Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
CBI Charge Sheet

সিবিআই চার্জশিটে নাম তিন পুরসভার

রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার মতো নদিয়ার এই তিন পুরসভার ক্ষেত্রেই আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর  শেষ আপডেট: ২৭ জুলাই ২০২৪ ১০:৩৮
Share: Save:

পুর -নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় আদালতে জমা দেওয়া সিবিআই-এর চার্জশিটে নাম উঠল নদিয়ার তিনটি পুরসভার। কৃষ্ণনগর, রানাঘাট ও বীরনগর—এই তিন পুরসভাই অয়ণ শীলের সংস্থাকে ওয়েমার সিট বা উত্তরপত্র তৈরির দায়িত্ব দিয়েছিল।

রাজ্যের অন্যান্য পুরসভার মতো নদিয়ার এই তিন পুরসভার ক্ষেত্রেই আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে অযোগ্যদের চাকরি দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। সিবিআই এই তিনটি পুরসভা ও তৎকালীন পুরপ্রধানের বাড়িতে তল্লাশি চালায়। শুক্রবার সিবিআইয়ের চার্জশিটে তিনটি পুরসভারই নাম থাকায় নতুন করে জল্পনা শুরু হয়েছে। যা অস্বস্তিতে ফেলেছে শাসক দলকে। ২০১৪ সাল থেকে অয়ণ শীলের সংস্থার মাধ্যমে রাজ্যের একাধিক পুরসভায় নিয়োগ হয়েছিল। তার মধ্যে কৃষ্ণনগর পুরসভায় ২০১৭ সালে ১০১ জন ও ২০১৮ সালে ১০০ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়। ২০১৬ সালে বীরনগর পুরসভা ২৬ জনকে এবং ২০১৪, ২০১৬ ও ২০১৮ সালে তিন দফায় মোট ১৬১ জনকে নিয়োগ করে রানাঘাট পুরসভা। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় গরমিল হয়েছে দাবি করে হাঁসখালির জয়নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা ও ২০১৮ সালের পরীক্ষার্থী শান্তনু সরকার আরটিআই করে ওই পরীক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় জানতে চান। তারই উত্তর দিতে গিয়ে কৃষ্ণনগর পুর কর্তৃপক্ষ জানায়, তাদের কাছে ওই পরীক্ষার কোনও ওএমআর সিট বা উত্তরপত্র নেই। বর্তমান পুরপ্রধান রিতা দাস ওএমআর সিট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না বলে কোতোয়ালি থানায় জেনারেল ডায়েরিও করেন। তখনই নিয়োগ দুর্নীতির বিষয়টি সামনে আসে।

যদিও তৎকালীন পুরপ্রধান তৃণমূলের অসীম সাহার দাবি, “আমরা নিয়ম মেনেই নিয়োগ করেছি। কোথাও দুর্নীতি হয়নি। আদালতেই সব প্রমাণ হয়ে যাবে।’’ রানাঘাট পুরসভার ক্ষেত্রে দেখা যায় নিয়োগের পরীক্ষায় কেবলমাত্র অস্থায়ী কর্মীরাই পাশ করে চাকরি পেয়েছেন। যা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। এক্ষেত্রেও চাকরি প্রার্থীরা আরটিআই করলেও নিয়োগের পরীক্ষা সংক্রান্ত কোনও তথ্য না পেয়ে কলকাতা হাই কোর্টে মামলা করেন। রানাঘাটের তৎকালীন পুরপ্রধান পার্থসারথী চট্টোপাধ্যায় (বর্তমানে বিজেপি বিধায়ক) তখন তৃণমূলে ছিলেন। তাঁর দাবি, ‘‘অনিয়মের কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তিনবারই অত্যন্ত স্বচ্ছতার সঙ্গে নিয়োগ হয়। আদালতে সেই সত্য প্রমাণ হয়ে যাবে।” বীরনগরের তৎকালীন পুরপ্রধান ছিলেন তৃণমূলের পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “অয়ণ শীলের সংস্থা ওএমআর সিট ছাপিয়ে দিলেও ইন্টারভিউ তো আমরা নিয়েছিলাম। রীতিমত আইন মেনে ইন্টারভিউ কমিটি গঠন করে ডিপিএল-এর কাছ থেকে অনুমোদন নিয়ে তবেই নিয়োগ করা হয়েছিল। কোনও অনিয়ম বা দুর্নীতি হয়নি।”

তদন্তে নেমে সিবিআই কৃষ্ণনগর, রানাঘাট, বীরনগর ও শান্তিপুর পুরসভায় হানা দিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত সমস্ত নথিপত্র খতয়ে দেখে। পুরসভার প্রধান করণিকদের জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। কিন্তু মাঝে এর তদন্ত নিয়ে সিবিআই-কে তেমন নড়াচড়া করতে না দেখে অনেকেই তদন্তের ভবিষ্যত নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেন। এদিন আদালতে সিবিআই চার্জশিট জমা দেওয়ায় ফের জল্পনা শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE