—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
ভরা হেমন্তেও শীতকালীন আনাজে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল। দামও নাগালের মধ্যেই ছিল। কিন্তু শীত পড়তেই ফের আনাজের দাম বেড়ে যাওয়ায় বিপাকে পড়তে হয়েছে সাধারণ মানুষকে। আনাজ চাষিদের কথায় ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে দু’দিনের নিম্নচাপের জেড়ে শীতকালীন আনাজপাতির গাছ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে চাষিদেরও। চাহিদা অনুযায়ী আনাজপাতি কম থাকার কারণে কপালে ভাঁজ পড়েছে সাধারণ মানুষের। জেলার উদ্যান ও পালন দফতরের অধিকর্তা প্রভাস মণ্ডল বলেন, ‘‘ধীরে ধীরে শীতকালীন আনাজপাতিতে বাজার ছেয়ে গিয়েছিল। সেই সময় আচমকা নিম্নচাপ হয়ে যাওয়ায় কারণে শীতকালীন আনাজের গাছ নষ্ট হয়ে গিয়ে আনাজের চাহিদা অনুযায়ী জোগান কমে গিয়েছে। ফের নতুন করে শীতকালীন আনাজের গাছ রোপণ করে বাজারে আসতে অনেকটা সময় লেগে যাবে।’’
শীতের সময় মানেই সকালের আনাজের বাজার গিয়ে থলে ভরে আনাজ কিনে বাড়ি ফিরতেই দস্তুর বাঙালি। কিন্তু ডিসেম্বর মাসের মাঝামাঝি বাজারে আনাজের দামে কপালে ভাঁজ পড়েছে সাধারণ মানুষের কপালে। নিয়মিত ভাবেই বেড়ে চলেছে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র থেকে আনাজপাতির দাম। কার্যত আকাশ ছোঁয়া হয়ে যাচ্ছে। ফলে খাদ্য প্রেমী বাঙালি কিছুটা হলেও বিপাকে পড়েছেন। আনাজপাতি বাজারে গিয়ে শীতকালীন আনাজপাতি সমস্ত কিছু পাওয়া যাচ্ছে এমনটাও নয়। বাজারে খুব সামান্য পরিমাণে আনাজপাতির দেখা মিলছে। এমন সময় বাজারে সমস্ত ধরণের আনাজপাতির দেখা পাওয়া যায় বলেও দাবি সাধারণ মানুষের। শীতকালীন আনাজ ফুলকফি, বাঁধাকফি, গাজর, বিটও পাওয়া যাচ্ছে। কিন্তু দাম অনেক বেশি।
বাজারে শীতকালীন আনাজপাতি মাঝেমধ্যে দেখা মিললেও দামও বেশ চড়া। বাঁধাকপি ৩০ টাকা ছোট মাপের, ফুলকপি একটি ৩০ টাকা, মিষ্টি কুমড়ো ২৫ টাকা কেজি, সিম ৫০ টাকা কেজি, গাজর ৪০ টাকা কেজি, মটরশুঁটি ৬০ টাকা কেজি, বিট ৪০ টাকা কেজি, বেগুন ৪০ টাকা কেজি, পেঁয়াজ ৫০ টাকা কেজি, আর কাঁচালঙ্কা ৮০ টাকা কেজি। একই সঙ্গে রকমারি শাকের দামও বেড়েছে। পার্থ পাল বলেন, ‘‘শীতের সময় মানেই শীতকালীন আনাজপাতির রকমারি পদের ব্যবস্থা থাকে। কিন্তু এ বার শীতকালীন আনাজের যা দাম তাতে সেই স্বাদ পূরণ হবে বলে মনে হচ্ছে না।’’
আনাজের খুচরো ব্যবসায়ী ভোলা দাস, অমৃত বাগদিরা বলেন, “ক্রেতাদের আনাজ কেনার চাহিদা আছে। কিন্তু আমরা পাইকারি বাজারে পর্যাপ্ত পরিমাণে আনাজপাতি পাচ্ছি না।” কান্দি মহকুমা পাইকারি বাজারের উপর নির্ভর করে কান্দি মহকুমার পাঁচটি ব্লক ছাড়াও বীরভূম জেলার একাংশ। কিন্তু তাতে দৈনিক প্রায় ৩০ থেকে ৩৫ ট্রাক আনাজের প্রয়োজন আছে। সেখানে বর্তমানে কান্দি পাইকারি বাজারে ২০টি ট্রাকে আনাজ আসছে না। কান্দি মহকুমা ফল ও আনাজ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক স্মরজিত সাহা বলেন, ‘‘প্রয়োজনের তুলনায় কম রফতানি হচ্ছে আনাজপাতি। নিম্নচাপের কারণে এক সঙ্গে সমস্ত জায়গাতেই আনাজের গাছ নষ্ট হয়েছে। বেশ কিছু দিন সময় লেগে যাবে।’’ প্রভাস বলেন, ‘‘নিম্নচাপের পর নতুন করে আনাজপাতির চারা রোপণ করেছে চাষিরা। দু’সপ্তাহের মধ্যে ফের নাগালের মধ্যে চলে আসবে আনাজের দাম।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy