মতিরুল বিশ্বাস খুনের চার্জশিট পেস। — ফাইল চিত্র।
তৃণমূল নেতা মতিরুল ইসলাম বিশ্বাস খুনের মামলায় আদালতে চার্জশিট জমা দিয়েছে পুলিশ। খুনের ৮৬ দিনের মাথায় মুর্শিদাবাদের বহরমপুর আদালতে জমা পড়া ৮০০ পাতার ওই চার্জশিটে অবশ্য নদিয়া জেলা পরিষদের তৃণমূল সদস্য টিনা ভৌঁমিক সাহা বা তৃণমূলের নওদা ব্লক সভাপতি সফিউজ্জামান ওরফে হাবিব শেখ বা নওদা অঞ্চল সভাপতি ফিরোজ শেখের নাম নেই। মতিরুলের স্ত্রীর দায়ের করা অভিযোগে এই তিন জনেরই নাম ছিল।
এ প্রসঙ্গে সোমবার টিনা বলেন, ‘‘পুলিশ তদন্তে যা পেয়েছে সেই মতো চার্জশিট জমা দিয়েছে। এতে প্রমাণিত হল যে, চাইলেই কাউকে মিথ্যা অভিযোগে ফাঁসানো যায় না।’’ হাবিব শেখেরও দাবি, ‘‘নিজেদের স্বার্থ চরিতার্থ করতে আমাদের কয়েক জনের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করা হয়েছিল। অভিযোগ যে ভিত্তিহীন, তা প্রমাণিত।’’ একই সুর নওদা অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি ফিরোজ শেখেরও।
গত ২৪ নভেম্বর নওদায় গিয়ে খুন হয়েছিলেন করিমপুর ২ ব্লক তৃণমূলের সংখ্যালঘু সেলের নেতা মতিরুল। ওই রাতে মতিরুলের নিরাপত্তারক্ষীর লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা রুজু করে পুলিশ। পরের দিন নিহতের স্ত্রী, নারায়ণপুর ২ গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল প্রধান রিনা বিশ্বাস নওদা থানায় ১০ জনের নামে এফআইআর করেন। তদন্তে নেমে পুলিশ বেশ কয়েক জনকে গ্রেফতার করে। খুনে ব্যবহৃত দু’টি আগ্নেয়াস্ত্র, অভিযুক্তদের এক জনের মোটরবাইক বাজেয়াপ্ত করা হয়। পুলিশের দাবি, ধৃতদের এক জনের কাছ থেকে মতিরুলের আংটিও পাওয়া যায়।
পুলিশ সূত্রে খবর, রবিবার জমা পড়া ওই চার্জশিটে মোট ১৬ জন অভিযুক্তের নাম রয়েছে। তাদের মধ্যে ন’জন গ্রেফতার হয়েছে। ইতিমধ্যে আদালতে ছ’জন সাক্ষীর গোপন জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে। তিন জন সাক্ষী টিআই প্যারেডে অভিযুক্তদের শনাক্ত করেছেন। নিহতের শরীরে যে গুলির টুকরো পাওয়া গিয়েছে তা ধৃতদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া আগ্নেয়াস্ত্রের বলে দাবি বিশেষজ্ঞদের। চার্জশিটে উল্লিখিত বাকি সাত জন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে।
নিহতের স্ত্রী লিখিত অভিযোগে নাম দেওয়া সত্ত্বেও চার্জশিটে কেন টিনা, হাবিব বা ফিরোজের নাম নেই? মুর্শিদাবাদ পুলিশ জেলার সুপার সুরিন্দর সিংহ বলেন, ‘‘খুনে জড়িত সন্দেহে যাদের নাম তদন্তে উঠে এসেছে, চার্জশিটে তাদেরই নাম রয়েছে। তদন্ত এখনও চলছে। পরে অতিরিক্ত চার্জশিট জমা দেওয়া হবে। তার মধ্যে আর কোনও তথ্যপ্রমাণ হাতে এলে, তা যোগ করা হবে।’’
মুর্শিদাবাদের তৃণমূল সাংসদ তথা বহরমপুর-মুর্শিদাবাদ ইউনিটে দলের চেয়ারম্যান আবু তাহের খানের দাবি, ‘‘প্রথম থেকেই পুলিশ নিরপেক্ষ তদন্ত করেছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কিছু ব্যক্তির নামে অভিযোগ করা হয়েছিল।’’ ঘটনাচক্রে, হাবিব শেখ তাঁর ভাগ্নে। চার্জশিট নিয়ে মতিরুলের স্ত্রী রিনা বিশ্বাস শুধু বলেন, ‘‘বিস্তারিত জানি না। এখনই এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করব না।’’
(সহ প্রতিবেদন: সুস্মিত হালদার ও অমিতাভ বিশ্বাস)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy