মতুয়াদের প্রতিবাদ মিছিল। — নিজস্ব চিত্র।
নদিয়ার ভোটের ফলাফলে বরাবরই মতুয়ারা অন্যতম নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেন। তাই মুখ্যমন্ত্রীর সাম্প্রতিক একটি উচ্চারণ প্রমাদকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া বিতর্ককে পঞ্চায়েত ভোটের আগে মতুয়া ভোট নিজেদের পক্ষে টানার অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করার ব্যাপারে সচেষ্ট বিজেপি।
শুক্রবার এই ব্যাপারে নদিয়া-সহ একাধিক জেলায় বিছিন্ন ভাবে কিছু অবরোধ-বিক্ষোভ হয়েছিল। শনিবার দুপুরের পর থেকে নদিয়ায় দফায় দফায় রেল-সড়ক অবরোধ, থানা ঘেরাওয়ের মতো কর্মসূচি নিয়েছে বিজেপি। আপাতত এই কর্মসূচি চলবে, এমন ইঙ্গিতও দিয়েছে তারা।
কিছু দিন আগে মালদহের গাজলের জনসভায় মমতার মতুয়া-সংক্রান্ত একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্কের সূত্রপাত। তৃণমূলের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, একেবারেই অনিচ্ছাকৃত ভাবে, ভুলবশত এই কথা বলে ফেলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু বিরোধী বিজেপি তাতেও সেই মন্তব্যকে ধরে ভোটের রাজনীতির পথে হাঁটা শুরু করেছে। তৃণমূলকে চাপে রাখতে নদিয়ায় তাদের প্রতিবাদ কর্মসূচি একটু বেশিই দেখা যাচ্ছে, যেহেতু এখানে মতুয়া ভোট বড় ‘ফ্যাক্টর’।
শুক্রবার শিমুরালি ও গাংনাপুরে মতুয়াদের একাংশের বিক্ষোভ হয়েছিল। শনিবার বিকেল থেকে ফের শুরু হয় বিজেপিপন্থী মতুয়া সংগঠনের বিক্ষোভ-অবরোধ। বিকেল সাড়ে চারটে থেকে প্রায় এক ঘণ্টা ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়ক অবরোধ করা হয়। তার পর তাঁরা মিছিল করে চাকদহ রেলগেটে এসে অবরোধ শুরু করে। রেল লাইনের উপর শুয়ে পড়েন কিছু লোক। বাকিরা ডঙ্কা বাজিয়ে, হাতে ঝান্ডা নিয়ে চিৎকার করে প্রতিবাদ জানাতে থাকেন। সেই অবরোধ চলে সন্ধ্যা ছ’টা থেকে প্রায় সাড়ে ছ’টা পর্যন্ত।
জাতীয় সড়ক দীর্ঘ ক্ষণ বন্ধ থাকায় প্রচণ্ড যানজট তৈরি হয়। রাজ্যের মন্ত্রী শশী পাঁজার গাড়ি সেখানে আটকে যায়। তিনি গাড়ি ঘুরিয়ে রানাঘাটের দিকে চলে যান। সেখান অবরোধকারীরা মিছিল করে চাকদহ থানার সামনে চলে আসেন এবং বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। সেটাও প্রায় ৪০ মিনিট চলে।
বিষয়টি নিয়ে নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলা বিজেপির সহ-সভাপতি স্বপন দাম বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী ইচ্ছাকৃত ভাবেই ওই মন্তব্য করেছেন। মতুয়াদের ভাবাবেগে আঘাত করেছেন। তিনি যদি ক্ষমা না চান, আগামী দিনে আমরা বৃহত্তর আন্দোলনের নামব।’’ আবার বিজেপিপন্থী নদিয়া দক্ষিণ সাংগঠনিক জেলার মতুয়া মহাসঙ্ঘের সভাপতি তথা রানাঘাট দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মুকুটমণি অধিকারী বলেন, ‘‘মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের উপর ভর করেই তৃণমূল এ রাজ্যের ক্ষমতা এসেছে। মতুয়াদের জন্য যে প্রতিশ্রুতি মুখ্যমন্ত্রী দিয়েছিলেন, তা পালন করতে পারেননি। তার পরেও তিনি এ ধরনের মন্তব্য করেছেন। নিশ্চিত ভাবেই পঞ্চায়েত নির্বাচনে তার প্রভাব পড়বে।’’ পাল্টা নদিয়া জেলা তৃণমূলের মুখপাত্র বাণীকুমার রায় বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মতুয়া ভাবাবেগ নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। হরিচাঁদ, গুরুচাঁদ ঠাকুরের নামে বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ, স্কুল, সরকারি ছুটি ঘোষণা সবকিছুই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের হাত দিয়ে হয়েছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী মতুয়াদের নিয়ে যে সব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন, তার একটিও পূরণ করতে পারেননি। সুতরাং মুখ্যমন্ত্রী মতুয়াদের অসম্মান করেছেন- এই অপপ্রচার ঠিক নয়।’’
নিজস্ব চিত্র
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy