জেএনএম হাসপাতাল। —নিজস্ব চিত্র।
আর জি করে ধর্ষিতা, নিহত চিকিৎসকের সুবিচার এবং হাসপাতালে নিরাপত্তার দাবিতে জরুরি পরিষেবা দেওয়া বন্ধ করে দিলেন ‘কলেজ অফ মেডিসিন অ্যান্ড জেএনএম হসপিটাল’-এর জুনিয়র চিকিৎসকরা।
আর জি কর নিয়ে প্রতিবাদে এতদিন জুনিয়র চিকিৎসকরা বহিবির্ভাগের পরিষেবা বন্ধ রাখলেও জরুরি ও অন্তর্বিভাদের পরিষেবা চালু রেখেছিলেন। কিন্তু মঙ্গলবার থেকে তাও বন্ধ করে দিলেন তাঁরা। হাসপাতালের জুনিয়র ডাক্তাররা পরিষ্কার জানিয়েছেন, তাঁদের দাবি না মেটা পর্যন্ত কোনও ভাবেই সাধারণ ও জরুরি পরিষেবা দিতে পারবেন না তাঁরা। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের অভিযোগ, ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স কর্তৃপক্ষ তাঁদের নিরাপত্তার কোনও দায়িত্বই নিচ্ছেন না। ফলে তাঁরা বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
দীর্ঘ দিন ধরে হাসপাতাল চত্বরে নিরাপত্তার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক সিসি ক্যামেরা বসানো। পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ। জেএনএম হাসপাতালের পিজিটি, হাউস স্টাফ ও ইন্টার্নদের অন্যান্য কলেজের সমান স্টাইপেন্ড দেওয়া। তাঁদের জন্য অনকল রুম, শৌচাগার, পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা। হস্টেল ও হাসপাতাল চত্বরে পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা-সহ চিকিৎসক ও পড়ুয়াদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দাবি জানিয়ে আসছেন জুনিয়র চিকিৎসকেরা। মঙ্গলবার তাঁদের একাংশ অধ্যক্ষের ঘরে ঢুকে এই সমস্ত দাবি দ্রুত পূরণের দাবিতে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, অধ্যক্ষ বিক্ষোভকারীদের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে নিরাপত্তা নিয়ে তাঁর চিঠির বিষয়ে ফাইল দেখান। কিন্তু জুনিয়র চিকিৎসকরা কোনও কথাই মানতে রাজি ছিলেন না। তখন অধ্যক্ষ ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ইউনিভার্সিটি অব হেলথ সায়েন্স’-এর সহ উপাচার্য দেবাশিস বসুকে ফোন করে ছাত্রদের দাবিগুলি জানান। কিন্তু দেবাশিস বসুর তরফে কোনও সদর্থক সাড়া মেলেনি বলে কর্তৃপক্ষের দাবি। এর পরেও জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিমত অধ্যক্ষ ফোন করে কলেজে এসে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে কথা বলতে অনুরোধ করেন সহ উপাচার্যকে। কিন্তু সেই একই প্রতিক্রিয়া মেলে বলে অভিযোগ। ঘটনাস্থলে উপস্থিত আন্দোলনকারীরা জানান, সহ উপাচার্য অধ্যক্ষকে পরিষ্কার জানান, তিনি যদি আন্দোলনকারীদের সামাল দিতে না পারেন তাহলে যেন পদত্যাগ করেন।
এই ঘটনায় আন্দোলনরত চিকিৎসকরা আরও ক্ষেপে যান। তাঁরা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে দেন, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা সুনিশ্চিত না হওয়া ও আর জি করে চিকিৎসক খুনের সুবিচার না হওয়া পর্যন্ত সাধারণ ও জরুরি পরিষেবা তাঁরা দেবেন না।
এই অবস্থায় হাসপাতালের চিকিৎসা পরিষেবা জোর ধাক্কা খাবে বলে আশঙ্কা করছেন সকলেই। জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে আলিম বিশ্বাস বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উপর আমাদের আস্থা চলে গিয়েছে। জানি এতে রোগীদের সমস্যা হবে। কিন্তু আমরা নিরুপায়। আমরা চাই না, আমাদের কলেজে আর জি করের মতো ঘটনা হোক।” তিনি বলেন, ‘‘আমাদের অধ্যক্ষের সঙ্গে যে ধরনের ব্যবহার করা হল সেটা মেনে নেওয়া যায় না।”
অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় বলেন, “ডাক্তাররা নিরাপত্তা চাইছেন। কিন্তু সহ উপাচার্য তাতে গুরুত্ব না দিয়ে আমাকেই পদত্যাগ করতে বললেন। আমি জুনিয়র ডাক্তারদের বোঝানোর চেষ্টা করেছি। কিন্তু ওঁরা কোনও কথাই শুনতে রাজি নন। এমন চলতে থাকলে রোগীদের চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়বে।” সহ উপাচার্য দেবাশিস বসুকে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy