বনানী চন্দ্র। —নিজস্ব চিত্র
কন্যাশ্রীর অনুদান ফিরিয়ে দিল দশম শ্রেণির এক ছাত্রী। কান্দির খড়গ্রাম দুর্গাপুর উচ্চবিদ্যালয়ের ওই ছাত্রী, বনানী চন্দ্র স্পষ্টই জানিয়েছে, তার মতো সচ্ছল পরিবারে কন্যাশ্রীর অনুদান নিছকই অপ্রয়োজনীয়।
বনানী বলে, “আমার পরিবার বিত্তশালী নয়, তা বলে ওই সরকারি অনুদানেরও কোনও প্রয়োজন দেখছি না। বরাবর শুনে এসেছি, সরকারি অর্থ অপচয় বন্ধ হওয়া দরকার। অথচ আমার মতো পরিবারে ওই পঁচিশ হাজার টাকা নেওয়া মানে সরকারি অর্থ অপচয়েরই নামান্তর। তাই কন্যাশ্রীর অনুদান নেব না।’’
কন্যাশ্রীর অনুদান উচ্চশিক্ষায় ব্যয় করাই সরকারি নীতি। তবে সে টাকা যে অন্য কাজেও ব্যবহার হচ্ছে তার উদাহরণও কম নেই। বিয়ে থেকে পারিবারিক অনুষ্ঠান, বাড়ির দো-তলা তৈরি এমনকি মোবাইল কিংবা ল্যাপটপ কেনার ক্ষেত্রেও ওই টাকা ব্যয় করার অভিযোগ কম নয়। বনানী বলে, “আমার মত যারা আর্থিক ভাবে যারা সচ্ছল পরিবারের মেয়ে তারা ওই সরকারি টাকা নষ্ট না করে সরকারকে অন্য কোন প্রকল্প করতে সাহায্য করতে সাহায্য করুক।”
ওই স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আনারুল খাঁ বলেন, “সরকারি ভাবে এক জন ছাত্রী যেন ওই প্রকল্পের আওতা থেকে বাদ না যায়, এটাই সরকারি নির্দেশ। বনানী দু’বছর ধরে নাম জমা দেয়নি। খোঁজ নিতে সে পরিস্কার জানায়, ওই অনুদান নিতে আগ্রহী নয় সে।’’
ঘটনাটি শুনেছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক পূরবী দে বিশ্বাস বলেন, “কন্যাশ্রীর টাকা প্রতিটি ছাত্রী যেন পায়, সেটাই লক্ষ্য। কিন্তু ওই ছাত্রী যে কারণ দেখিয়েছে তাও ভাবার মতো। আমার তো ভালই লাগছে শুনে।’’
খড়গ্রামের মালিপাড়ার বাসিন্দা ওই ছাত্রী। কর্মবিনিয়োগ কেন্দ্রের কর্মী ছিলেন বাবা সুবিমল চন্দ্র। কিন্তু বনানীর যখন চার বছর বয়স, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি। মা কমলার কাছেই বড় হয়ে উঠেছে সে। পারিবারিক সূত্রে জানা গিয়েছে, জমি জমা ছাড়াও আর্থিক ভাবে সচ্ছল পরিবার। তাই মেয়ের পাশেই দাঁড়াচ্ছেন মা কমলা। বলছেন, ‘‘মেয়ের সিদ্ধান্তে খুশিই লাগছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy