জওহরলাল নেহরু মেডিক্যাল কলেজ (জেএনএম) হাসপাতাল। —ফাইল চিত্র।
ডাক্তারি ছাত্রদের হাতে আক্রান্ত হতে পারেন— এই আশঙ্কায় প্রায় দশ দিন হাসপাতালে আসেননি কল্যাণী জেএনএম হাসপাতালের সুপার। গোটা বিষয়টি লিখিত ভাবে পুলিশের পাশাপাশি প্রশাসনিক স্তরেও জানিয়েছেন জেএনএমের সুপার সৌম্যজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে মঙ্গলবার থেকে তিনি আবার হাসপাতালে আসতে শুরু করেছেন। বুধবার তিনি বলেন, “গোটা বিষয়টি আমি আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।” একই কারণে দু’জন সহকারী সুপারও গরহাজির থাকছেন বলে হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে। ছাত্রেরা এবং মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অবশ্য সুপারের দাবি নস্যাৎ করেছেন।
জেএনএম সূত্রের দাবি, হাসপাতালের প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সুপার ও অধ্যক্ষের মধ্যে ‘মতবিরোধ’ তৈরি হওয়ায় বেশ কিছু দিন ধরেই ডামাডোলের পরিবেশ ছিল। সুপার ও সহকারী সুপারদের টানা অনুপস্থিতি এবং পডুয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে সুপারের অভিযোগের বিষয়টি সামনে আসতেই গোটা মেডিক্যাল কলেজ জুড়ে অরাজক পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। সেই পরিবেশে রোগীদের চিকিৎসাও পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছে বলে অভিযোগ।
নদিয়ার ওই মেডিক্যাল কলেজ সূত্রের দাবি, বেশ কিছু দিন ধরেই হাসপাতালের ভিতরে নানা বিষয় নিয়ে পড়ুয়াদের একাংশের সঙ্গে সুপারের ঠান্ডা লড়াই চলছিল। এর মধ্যে প্রতিষ্ঠানের প্রধান করণিকের বিরুদ্ধে নানা আর্থিক অনিয়মের অভিযোগ ওঠে। তা নিয়ে সুপার নাড়াচাড়া শুরু করলে পরিস্থিতি আরও জটিল হতে থাকে বলে হাসপাতালের কর্মী-চিকিৎসকদের দাবি।
সুপারের অভিযোগ, গত ১৬ মে বেশ কয়েক জন পড়ুয়া তাঁর দফতরে এসে আন্দোলন শুরু করেন এবং তাঁর পদত্যাগ দাবি করেন। পদত্যাগ না করলে শারীরিক নিগ্রহের হুমকিও দেওয়া হয় বলে তিনি পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে জানিয়েছেন। তাঁর আক্ষেপ, ‘‘আমি অধ্যক্ষকে একাধিক বার জানানো সত্ত্বেও তিনি আশ্চর্য রকম উদাসীন।” পুলিশের কাছে লিখিত ভাবে সুপার জানিয়েছেন, প্রধান করণিক গৌতম বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ওঠা আর্থিক কেলেঙ্কারি ও অন্যান্য অনিয়মের নির্দিষ্ট লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পরেই আইনি পদক্ষেপ করার চেষ্টা করেন। আর তখনই এই সমস্ত ঘটনা শুরু হয়।
তিনি জানিয়েছেন, নিগ্রহের ভয়ে নিজের আবাসনে ঢুকতে পারছেন না এবং গত ১৬ মে থেকে হাসপাতালেও আসতে পারেননি।
অভিযুক্ত পড়ুয়াদের অন্যতম মেডিক্যাল কলেজের পিজিটি
প্রথম বর্ষের ছাত্র মহম্মদ অখিল পাল্টা দাবি করেন, “ওঁর অভিযোগ একেবারেই ঠিক নয়। আমরা নানা সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি তো
ছিলেনই না। তা হলে হুমকি দেব কী করে?” প্রধান করণিক গৌতম বিশ্বাসের দাবি, “আমার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের কথা কিছুই জানা নেই। কর্তৃপক্ষও আমাকে কিছু বলেননি। ফলে এই নিয়ে কোনও মন্তব্য
করব না।”
একটি সূত্রের দাবি, ১৬ মে মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ অভিজিৎ মুখোপাধ্যায় গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে কথা বলে তাদের বিক্ষোভ দেখানো থেকে নিরস্ত করেছিলেন।
পুলিশের কাছে সুপারের লিখিত অভিযোগ প্রসঙ্গে অধ্যক্ষের
দাবি, “সুপারের অভিযোগ ঠিক নয়। ছাত্রেরা তাঁকে মরধর করবে— এমনটা হতে পারে না। পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ করাটাও ঠিক কাজ হতে পারে না।” তিনি আরও বলেন, “সুপার কাউকে না জানিয়ে কী করে দশ দিন অনুপস্থিত থাকলেন? আমি গোটা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy