বাবুলাল বিশ্বাসের বাড়িতে সেলিম। ছবি: সুদীপ ভট্টাচার্য
শেষমেশ বাবুলাল-খুনে প্রধান অভিযুক্ত সঞ্জিত ঘোষকে পাকড়াও করল পুলিশ। যদিও এই খুন আদৌ রাজনৈতিক কি না, সোমবার রাত পর্যন্ত তা স্পষ্ট হয়নি।
সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতা মহম্মদ সেলিম অবশ্য দলের সুর বজায় রেখে পুলিশের সদিচ্ছা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। পুলিশ কেন বাবুলালের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেয়নি, তাঁর বাড়িতে গিয়ে সেলিম এ দিন সেই প্রশ্ন তোলেন। শুধু তা-ই নয়, তাহেরপুর থানার এক সাব-ইনস্পেক্টরের নাম করে তিনি কার্যত হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন। দলের রাজ্য কমিটির নেতা অমিয় পাত্রও এ দিন তাঁর সঙ্গে ছিলেন।
গত ৭ সেপ্টেম্বর রাতে বাদকুল্লার রাস্তায় গুলি করে খুন করা হয়েছিল সিপিএম কর্মী বাবুলাল বিশ্বাসকে। পরের দিনই এলাকার বাসিন্দা সঞ্জিত ঘোষ ও তাঁর দুই ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে তাঁর পরিবার। তৃণমূলই এই খুনের পিছনে রয়েছে বলে অভিযোগ ছিল সিপিএম। যদিও বাবুলাল আদৌ তত বড় মাপের নেতা নন, সামনে কোনও ভোটও নেই, তা সত্ত্বেও তাঁকে নিশানা করা হবে কেন তা পুলিশের কাছে স্পষ্ট নয়।
পুলিশের দাবি, রবিবার রাতে সঞ্জিত ঘোষকে হাওড়ার সাঁতরাগাছি থেকে গ্রেফতার করা হয়। এ দিন রানাঘাট আদালতে হাজির করানো হলে বিচারক তাকে আট দিন পুলিশ হেফাজতের রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। তবে খুনের ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র এখনও উদ্ধার হয়নি। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, বাবুলালের এক ঘনিষ্ঠ সঞ্জিত ও তাঁর ছেলেকে মারধর করেছিলেন। তাঁদের উপরে সঞ্জিতের রাগ ছিল। কিন্তু সে ক্ষেত্রে, বাবুলালের চেয়ে তাঁর ঘনিষ্ঠের প্রতিই সঞ্জিতের আক্রোশ বেশি থাকার কথা। ফলে শুধু এই কারণেই খুন, তেমনটা পুলিশের মনে হচ্ছে না। রানাঘাট পুলিশ জেলার সুপার ভিএসআর অনন্তনাগ বলেন, ‘‘ধৃতকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য জানার চেষ্টা হচ্ছে।’’
এ দিন বাগদিপাড়ার বাড়িতে সেলিমের পা জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন বাবুলালের স্ত্রী, সিপিএমের পঞ্চায়েত সদস্য মৌসুমী বিশ্বাস। নেতারা আশ্বাস দেন, দোষীরা যাতে ছাড়া না পায়, তা দেখা হবে। তাঁদের এক বছরের ছেলেকে কোলে নিয়ে আদরও করেন সেলিম। দলের তরফে পরিবারের হাতে কিছু টাকা তুলে দেওয়া হয়। আজ, মঙ্গলবার জেলা জুড়ে অর্থ সংগ্রহে নামা হবে বলেও সিপিএম সূত্রে জানানো হয়েছে।
সেলিমের কাছে বাবুলালের ভাই দেবাশিস অভিযোগ করেন, ‘‘পুলিশই অপরাধীদের বাড়ি পাহারা দিচ্ছে।’’ তাঁর দাবি, ‘‘মৃত্যুর আগে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়ে দাদা সঞ্জিতের নাম করেছিল।" পুলিশ কেন নিহতের মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেয়নি সেই প্রশ্ন তুলে পরে ধানহাটের জনসভায় সেলিম বলেন, ‘‘কে এক জন ঠাকুর আছে এখানকার থানায়, আমার নাম নিতেও লজ্জা করে! মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেয়নি। কী ভাবছেন, পার পেয়ে যাবেন!’’ রাতে রানাঘাট জেলা পুলিশ সুপার অবশ্য পাল্টা বলেন, ‘‘মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেওয়া পুলিশের কাজ নয়, চিকিৎসকের কাজ। তবে ওঁরা চাইলে পুলিশের কোনও অফিসারের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করতে পারেন। তদন্ত হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy