কালীগঞ্জের একটি স্কুলে। নিজস্ব চিত্র
এলাকার স্কুলগুলিতে জোরকদমে প্রস্ততি নেওয়ার কথা বলা ছিল। সেই মতো সকাল থেকে শিক্ষক-শিক্ষিকারা মিড-ডে মিলের ঘরে নজর রাখেন। শনিবার জেলায় মিড-ডে মিলের পরিদর্শন হতে পারে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার জেরেই এই সাজ-সাজ বর। কিন্তু শনিবার কোনও স্কুলেই মিড-ডে মিলের পরিদর্শনে গেলেন না কেন্দ্রীয় দলের প্রতিনিধিরা।
এলাকার স্থানীয় বেশ কিছু স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, মিড-ডে মিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল। তার জেরেই স্থানীয় প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে স্কুলে-স্কুলে তৈরি থাকার নির্দেশিকা পৌঁছে গিয়েছে। অনেক স্কুলেই সব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। খাওয়ার ঘর, রান্নাঘরের পরিকাঠামোয় বদল এসেছে। আবার, আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সব স্কুলে বিশেষ প্রয়োজন ছাড়া ছুটি নিতেও বারণ করা হয়েছে। রাঁধুনি-সহায়িকারা অ্যাপ্রন, গ্লাভস-টুপি পরে কাজ সারছেন।
আবার, গত কয়েক দিনের মধ্যে ব্লক ও জেলার আধিকারিকেরা বিভিন্ন স্কুলে আচমকা হানা দেন মিড-ডে মিলের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার জন্য। শনিবারও ব্লক প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেবগ্রাম ও পলাশির বিভিন্ন স্কুলে ঘুরে দেখেন তাঁরা। স্থানীয়েরা অনেকেই জানাচ্ছেন, এমন ঘটনা আগে কখনও চোখে পড়েনি। তাঁদের প্রশ্ন, সারা বছর কেন এই ভাবে মিড-ডে মিল নিয়ে তৎপরতা চোখে পড়ে না? আর কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক দল চলে গেলেও কি এই একই আয়োজন থাকবে?
শনিবার দুপুরে কালীগঞ্জের এক উচ্চ বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেল, মুখে মাস্ক, মাথায় টুপি, হাতে গ্লাভস, গায়ে অ্যাপ্রন পরে মিড-ডে মিল রান্না করছেন এবং খেতে দিচ্ছেন কর্মীরা। তাঁদের জিগ্যেস করা গেল— সারা বছরই কি এই ভাবেই কাজ করেন? তাতে এক কর্মীর জবাব, ‘‘অ্যাপ্রন থাকে। তবে এত সব কিছু থাকে না।’’
তবে কি কেন্দ্রীয় দল আসছে বলেই এত তৎপরতা? তাঁর জবাব— ‘‘অত জানি না। ওঁরা এ সব পরতে বলেছেন, তাই পরছি।’’
স্কুলে দেখা গেল, ছাত্রেরা উঁচু সিমেন্টের বেদির উপরে পাতা রেখে মাটিতে বসে খাচ্ছে। সুন্দর ও পরিস্কার ভাবে পরিবেশনও করা চলছে। এই প্রসঙ্গে অভিভাবক সন্তোষ দে বলেন, ‘‘এর আগে কখনও এমন দেখিনি। ছেলেকে নিতে স্কুলে প্রায়ই আসি। তবে এত সুন্দর, পরিষ্কার ভাবে মিড-ডে মিলের কাজ আগে দেখেনি।’’
তবে একাধিক স্কুল কর্তৃপক্ষের দাবি, আলাদা করে কিছুই দরকার পড়েনি। নির্দিষ্ট নিয়ম মেনেই খাবার দেওয়া হয়। রোজ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ভাবেই খাবার দেওয়া হয় পড়ুয়াদের।
যেমন, লাখুরিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সুবীর পাত্র বলেন, ‘‘আমাদের স্কুলে স্বাস্থ্যকর ভাবেই মিড-ডে মিল দেওয়া হয়। শিক্ষকেরা নিয়মিত নজরও রাখে। কেন্দ্রীয় দল পরিদর্শনে আসছে বলে কিছু পরিবর্তন করতে হয়নি।’’ কালীগঞ্জের বিডিও উৎপল দাস মুহুরী বলেন, ‘‘এলাকার সব স্কুলেই নিয়ম মেনে মিড-ডে মিল দেওয়া হয়। ব্লক প্রসাসনের পক্ষ থেকে রুটিন পরিদর্শনও করা হয়।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy