অনলাইনে বা ফোনের মাধ্যমে ‘বুকিং’ নিয়ে প্রায় প্রথম থেকেই একাধিক অনিয়ম সামনে আসতে শুরু করেছিল। কল্যাণী এমসে চিকিৎসা করাতে চাওয়া সাধারণ মানুষের অভিযোগ ছিল অনেক সময়ই হাজার চেষ্টা করেও অনলাইনের পাশাপাশি ফোনের মাধ্যমে বুকিং করা বা সময় পাওয়া সম্ভব হয় না। আবার গ্রামাঞ্চলের মানুষের পক্ষে সব সময় অনলাইনের মাধ্যমে সময় নেওয়াও কঠিন হয়ে পড়ে। এই নিয়ে একাধিকবার বিভিন্ন রাজনৈতিক দল সরবও হয়েছে। এই সমস্ত কারণে বেশ কয়েকটি বিভাগে হাসপাতালে এসে সরাসরি টিকিট সংগ্রহের সুযোগ করে দিল এমস কর্তৃপক্ষ। তবে এখনও এই পদ্ধতি বিশেষ প্রচার না-পাওয়ায় হয়রানি কমছে না বলে অভিযোগ।
কল্যাণী এমস হাসপাতাল চালু হওয়ার পর থেকেই নদিয়া জেলার পাশাপাশি উত্তর ২৪ পরগনা, হুগলি, বর্ধমান এমনকি মুর্শিদাবাদ জেলার বিরাট সংখ্যক মানুষ এখানে চিকিৎসা করাতে আসেন। এত দিন প্রতিটা বিভাগের ক্ষেত্রেই আগে থেকে অনলাইনে বা ফোনের মাধ্যমে সময় ‘বুক’ করে তবেই আসতে হত। আর সেটা করতে গিয়ে অনেকেই অভিযোগ তোলেন যে সব সময় এমসের নির্দিষ্ট নম্বরে ফোন করে কাউকে পাওয়া যায়নি বা অনলাইন পোর্টালের মাধ্যমে সব সময় সময় পাওয়া যায় না। ফলে ইচ্ছা বা প্রয়োজন থাকা সত্ত্বেও অনেকে এখানে চিকিৎসা করাতে পারে না। আর এরই সুযোগ নিয়ে এমস চত্বরে দালাল রাজ তৈরি হতে শুরু করে বলে অভিযোগ উঠতে থাকে। যে কারণে পোর্টাল বা ফোন নয়, হাসপাতালে এসে সরাসরি টিকিট সংগ্রহের দাবি উঠতে থাকে। এ বার সেই পথেই হাঁটতে শুরু করেছে এমস কর্তৃপক্ষ।
এমসে প্রায় ৩৯ বিভাগে চিকিৎসা করা হয়। এই মুহূর্তে তার মধ্যে ১০টি বিভাগে সরাসরি টিকিট করার পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। এমস সূত্রে জানা গিয়েছে, মনোরোগের পাশাপাশি শিশু, চোখ, অস্থি, দাঁত, সার্জারি, স্ত্রী ও প্রসূতি, নাক কান গলা, প্লাস্টিক সার্জারি ও হৃদরোগের বিভাগগুলিতে বেলা ১০টা পর্যন্ত হাসপাতালের গেট থেকেই সরাসরি টিকিট সংগ্রহ করার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে আবশ্য অনলাইন ও ফোনের মাধ্যমেও সময় নেওয়া যাবে। ৫ ডিসেম্বর থেকে এই পদ্ধতি চালু হলেও এখনও পর্যন্ত প্রায় একশো জন সরাসরি টিকিট সংগ্রহ করে চিকিৎসা করিয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের দাবি, বেলা ১০টা পর্যন্ত যাঁরাই আসবেন তাঁদের সকলেই টিকিট পাবেন। বাকি বিভাগগুলোর ক্ষেত্রেও একে একে এই পদ্ধতি চালু করা হবে বলে জানিয়েছেন কর্তারা। এমসের মুখপাত্র সুকান্ত সরকার বলেন, ‘‘সাধারণ মানুষের সুবিধার জন্য সরাসরি টিকিট সংগ্রহের ব্যবস্থা করা হয়েছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)