শীতের আমেজ গায়ে মেখে শুরু হয়েছে জেলায় জেলায় পিকনিক। নবাবের জেলা মুর্শিদাবাদের অলিগলিতে ছড়িয়ে রয়েছে পিকনিক স্পট। এক দিকে যেমন রয়েছে হাজারদুয়ারি, নবাব প্যালেস, মতিঝিল, হীরাঝিলের মতো ঐতিহাসিক প্রাসাদ সংলগ্ন পিকনিক স্পট। এর পাশাপাশি রয়েছে কিরটেশ্বরী, ডহপাড়ার মতো ধর্মীয় পিকনিক স্পটগুলিও। তবে ২০২৩-এর আগে পিকনিকের মরসুমে চিরাচরিত পিকনিক স্পটগুলিকে কার্যত টেক্কা দিয়ে গেল ভারতীয় রেলের নির্ণয়মান সেতু।
পর্যটকদের কাছে মুর্শিদাবাদ জেলার নয়া পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে নশিপুর রেলসেতু। এই রেলসেতুর নীচ দিয়ে চলে গিয়েছে ভাগীরথী নদী। সেতুর দু’পাশে চাষের জমি। হলুদ ফুলে ভরেছে চারপাশ। আর সেই প্রাকৃতিক সৌন্দর্যকেই মানুষজন বেছে নিয়েছেন পিকনিক স্পট হিসেবে। এ বছরের বড়দিন উপলক্ষে তিল ধারণের জায়গা ছিল না নশিপুর রেল সেতু সংলগ্ন মাঠে। জায়গা না মেলা। ফেরত যেতে হয়েছে বেশ কিছু পিকনিক পার্টিকে। ইতিমধ্যে সেতুর নীচে বসেছে খাবারের স্টল, টুকিটাকি কেনাকাটির দোকান, আইসক্রিম ও ফুচকার ঠেলাগাড়ি, বাচ্চাদের খেলনা, তেলেভাজার দোকান। দেদার বেচাকেনা হচ্ছে দোকানগুলিতে। রেলের দৌলতে নতুন কর্মসংস্থানের সম্ভাবনায় বাড়তি রোজগার হচ্ছে স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের।
জেলার বাসিন্দা তো বটেই, এমনকি পড়শি জেলা থেকেও নশিপুর রেলসেতুতে পিকনিক করতে ভিড় জমাচ্ছেন সাধারণ মানুষ। বীরভূমের সাঁইথিয়া ব্লক থেকে বড়দিনের ছুটিতে মুর্শিদাবাদে ঘুরতে এসেছিলেন রায় পরিবার। তাদেরও পিকনিকের জন্য পছন্দের জায়গা নশিপুর রেলসেতু। অমিয় প্রসাদ রায় বলেন, ‘‘আমাদের পরিচিত পিকনিক স্পটগুলিতে অত্যন্ত ভিড়, আর সেখানে বাড়তি পয়সা দিতে হয়। এখানে ভিড় হলেও অনেক জায়গা, পয়সা দেওয়ার বালাই নেই। নতুনত্ব রয়েছে স্পটে, তাই এখানেই ছুটে এলাম।’’ বহরমপুর গোরাবাজার থেকে বন্ধুদের সঙ্গে নিয়ে নশিপুর রেল সেতু দেখতে এসেছেন ইলা চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘এখানে এসে জায়গাটা এত পছন্দ হয়ে গেল যে পিকনিকের পরিকল্পনা করে ফেললাম।’’
উত্তরবঙ্গ ও দক্ষিণবঙ্গের দূরত্ব কমাতে মুর্শিদাবাদ ও আজিমগঞ্জকে জুড়তে নশিপুর রেলসেতুর নির্মাণের প্রকল্প নিয়েছিল রেল। কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। মাস চারেক আগে জমিজট কাটিয়ে শুরু হয়েছিল দীর্ঘদিন ধরে আটকে থাকা এই রেলসেতুর কাজ। অনেকেই ভেবেছিলেন, ডিসেম্বরেই বহু আলোচিত এই রেল সেতু দিয়ে ছুটবে দার্জিলিং মেল। যদিও তা বাস্তবায়িত হল না। তবে রেললাইন পোঁতার কাজ প্রায় হয়ে গিয়েছে। মাস দুয়েকের মধ্যেই হয়ত সেই লাইন দিয়ে ছুটবে ট্রেন। দূরত্ব কমবে উত্তর ও মধ্যবঙ্গের। তার আগে জোর কদমে চলছে শেষ প্রস্তুতি। এর মাঝে রেল সেতুকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠায় অবাক রেলের আধিকারিকেরাও। নশিপুর রেলসেতুর কর্মরত আধিকারিক রামকুমার যাদব বলেন, ‘‘এর আগে অনেক প্রকল্পে কাজ করেছি। কিন্তু নির্মীয়মাণ রেল সেতুকে ঘিরে পর্যটনকেন্দ্র গড়ে ওঠার হুজুক এই প্রথম দেখলাম। এত মানুষের ভিড়ে কাজ করতে হিমশিম খাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy