দ্বারকা নদীর উপর রনগ্রামে নতুন সেতুর উদ্বোধন আজ। ছবি গৌতম প্রামাণিক।
অবশেষে জনসাধারণের জন্য খুলে দেওয়া হল দ্বারকা নদের উপর রণগ্রাম সেতু। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে ভার্চুয়ালি এই সেতুর উদ্বোধন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেতু সংলগ্ন এলাকায় মঞ্চ করে ওই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান করা হয়েছে। সেখানে জেলা প্রশাসনের কর্তাদের পাশাপাশি হাজির ছিলেন পূর্ত দফতরের কর্তারা। ছিলেন মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ, কান্দির বিধায়ক অপূর্ব সরকার, কান্দি পুরসভার পুরপ্রধান জয়দেব ঘটক ও অন্যরা। সেতুটি উদ্বোধনের পর বিধায়ক অপূর্ব বলেন, “রাজ্যে অনেকেই সরকারে ছিল। কিন্তু রণগ্রাম সেতু নিয়ে কোনও সরকারই ভাবেনি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রী রণগ্রামে দ্বারকা নদের উপর বহু পুরনো ও দুর্বল সেতুর কথা জানার পরেই এই সেতুর নির্মাণের ব্যবস্থা করেন। এ দিন সেতুর উদ্বোধন হল।”
জানা গিয়েছে, প্রায় ৯৫ বছর আগে ব্রিটিশ শাসনকালে ৯০ মিটার লম্বা একমুখী ওই সেতুটি তৈরি হয়েছিল। পরে সেতুর দেখাশোনা করার দায়িত্ব পায় পূর্ত দফতর। সেতুটি দুর্বল হওয়ায় ২০১৭ সাল থেকে ওই সেতুর উপর দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। যানবাহন বন্ধ হওয়ার পরে যাত্রী বোঝাই বাস যাতায়াতও বন্ধ করা হয়। অথচ সেতুটি কান্দি ও বহরমপুর দু’টি শহরের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগের অন্যতম সেতু ছিল। এ ছাড়াও বীরভূম, বর্ধমান জেলার বাসিন্দারাও বহরমপুরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে কান্দির উপর দিয়েই রণগ্রাম সেতু হয়ে যাতায়াত করতেন। এ দিকে দু’বছর পর পুরনো সেতুর পাশে ১১০ মিটার লম্বা দ্বিমুখী সেতু তৈরির কাজ শুরু হয়। কিন্তু অভিযোগ, ওই সেতুটির নির্মাণ কাজ প্রথম দিকে সরকারি ভাবে অনুমোদন না হওয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে একাধিক রাজনৈতিক দলের পাশাপাশি এলাকায় ব্যবসায়ীরা সেতুটি নির্মাণের দাবি জানায়। ওই সেতুটি নির্মাণের দাবিতে কংগ্রেসের পক্ষে থেকে সেতুর পাশে সই সংগ্রহ করা হয়। বহরমপুরের সাংসদ অধীর চৌধুরী বহরমপুর থেকে কান্দি পর্যন্ত পদযাত্রাও করেন। বামফ্রন্ট ও বিজেপি ওই সেতু নির্মাণের দাবিতে আন্দোলন করে। শেষপর্যন্ত অবশ্য সরকারি অনুমোদন নিয়েই সেতুর কাজ শুরু হয়। কিন্তু মাঝে করোনাকালে লকডাউনের জেরে সেতু তৈরির কাজ থমকে ছিল। করোনা পর্ব মেটার পর ফের কাজ হয়। অবশেষে সাড়ে পাঁচ বছর পর এ দিন দ্বারকা নদের উপর একটি নতুন সেতু পেলেন এলাকার বাসিন্দারা। এ দিন সেতুর ভার্চুয়ালি উদ্বোধনের পর নবান্ন থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য রাজ্য সরকার সব সময় চেষ্টা করছে।”
এ দিকে এ দিন কান্দি মহকুমা হাসপাতালে ১৮ শয্যার একটি এইচডিইউ ইউনিট চালু হয়েছে। বিধায়ক অপূর্ব সরকার বলেন, “এলাকার মানুষের কাছে আজকের দিনটি খুব আনন্দের দিন। কান্দি হাসপাতালে যেমন এইচডিইউ ইউনিটের শয্যার সংখ্যা বেড়েছে তেমনি রণগ্রামে নতুন সেতু পেলাম আমরা। আমি এলাকার বাসিন্দাদের পক্ষ থেকে আমাদের মুখ্যমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy