ভাঙচুরের পরে। বৃহস্পতিবার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।
জমি বিক্রির টাকার ভাগ না দেওয়ায় ভাঙচুর হল তৃণমূল নেতার বাড়িতেই। বুধবার গভীর রাতে স্থানীয় কিছু যুবক বাড়িতে চড়াও হয়ে ভাঙচুর-মারধর করে, আগ্নেয়াস্ত্র দেখিয়ে খুনের হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার পুলিশ তিন জনকে গ্রেফতার করেছে। তারা সকলেই তৃণমূলের সক্রিয় কর্মী বলে এলাকায় পরিচিত।
বুধবার গভীর রাতে কৃষ্ণনগরের মলুয়াপাড়া এলাকায় তৃণমূলের ৭৬ নম্বর বুথ সভাপতি সৌমিত্র সাহার বাড়িতে ওই হামলা হয়। তাঁর অভিযোগ, রাত প্রায় আড়াইটে নাগাদ স্থানীয় কিছু যুবক বাড়িতে ইট-পাটকেল ছুড়তে থাকে। সৌমিত্রের দাবি, “প্রায় ৫০-৬০ জন, অনেকের হাতে রামদা ও আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। গালিগালাজ করতে করতে ওরা আমার বাড়ির ভিতর ঢুকে ভাঙচুর করে। ওরা আমায় প্রাণে মারতে চেয়েছিল। ওদের এনেকেই এলাকার পরিচিত সমাজবিরোধী।”
কেন দলের নেতার বাড়িতে এ ভাবে হামলা চালাল তৃণমূলের যুবকর্মীরা? সৌমিত্রের দাবি, “আমি দিন কয়েক আগে একটা জমি বিক্রি করেছি। ওরা বিক্রির টাকা থেকে এক লক্ষ টাকা তোলা চেয়েছিল। আমি অত টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় লোকজন নিয়ে এসে হামলা করেছে।”
রাতেই কোতোয়ালি থানার পুলিশ গিয়ে তদন্ত শুরু করে। সৌমিত্র স্থানীয় তিন যুবকের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তারা হল পিন্টু শেখ, গোটে শেখ ও নেপাল শেখ। এদের সঙ্গে আরও অনেকে ছিল বলে তাঁর অভিযোগ। পুলিশ পিন্টু ও গোটের পাশাপাশি রোহিত শেখ নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছে। তবে নেপাল শেখ পলাতক বলে পুলিশ জানিয়েছে। প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের দাবি, সৌমিত্র সাহা জমি বিক্রির দালালি হিসাবে ওই যুবকদের টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। কিন্তু জমি বিক্রির পর তিনি আর সেই টাকা দিতে রাজি হচ্ছিলেন না বলে জেরার মুখে ধৃতেরা দাবি করেছে।
এই ঘটনা সামনে আসার পর প্রত্যাশিত ভাবেই বিরোধীরা কটাক্ষ করতে শুরু করেছে। স্থানীয় কংগ্রেস পুরপ্রতিনিধি শান্তশ্রী সাহার স্বামী, প্রাক্তন পুরপ্রতিনিধি স্বপন সাহার দাবি, “আমরা সৌমিত্র সাহার কাছ থেকে জানতে পেরেছি, যারা হামলা চালিয়েছে তারা সকলেই তৃণমূলেরই লোক। এখানে নেতৃত্বের দখল নিয়ে তৃণমূলের মধ্যেই লড়াই চলছে।” তাঁর বক্তব্য, “আজ তৃণমূল নেতার বাড়িতেই হামলা চালানো হচ্ছে। তা হলে আমাদের মতো বিরোধীদের কী অবস্থা তা বোঝাই যাচ্ছে!”
বিজেপির নদিয়া উত্তর সাংগঠনিক জেলার মিডিয়া আহ্বায়ক সন্দীপ মজুমদারের দাবি, “এ সব আসলে তৃণমূলের ভিতরকার ভাগ বাটোয়ারা নিয়ে গন্ডগোল। ওরা নিজেরাই নিজেদের ধ্বংস করবে। বিরোধীদের কিছু করতে হবে না। যেখানে তৃণমূল নেতারাই দলের লোকেদের থেকে নিরাপদ নয়, সেখানে সাধারণ মানুষের কী দশা!” তৃণমূলের কৃষ্ণনগর সাংগঠনিক জেলার মুখপাত্র দেবাশিস রায় বলেন, “অত্যন্ত নিন্দনীয় ঘটনা। যার উপরেই হোক, এই ধরনের হামলা কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পুলিশ এদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ করবে। আমরা কাউকেই এই শহরকে অশান্ত করতে দেব না।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy