্যুকে ‘খুন’ বলতে নারাজ পুলিশ সুপার। তিনি জানান, দেহ ময়নাতদন্তে যাবে। ডগ স্কোয়াড অকুস্থলে রয়েছে। ঘটনাস্থল পরীক্ষা করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট মামলায় অনেককেই জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। অভিযুক্তের মা ও বাবাকে আটক করেও জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সবার বয়ান মিলিয়ে দেখা হচ্ছে।
কৃষ্ণনগর শহরের বেশ কিছু সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। গোটা অপরাধটি একা কেউ করেছে না কি অনেকে যুক্ত ছিলেন, সে বিষয়টিও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ। সাক্ষ্যপ্রমাণ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে পুলিশ জেলার সুপার বলেন, ‘‘ঘটনাস্থল সম্পূর্ণ ঘিরে রাখা হয়েছে। যেখানে যা সম্ভাব্য সাক্ষ্যপ্রমাণ রয়েছে সব ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে পরীক্ষা করানো হবে।’’
অন্য দিকে, মৃতার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছেন বিজেপি বিধায়ক লকেট চট্টোপাধ্যায়। মৃতার মা তাঁর কাছে কান্নায় ভেঙে পড়ে বলেন, ‘‘দিদি, মেয়ের ধর্ষণ হয়েছে। কিছু করুন।’’ লকেট জানান, সুবিচারের দাবি জানাবেন তাঁরা। পরিবারের পাশে থাকার ইচ্ছাপ্রকাশ করেছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy