Advertisement
১৭ ডিসেম্বর ২০২৪
Ranaghat

আদালতকে অমান্য, ওসি-র কৈফিয়ত তলব

মহিলা যখন তাঁর সম্পত্তির রক্ষায় আদালতে মামলা করছেন, উল্টো দিকে অভিযুক্ত অসীম বিশ্বাস ওই মহিলার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করে থানায়।

সুব্রত মালাকার। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত মালাকার। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
রানাঘাট শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০২৩ ০৭:১৪
Share: Save:

আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় নদিয়ার ধানতলা থানার ওসি সুব্রত মালাকারকে শো-কজ় করল রানাঘাট আদালত। আজ, শনিবার দুপুর ২টোয় সশরীরে আদালতে ওসিকে হাজির হওয়ার নির্দেশ ও লিখিত ভাবে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

ধানতলা থানার পুরাতন বাজার এলাকার বাসিন্দা শ্যামলীরানি বিশ্বাস হালদারের স্বামী প্রায় সাত মাস আগে মারা যান। তিনি নিঃসন্তান। তাঁর আইনজীবী অশোককুমার ঘোষ জানান, মহিলার সরলতার সুযোগ নিয়ে এলাকারই বাসিন্দা অসীম বিশ্বাস ওই মহিলার বাড়ি ও সম্পত্তি লিখিয়ে নেয়। সম্পর্কে অসীম মহিলার আত্মীয়। বিষয়টি নিয়ে বেশ কয়েক বার থানায় অভিযোগ জানাতে গিয়েছিলেন শ্যামলী। থানা তাঁর অভিযোগ নেয়নি বলে অভিযোগ। বাধ্য হয়ে মহিলা রানাঘাট আদালতের মামলা দায়ের করেন।

তাঁর আইনজীবী অশোককুমার ঘোষ জানান, গত ১৫ মার্চ রানাঘাট আদালতের বিচারক সিদ্ধার্থশংকর রায়চৌধুরী মামলাকারি শ্যামলীরানি বিশ্বাস হালদারকে নিজের বাড়িতে ফেরানো ও সম্পত্তি বেদখল না হওয়ার জন্য ধানতলা থানাকে নির্দেশ দেন। গত ২৩ মার্চ সেই নির্দেশ পৌঁছয় ধানতলা থানায়। গত ২৮ মার্চ মহিলাকে মারধর করে বাড়ি থেকে বার করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে অসীমের বিরুদ্ধে। গত ২৯ মার্চ বিষয়টি আবারও আদালতকে জানানো হয়। ওই দিনই বিচারক ধানতলা থানার ওসিকে আদালতে ডেকে পাঠান। ওসি নিজে না এসে অন্য এক পুলিশ আধিকারিককে আদালতে পাঠান। বিচারক জানতে চান, আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল তা পালনে পুলিশের ভূমিকা কী? এমনকি ওই দিন এক ঘণ্টার মধ্যে মহিলাকে বাড়িতে ফেরানোর জন্য ব্যবস্থা নিতে বলেন বিচারক। পুলিশ কী ব্যবস্থা নিচ্ছে, তা-ও ওই দিন আদালতকে জানাতে হবে বলেও জানিয়েছিলেন বিচারক। অথচ বিকেল ৫টা পর্যন্ত পুলিশের পক্ষ থেকে আদালতকে কিছু জানানো হয়নি। তার পরেই ধানতলা থানার ওসি সুব্রত মালাকারকে শো-কজ় করেন বিচারক। অর্ডারে লেখা হয়েছে- ‘এই পরিস্থিতিতে আদালত অন্ধ ধৃতরাষ্ট্রের ভূমিকা নিতে পারে না’।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মহিলা যখন তাঁর সম্পত্তির রক্ষায় আদালতে মামলা করছেন, উল্টো দিকে অভিযুক্ত অসীম বিশ্বাস ওই মহিলার বিরুদ্ধে তার স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগ দায়ের করে থানায়। যদিও সেই মামলায় মহিলার আগাম জামিন মঞ্জুর করেছে আদালত।

শ্যামলীরানি বিশ্বাস হালদার বলেন, ‘‘পুলিশ অভিযোগ না নেওয়ায় বাধ্য হয়েছি আদালতের দ্বারস্থ হতে। বিচার ব্যবস্থার প্রতি আমার আস্থা রয়েছে।’’ তাঁর আইনজীবী অশোককুমার ঘোষ বলেন, ‘‘আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও পুলিশের ব্যবস্থা না নেওয়াটা খুবই দুঃখজনক। নিশ্চিত ভাবেই আদালতের এমন পদক্ষেপ অন্যতম উদাহরণ হয়ে থাকবে।’’

ধানতলা থানার ওসি সুব্রত মালাকার বলেন, ‘‘আদালতের একটি চিঠি পেয়েছি। উত্তর দেওয়া হবে।’’ আর রানাঘাট পুলিশ জেলা সুপার কে কন্নন বলেন, ‘‘বিষয়টি বিচারাধীন। আদালত যা নির্দেশ দেবে, সেই মতো সব কিছু হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Ranaghat Officer In Charge
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy