বিপজ্জনক বাড়ির একাংশ চাপা পড়ে মৃত্যু হল সব্জি ব্যবসায়ীর। আহত হয়েছেন আরও তিন ব্যবসায়ী। নদিয়া জেলার রানাঘাটের ঘটনা। মৃত সব্জিবিক্রেতার নাম সত্যেন কুন্ডু (৫২)। স্থানীয়দের দাবি, ইতিমধ্যেই ভেঙে পড়া বাড়িটিকে বিপজ্জনক নির্মাণ হিসেবে চিহ্নিত করেছিল রানাঘাট পুরসভা। তার পরেও কেন কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি, তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করেছেন সাধারণ জনগণ। যদিও পুরো বিষয়টিতে দ্রুত পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়েছেন রানাঘাট পুরসভার চেয়ারম্যান।
স্থানীয় সূত্রে খবর, নদিয়ার রানাঘাট রেলবাজারের কাছে ওই ভগ্নপ্রায় বাড়িটি দীর্ঘ দিন ধরে পরিত্যক্ত। প্রতিদিন ওই বাড়িটির নীচে বাজারও বসত। শনিবারও সত্যেন-সহ অন্যান্য সব্জিবিক্রেতা বাড়িটির নীচে সব্জির পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন। সকাল সাড়ে ছ’টার কিছু পর বিল্ডিংটির একাংশ হঠাৎই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে। আর তাতেই চাপা পড়েন সত্যেন। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে রানাঘাট মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাড়ি ভেঙে অল্পবিস্তর আহতও হয়েছেন তিন জন। তাঁদের স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।
সব্জিবিক্রেতার মৃত্যুর পর পুরো বিষয়টি নিয়ে এলাকা জুড়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুর প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলে সরব হয়েছেন স্থানীয়েরা। বাড়িটিকে বিপজ্জনক বাড়ি হিসাবে চিহ্নিত করার পরেও কী ভাবে তার নীচে বাজার বসতে পারে, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন অনেকে। স্থানীয় বাসিন্দা আকাশ চট্টরাজের কথায়, ‘‘এ রকম একটি ব্যস্ততম জায়গায় বিপজ্জনক বাড়ি কী ভাবে থাকতে পারে, তা ভেবেই অবাক হচ্ছি! সবাই দেখেও দেখে না। পুর প্রশাসন উদাসীন না থাকলে এত বড় দুর্ঘটনা ঘটত না।’’
এই নিয়ে শাসকদল তৃণমূলের দিকে তোপ দেগেছেন স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্ব। রানাঘাট লোকসভা কেন্দ্রের বিজেপির প্রার্থী জগন্নাথ সরকার বলেন, ‘‘তৃণমূলের শাসনে মানুষের জীবনকে বাজি রেখে চলতে হয়। পুরসভা সঠিক সময়ে ট্যাক্স সংগ্রহ করে, কিন্তু মানুষের নিরাপত্তার কোনও ব্যবস্থা করে না। অবিলম্বে মৃত সব্জি ব্যবসায়ীকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।’’
আরও পড়ুন:
ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে গিয়েছেন রানাঘাট পুরসভার পুরপ্রধান কৌশলদেব বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে পুরসভার একটি দল পৌঁছেছে। পুরসভার ইঞ্জিনিয়ারেরা গোটা ঘটনার তদন্ত করে দেখছেন। কারও গাফিলতি থাকলে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।’’