নশিপুর রেল সেতুর নির্মাণ কাজ ফের শুরু। আজিমগঞ্জে। ছবি: গৌতম প্রামাণিক
সব বাধা কাটিয়ে নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেল সেতুর নির্মাণকাজ শুরু হল বুধবার। এর জেরে খুশির হাওয়া মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে।
লালুপ্রসাদ যাদব রেলমন্ত্রী থাকাকালীন ২০০৪ সালের ডিসেম্বর মাসে নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতুর আনুষ্ঠানিক শিলান্যাস করেন। সেই সময় এই সেতু নির্মাণের জন্য রেলমন্ত্রক থেকে ৪৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। ২০১০ সালে সেটি চালু হওয়ারও কথা ছিল। কিন্তু জমি নিয়ে জটিলতায় এক যুগ ধরে সেতু নির্মাণের কাজ থমকে ছিল। এরই মধ্যে চলতি বছরের অগস্ট মাসের ২০ তারিখে রেল সেতুর অসমাপ্ত কাজ পরিদর্শন করেন বহরমপুরের সাংসদ তথা লোকসভায় কংগ্রেসের দলনেতা অধীর চৌধুরী ও পূর্ব রেলের চিফ ইঞ্জিনিয়ার-২ (কনস্ট্রাকশন) অরুণ কুমার। ওইদিন আজিমগঞ্জের দিয়ার মাহিনগর এলাকা পরিদর্শন করেন তাঁরা। জমিদাতাদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনাও হয়েছিল তাঁদের। জমিদাতাদের মধ্যে কয়েক জন চাকরির দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেও রেলসেতু নির্মাণের ক্ষেত্রে তাঁরা বাধা হয়ে দাঁড়াবেন না বলে আশ্বাস দিয়েছিলেন। ইতিমধ্যেই রেলমন্ত্রক ভাগীরথী নদীর উপর সেতু নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ করে ফেলেছে। নদীর পূর্বদিকে সেতুর অ্যাপ্রোচ অংশের অধিকাংশ কাজ শেষ। কিন্তু পশ্চিমপাড়ে দিয়ার মাহিনগর গ্রামের প্রায় ৪৬২ মিটারের কাজ জমি-জটে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
মুর্শিদাবাদের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র এ দিন বলেন, ‘‘জমি নিয়ে জটিলতায় দীর্ঘদিন কাজ বন্ধ হয়ে থাকলেও এ বার সমাধানসূত্র খোঁজা হয়েছে। সাময়িক ভাবে সমস্যা তৈরি হলেও সে সব বর্তমানে মিটে গেছে। রেলসেতুর কাজ শুরু হয়েছে। জমিদাতাদের রাজ্য সরকারের তরফে কিছু সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার পরিকল্পনা চলছে। জেলা প্রশাসনের তরফে রেল এবং তাঁদের নির্মাণকর্মীদের পুরো নিরাপত্তা দেওয়া হবে।’’
বর্তমানে হাওড়া থেকে আজিমগঞ্জ হয়ে নিউ জলপাইগুড়ি পর্যন্ত রেলপথের দূরত্ব ৫৬৭ কিমি। শিয়ালদহ থেকে ভায়া আজিমগঞ্জ নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৪ কিমি এবং হাওড়া থেকে ভায়া বোলপুর, রামপুরহাট নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব ৫৭৩ কিলোমিটার। নশিপুর-আজিমগঞ্জ রেলসেতু চালু হলে শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়ি স্টেশনের দূরত্ব কমে হবে ৫৫৩ কিমি। রেল সূত্রে খবর, মোটের উপর দূরত্ব কমবে ২১ কিমি। বহু দূরপাল্লার দ্রুতগামী ট্রেন বর্ধমান, আসানসোল হয়ে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছুটে চলেছে প্রতিদিন। কয়েক বছর আগেই আসানসোলের কয়লাখনি অঞ্চলে লাল সঙ্কেত জারি করা হয়েছিল। সে ক্ষেত্রে পূর্ব রেলের আরও একটি বিকল্প পথ খুলে যাচ্ছে উত্তর ভারতের সঙ্গে যোগাযোগের। যদিও এই পথে ফরাক্কা হয়ে নয়াদিল্লি যেতে প্রায় ২৫০ কিমি অতিরিক্ত পথ অতিক্রম করতে হবে।
পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক একলব্য চক্রবর্তী বলেন, ‘‘প্রথম পর্যায়ে আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে নশিপুর থেকে আজিমগঞ্জ পর্যন্ত রেলের লাইন বসানোর কাজ শেষ হবে। দ্বিতীয় পর্যায়ে বিদ্যুদয়ণ-সহ আনুষঙ্গিক কাজ শেষ হবে।’’ তবে সেতু দিয়ে ট্রেন চলাচল কবে শুরু হবে, সে ব্যাপারে তিনি কোনও মন্তব্য় করেননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy