কফিনের পাশে শোকার্ত স্ত্রী। সোমবার তেহট্টে। নিজস্ব চিত্র
সারাদিনের প্রতীক্ষা শেষ হয়েছিল রবিবার গভীর রাতে। ঘোষিত সময়ের অনেক পরে রাত প্রায় এগারোটা কুড়ি নাগাদ রঘুনাথপুর গ্রামে এসে পৌঁছেছিল পাকসেনার হাতে নিহত সেনাকর্মী সুবোধ ঘোষের মরদেহ। গ্রামের স্কুলের মাঠে গান স্যালুটের পর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয় পলাশি শ্মশানে। চোখের জলে গ্রামের ছেলেকে বিদায় জানান জনতা।
রবিবার সকাল থেকেই শুধু রঘুনাথপুর নয়, আশপাশের আরও ৯-১০টি গ্রামের মানুষ ভিড় করেছিলেন নিমতলা বিদ্যানিকেতনের মাঠে। সেখানে গান স্যালুটের আয়োজন হয়েছিল। সুবোধ ঘোষের বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে কলাবিদ্যা নির্বাচনের মাঠে হয়েছিল আরও একটি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন মঞ্চ।
রবিবার বিকেল ৪টে নাগাদ বায়ুসেনার বিশেষ বিমানে বর্ধমানের পানাগর এর অর্জন সিংহ বায়ুসেনা ঘাঁটিতে নিয়ে আসা হয় পাকসেনার গুলিতে নিহত সুবোধ ঘোষকে। সেখানে শ্রদ্ধা জানিয়ে তাঁর দেহ নিয়ে রওনা দেওয়া হয় রঘুনাথপুরের উদ্দেশে। রাতে বাড়িতে কফিনবন্দি দেহ নামতেই কান্নার রোল ওঠে। তিন মাসের কন্যাসন্তানকে ভিডিও কল ছাড়া কখনও সামনাসামনি দেখেননি সুবোধ বাবু। তাঁর দেহের কাছে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর কন্যাকে। কফিন জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তাঁর বোন, মা। এর পর দেহ নিয়ে যাওয়া হয় নিমতলা বিদ্যানিকেতনের মাঠে।
রাতের নিস্তব্ধতা ভেঙে চার দিকে তখন ‘বন্দেমাতরম’, ‘জয় ভারত মাতা’ ধ্বনি। অন্ধকারে যতদূর চোখ যায় শুধু মানুষের মাথা। উপস্থিত ছিলেন জেলাশাসক, কৃষ্ণনগর জেলা পুলিশ সুপার-সহ অনেকে। গান স্যালুটের পর কফিনে দেওয়া হয় ফুলের তোড়া। সেখানেই সুবোধের স্ত্রী অনিন্দিতা নতজানু হয়ে হাত জোড় করে প্রণাম করেন স্বামীকে। স্তব্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকেন কফিনের দিকে।
গ্রামের মানুষ দাবি করেছেন, তেহট্ট আর্শীগঞ্জ থেকে রঘুনাথপুর পর্যন্ত রাস্তা সংস্কার করে সুবোধের নামে রাখতে হবে। বাড়ির সামনে তাঁর মূর্তি বসানোর দাবিও উঠেছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy