Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Kanyasree

বিয়ে হওয়ায় রূপশ্রী, কন্যাশ্রীর টাকা থেকে বঞ্চিত বহু নাবালিকা

নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হওয়ার পরে পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও ওই ছাত্রী কন্যাশ্রী ২ প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা থেকেও বঞ্চিত হবে। 

—ছবি সংগৃহীত

—ছবি সংগৃহীত

মফিদুল ইসলাম
হরিহরপাড়া শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২০ ০৮:৫৭
Share: Save:

নাবালিকার বিয়ে রদ করতে প্রশাসনের হাতিয়ার কন্যাশ্রী ও রূপশ্রী প্রকল্প। এই দুই প্রকল্পের কথা বলেই অভিভাবকদের সচেতন করতে দেখা যাচ্ছে প্রশাসনের কর্তাদের। তবুও এখনও অসচেতন ভাবেই চুপিসাড়ে নাবালিকার বিয়ের বন্দোবস্ত করছে পরিবারের লোকজন। নাবালিকার বিয়ে দিয়ে অপরাধ করার পাশাপাশি তাঁরা বঞ্চিত হচ্ছেন সরকারি প্রকল্পের টাকা থেকেও।

বাল্যবিবাহ রদ, মেয়েদের স্কুল ছুটের প্রবণতা কমাতে কন্যাশ্রী প্রকল্প চালু করেছে রাজ্য সরকার। ক্লাস এইট ও তেরো বছর বয়স হলেই 'কন্যাশ্রী কে ১' প্রকল্পে মেলে বার্ষিক এক হাজার টাকা এবং ১৮ বছর বয়স হলে এবং পড়াশোনা চালিয়ে গেলেই 'কন্যাশ্রী কে ২’ প্রকল্পে মেলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা। তা ছাড়া বাল্যবিবাহ রদ করতে ‘রূপশ্রী’ প্রকল্পও চালু করেছে রাজ্য সরকার। ১৮ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পর বিয়ে করলে রূপশ্রী প্রকল্পে মেলে এককালীন ২৫ হাজার টাকা। ফলে কোনও মেয়ে সাবালিকা হলে এবং তার সাথে পড়াশোনা চালিয়ে গেলে রূপশ্রী ও কন্যাশ্রী এই দুই প্রকল্প মিলিয়ে এককালীল ৫০ হাজার টাকা পাওয়ার সুযোগ থাকছে। তবে জ্ঞাতসারে বা অজ্ঞাতসারে ১৮ বছরের নিচে বিয়ের বন্দোবস্ত করলেই হাত ছাড়া হচ্ছে দুই প্রকল্পের ৫০ হাজার টাকা।

প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে নাবালিকা অবস্থায় বিয়ে হওয়ার পরে পড়াশোনা চালিয়ে গেলেও ওই ছাত্রী কন্যাশ্রী ২ প্রকল্পের ২৫ হাজার টাকা থেকেও বঞ্চিত হবে।

বাল্যবিবাহ রদ করতে গিয়ে প্রশাসনের লোকেদের হামেসাই শুনতে হয় দারিদ্র্যতার কারণেই বিয়ের বন্দোবস্ত করা হয়েছে। কিন্তু সাবালিকা না হলে যে সরকারের দুই প্রকল্প থেকে বঞ্চিত হতে পারেন তা নিয়ে ভ্রুক্ষেপহীন অনেকেই।

তাছাড়া বিয়ের পর রূপশ্রী প্রকল্পের কথা জানতে পেরে অসৎ উপায়ে সেই টাকা পাওয়ার জন্যও অনেকেই আবেদন করেন। জানা গিয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সেই সমস্ত আবেদনপত্র বাতিল হয়েছে। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে চলতি বছরে চলতি মাসের ১৭ তারিখ পর্যন্ত জেলায় ১৯০২ রুপশ্রী প্রকল্পের আবেদন বাতিল হয়েছে। জানা গিয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পরিবারের লোকেরা ১৮ বছরের নীচে বিয়ে দিয়েছেন এবং ১৮ বছর পূর্ণ হতেই ভুয়ো বিয়ের কার্ড ছাপিয়ে জমা দিয়েছেন। হরিহরপাড়া ব্লকের সমাজ কল্যাণ আধিকারিক শ্যামসুন্দর মণ্ডল বলছেন, ‘‘অনেকেই ছলচাতুরি করে রূপশ্রী প্রকল্পের জন্য আবেদন করেন। আমরা তাদের আবেদন পত্রে লেখা বিয়ের তারিখ দেখে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে সেই প্রমাণ পাই। এবছর হরিহরপাড়া ব্লকে এই ধরনের ৪৮টি আবেদন বাতিল হয়েছে।’’ তা ছাড়া কাটমানি নেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। হরিহরপাড়া ব্লকের এক কর্মী বলেন, ‘‘আবেদন যাচাই করতে গিয়ে বিয়ের তারিখে এক আবেদনকারীর বাড়িতে গিয়ে জানতে পারি প্রায় তিন বছর আগে তার বিয়ে হয়েছে। এমনকি দেড় বছরের বাচ্চা হাঁটতেও শিখে গিয়েছে। এরপর আবেদনটাকে আমরা বাতিল করি।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kanyasree Girls early marriage
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy