E-Paper

ছেলের ‘চরম শাস্তি’ চান ধর্ষণ-খুনে অভিযুক্তের মা

স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে রুটিরুজির খোঁজে ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন ঝর্না।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৮:৩১
Share
Save

তাঁর কোলে তখন দু'মাসের সন্তান, ছেড়ে গিয়েছিল স্বামী। ছেলেকে বড় করতে বাড়ি-বাড়ি পরিচারিকার কাজ করতে হয়েছে।

কিন্তু ফল আখেরে কী দাঁড়াল? দিন কয়েক আগে নিউটাউনে নাবালিকাকে ধর্ষণ এবং খুন করে মাটিতে পুঁতে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে তাঁর ছেলে, সেই সৌমিত্র রায়ের বিরুদ্ধেই! রাগে-দুঃখে এখন ছেলের চরম শাস্তিই চাইছেন নদিয়ার বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা গ্রামের বাসিন্দা ঝর্না রায়।

বুধবার দুপুরে নদিয়ার ধানতলায় রাস্তার পাশে একটি বটগাছের নীচে বসে ঝর্না বলেন, "ও যা করেছে তা ঘৃণ্য অপরাধ। আমি ওর পাশে দাঁড়াতে চাই না। আমি চাইব, আদালত যেন ওকে চরম শাস্তি দেয়।"

স্বামী ছেড়ে যাওয়ার পর থেকে রুটিরুজির খোঁজে ছেলেকে নিয়ে কলকাতায় চলে গিয়েছিলেন ঝর্না। একরত্তি ছেলেকে পাড়া-পড়শির কাছে রেখে প্রতিদিন কাজে যেতে হত তাঁকে। কিন্তু ছেলে বড় হচ্ছে, যদি বিপথে যায়! এই আশঙ্কায় হুগলির একটি মিশনারি বোর্ডিং স্কুলে ছেলেকে ভর্তিও করেন তিনি। কিন্তু সেখানে পড়াশোনার অনেক খরচ। তাই অতিরিক্ত কিছু আয়ের সন্ধানে এক সময়ে অন্য রাজ্যেও কাজে যেতে হয়েছে তাঁকে।

কিন্তু ছেলে এর প্রতিদান দেয়নি, বরং মাধ্যমিকের আগেই পড়াশোনার পাট চুকিয়ে দিয়েছে। ঝর্নাই জানাচ্ছেন, উল্টে মায়ের পাঠানো টাকায় মাত্রাতিরিক্ত নেশা করতে থাকে সে। পরে কিছুটা বাধ্য হয়েই মার্বেল মিস্ত্রির কাজে যোগ দেয়। এর পরে সে নদিয়ারই দত্তপুলিয়ার এক বিবাহিত মহিলাকে ফুসলিয়ে বিয়ে করে। কিন্তু কিছু দিন বাদেই তিনি আত্মঘাতী হন। সেই সময়েই স্থানীয় সূত্রে বধূ নির্যাতন ও আত্মহত্যায় প্ররোচনার কথা শোনা গিয়েছিল, কিন্তু পুলিশের কাছে কোনও অভিযোগ হয়নি।

ঝর্না জানান, এর পর নদিয়া ছেড়ে সৌমিত্র কেষ্টপুরের জগৎপুর এলাকায় তাঁর সঙ্গে থাকা শুরু করে। দ্বিতীয় বিয়েও সেখানেই। এর পর তারা স্বামী-স্ত্রী অন্য জায়গায় থাকতে শুরু করে। ধীরে ধীরে মায়ের সঙ্গে যোগাযোগও কমতে থাকে। বদমেজাজি, রগচটা ছেলে নিয়ন্ত্রণের বাইরে যেতে শুরু করেছে দেখে ঝর্না নিজেও খানিক দূরত্ব বজায় রাখছিলেন। এরই মধ্যে এক বন্ধুর স্ত্রীকে যৌন নিগ্রহ করার অভিযোগে গ্রেফতার হয় সৌমিত্র, পরে জামিনে ছাড়াও পেয়ে যায়। এর পরে ফোনেও ছেলের সঙ্গে কথাবার্তা কমিয়ে দেন মা।

নিউটাউন ধর্ষণ-খুন কাণ্ডে সৌমিত্র গ্রেফতার হতেই এক আত্মীয় মারফত সেই খবর পান ঝর্ণা। কিন্তু ছেলের জন্য ব্য়াকুল হওয়ার বদলে নিহত নাবালিকার পক্ষই নিয়েছেন তিনি। এ দিন ঝর্না বলেন, "ছেলে গ্রেফতারের পর এক উকিল মারফত আমার কাছে ফোন এসেছিল। সম্ভবত ছেলেই তাঁকে দিয়ে ফোন করিয়েছিল। আদালতে মামলা লড়ার জন্য আমার থেকে দু’হাজার টাকার চান ওই উকিল। আমি স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছি, একটি টাকাও দেব না।"

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

New Town Rape victim

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।