প্রতীকী ছবি।
মাধ্যমিকে পরীক্ষার্থী পরিসংখ্যানে গত বছরের মতো এ বারও এগিয়ে জেলার মেয়েরা। এ বারও ছাত্রদের তুলনায় ১৮ হাজার ১৩৫ জন বেশি ছাত্রী মাধ্যমিকে বসছে। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, এ বারে মুর্শিদাবাদ জেলায় মোট ৭৮ হাজার ১৩৫ জন মাধ্যমিক পরীক্ষা দিচ্ছে। তার মধ্যে ৩০ হাজার ছাত্র এবং ৪৮ হাজার ১৩৫ জন ছাত্রী। সম্প্রতি মাদ্রাসা পরীক্ষাতেও সেই একই ধারা লক্ষ্য করা গিয়েছে। সেখানেও ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ছিল বেশি।
ক্রমশ মেয়েদের সংখ্যা বেড়ে চলার একটা ব্যাখ্যাও মিলেছে জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কাছে— সময় পাল্টেছে। পড়াশোনায় আগ্রহ বেড়েছে মেয়েদের। সেই সঙ্গে স্বল্প বয়সে বিয়ের যে ধুম পড়েছিল কন্যাশ্রী যোদ্ধাদের ধাক্কায় তাতেও রাশ টানা গিয়েছে। সেই তালিকায় সংযোজন ঘটেছে, কন্যাশ্রী কিংবা সবুজসাথী প্রকল্প, যা তাদের স্কুলের গন্ডিতে টেনে এনেছে।
তবে, এর একটা উল্টো চিত্রও ধরা পড়েছে, ছাত্রদের স্কুলছুট হওয়ার পরিসংখ্যান ত্রমশ বাড়ছে। ফলে মাধ্যমিকের উঠোনে পৌঁছনোর আগেই অনেক ছাত্র পড়াশোনায় দাঁড়ি টেনে পাড়ি দিচ্ছে ভিন জেলায় কিংবা ভিন রাজ্যে। নিতান্তই রুজির টানে।
জেলায় কৃষিকাজে ভাঁটা পড়েছে। বাড়তি আয়ের খোঁজে তাই ভিন জেলায় অসংগঠিত এমনকি ভিন রাজ্য়ে নিতান্তউ অল্প বয়য়ে অসংগঠিত শ্রমিক হয়ে পাড়ি দিচ্ছে অনেক পড়ুয়া। মুর্শিদাবাদের সহকারী বিদ্যালয় পরিদর্শক (মাধ্যমিক শিক্ষা) খোন্দেকার আশরাফুল সামিম বলেন, ‘‘গত বছর থেকে আমরা দেখছি ছেলেদের তুলনায় মেয়ে পরীক্ষার্থী বেশি। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথীর মতো প্রকল্পের জেরে বাল্যবিবাহ যেমন আটকানো গিয়েছে, তেমনই মাঝপথে পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার প্রবণতা আটকানও রুখে দেওয়া গিয়েছে অনেকটাই। ফলে মেয়ে পরীক্ষার্থী সংখ্যার বেড়েছে।’’
এক সময় বাল্য বিবাহ, পাচারের মতো ঘটনা মুর্শিদাবাদের মেয়েদের পিছনে ফেলে দিয়েছিল। মুর্শিদাবাদের আনাচ কানাচে অল্প বয়সে মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়া ছিল চালু রেওয়াজ। ফলে স্কুল ছেড়ে তাদের সংসার সামলাতে শ্বশুরবাড়ি ছুটতে হত। প্রশাসন এবং বেশ কিছু স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা বাল্যবিবাহ আটকে স্কুলমুখী করতে নানা রকম সচেতনতার পাঠ দিয়ে বেড়াচ্ছে স্কুলগুলিতে। সে ডাকে সাড়াও মিলতে সুরু করেছে। মাঝ পথে পঠন-পাঠন তুলে দেওয়ার সেই রেওয়াজ থমকে যাওয়ায় স্কুলই তাদের কাছে হয়ে উঠেছে বাইরের জানলা। লালগোলার প্রত্যান্ত গ্রামের এক অভিভাবক বলেন, ‘‘মেয়েকে তো কাজে পাঠানো যায় না। বরং স্কুলে পাঠালে কন্যাশ্রীর মতো সুবিধা পাওয়া যায়। তাই ছেলেদের কাজে পাঠালেও মেয়েদের স্কুলে পাঠাচ্ছি।’’
এখন প্রশ্ন, স্কুলছুট ছাত্রদের স্কুলে ফেরাতে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না কেন? জেলা শিক্ষা দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘স্কুলের বহু পার্শ্ব শিক্ষক অনিয়মিত পড়ুয়া কিংবা স্কুলছুটদের বাড়ি গিয়ে তাদের সচেতন করা শুরু করেছে। সাফল্যও মিলেছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy