Advertisement
১৯ অক্টোবর ২০২৪
Krishnanagar Incident

মেয়ের ‘স্বামী’ পছন্দে সায় ছিল না মায়ের

মাস কয়েক আগেই আঠারো বছর হয়েছে তাঁর মেয়ের। এখন আর বিয়েতে বাধা ছিল না। বিষণ্ণ মুখে মা বলেন, “আমার মোটেই পছন্দ ছিল না ছেলেটিকে।

স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহের তদন্তের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে।

স্কুল ছাত্রীর মৃতদেহের তদন্তের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞরা। নদিয়ার কৃষ্ণনগরে। ছবি : সুদীপ ভট্টাচার্য।

সম্রাট চন্দ
কৃষ্ণনগর শেষ আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪ ১০:১৭
Share: Save:

হবু জামাই হিসাবে যুবকটিকে মোটেই পছন্দ ছিল না তাঁর। কিন্তু মেয়ের জেদের কাছে হার মেনেছিলেন। মেয়ে তড়িঘড়ি বিয়ে করতে চাইলেও তিনি বার বার তাকে সতর্ক করেন, অন্তত বছর পাঁচেক অপেক্ষা করে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পরামর্শও দিয়েছিলেন।

শুক্রবার বিকালে নিজের বাড়িতে বসে এই কথাই ফিরে-ফিরে আসছিল অগ্নিদগ্ধ হয়ে মৃত ছাত্রীর মায়ের কথায়। কোনও লুকোছাপা না করেই তিনি বলেন, মেয়ের পছন্দের সঙ্গে তাঁরা আদৌ একমত ছিলেন না। মেয়ে তার প্রেমে পড়েছিল। তাকে সামাজিক ভাবে বিয়ে করতে চাইছিল। তার সঙ্গে জীবন কাটাতে চাইছিল। মাঝখান থেকে তার জীবনটাই চলে গেল!

মাস কয়েক আগেই আঠারো বছর হয়েছে তাঁর মেয়ের। এখন আর বিয়েতে বাধা ছিল না। বিষণ্ণ মুখে মা বলেন, “আমার মোটেই পছন্দ ছিল না ছেলেটিকে। আমরা, বাড়ির কেউ মেয়ের এই সম্পর্কের ব্যাপারে একেবারে রাজি ছিলাম না।”

কেন তাঁদের এই অপছন্দ?

মৃতার মা বলেন, “কোনও দিনই আমার ছেলেটিকে ভাল ছেলে বলে মনে হয়নি। সচ্চরিত্র বলে মনে হয়নি। বরং কেবলই মনে হত, এই ছেলে আমার মেয়েকে ঠাকাতে পারে।” কিন্তু মেয়ে তাঁদের কথা কানে তুলতে চায়নি। পরে ওদের বলেছিলাম, ‘কিছু সময় যাক। বছর পাঁচেক পরে দেখা যাবে।’ মেয়ে তা কতটা অন্তরে গ্রহণ করেছিল, সন্দেহ আছে।”

তিনি জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা নাগাদ কোজাগরী লক্ষ্মীপুজোর বাজার করার জন্য মেয়ে বাড়ি থেকে বেরোয়। পরে সে ফোন করে জানায়, ওই যুবকের সঙ্গে দেখা করতে যাচ্ছে। এর পর অনেকটা সময় পেরিয়ে গেলেও মেয়ে না ফেরায় তিনি তাকে কয়েক বার ফোন করেন। কিন্তু ফোন বন্ধ ছিল। পরে ১০টা নাগাদ হোয়াটসঅ্যাপে মেয়ের অডিয়ো মেসেজ পান তিনি। তাতে সে বলে— ‘আমার মৃত্যুর জন্য আমি নিজেই দায়ী’। তখনই তিনি ফের মেয়েকে ফোন করেন, কিন্তু ফোন বেজে যায়। পরে হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজটিও মুছে দেওয়া হয়।

এ দিন দুপুরে কৃষ্ণনগরের তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্র তাঁদের বাড়িতে গিয়ে পাশে থাকার আশ্বাস দেন। বিকালে বাড়িতে যান আইএমএ-সহ বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠনের সদস্যেরা। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের তদন্তকারীরাও গিয়েছেন। সারা দিন আত্মীয়-পরিজন ও পাড়াপড়শি মৃতার মা-বাবাকে আগলে রেখেছেন। তাঁরা সকলেই বিচার চাইছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE