Advertisement
E-Paper

নজরদারির ফাঁক গলেই আসছে বেআইনি অস্ত্র

মুর্শিদাবাদে আগ্নেয়াস্ত্রের আনাগোনা ফের বেড়েছে। সম্প্রতি জেলায় শ্যুট-আউটের পর পর ঘটনা ঘটেছে সুতির কাশিমনগরে।

আগ্নেয়াস্ত্রের আনাগোনা ফের বেড়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্রের আনাগোনা ফের বেড়েছে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০২৪ ০৭:১৫
Share
Save

রাতের বেলায় হঠাৎ এসটিএফ ও শমসেরগঞ্জ থানার পুলিশের যৌথ হানা। ১২ নম্বর জাতীয় সড়কের ডাকবাংলো মোড়ে গত ২২ অক্টোবরের ওই হানায় ধরা পড়েছিল মহম্মদ সামসাদ আলিনামে এক দুষ্কৃতী। জলঙ্গির বাসিন্দা ওই ব্যক্তি কাঁধে ব্যাগ নিয়ে অপেক্ষা করছিল রাস্তার পাশে। ঝাড়খণ্ডের সাহেবগঞ্জ থেকে চাঁদপুর হয়ে সড়ক পথে চকসাপুরের কাছে আসে সে। সেখান থেকে হেঁটে ডাকবাংলো। পুলিশও ছিল ওঁত পেতে। তার ব্যাগে তল্লাশি চালাতেই মেলে তিনটি পিস্তল, দু’টি ম্যাগাজ়িন ও ১০ রাউন্ড গুলি। হাতবদলের জন্যই আনা হয়েছিল এই আগ্নেয়াস্ত্র।

গত ২৭ অক্টোবরের দুপুর। নিউ ফরাক্কা রেল স্টেশন লাগোয়া সাবওয়ে দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিল তৌসিফ আলি। তার হাতে ছিল একটি ব্যাগ। তা দেখে সন্দেহ হওয়ায় পুলিশের তল্লাশিতে মেলে ৪টি ম্যাগা‌জ়িন-সহ দু’টি পিস্তল। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, তার বাড়ি মালদহের বৈষ্ণবনগরে। আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে তার যাওয়ার কথা ছিল নিউ ফরাক্কা স্টেশনে।

সাম্প্রতিক এই দু’টি ঘটনা থেকে স্পষ্ট হয়েছে, মুর্শিদাবাদে আগ্নেয়াস্ত্রের আনাগোনা ফের বেড়েছে। সম্প্রতি জেলায় শ্যুট-আউটের পর পর ঘটনা ঘটেছে সুতির কাশিমনগরে। এক ব্যবসায়ীর গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে। আগ্নেয়াস্ত্র-সহ গ্রেফতার হয়েছেএক জন।

গত ১৬ অক্টোবর সাতসকালে একই ভাবে গুলিচালনার ঘটনা ঘটেছিল বহরমপুরে। প্রোমোটার প্রদীপ দত্ত খুন হন ওইদিন। তিন লক্ষ টাকার চুক্তিতে সুপারি কিলার এনে খুন করা হয়েছে তাঁকে। প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে এমন তথ্য। উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ থেকে এক অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হলেও আগ্নেয়াস্ত্রের সন্ধান মেলেনি এখনও। বাসিন্দাদের একাংশের বক্তব্য, মুর্শিদাবাদে আগ্নেয়াস্ত্রের জোগান ও ব্যবহার দুষ্কৃতীদের কাছে সহজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এর সঙ্গেই দাপট বোমারও। শনিবার রাতেই কান্দির এক তৃণমূল নেতার বাড়ি থেকে বোমা, গুলি, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। রবিবারও সাগরপড়ায় আগ্নেয়াস্ত্র মেলে এক দুষ্কৃতীর কাছ থেকে। কয়েক বছরে আগেও জেলায় আগ্নেয়াস্ত্র আসত ঝাঁকে ঝাঁকে। পুলিশ জেলা ভাগ হওয়ায় আগ্নেয়াস্ত্রের আনাগোনা কিছুটা কমে। কিন্তু পুরোপুরি বন্ধ হয়নি। সাম্প্রতিক ধরপাকড় তার প্রমাণ। আগ্নেয়াস্ত্রের জোগানে আগে আসত বিহারের মুঙ্গেরের নাম। এখন বিহারের সঙ্গে যোগ হয়েছে ঝাড়খণ্ড ও কালিয়াচক। ভৌগোলিক দিক থেকে যোগাযোগে মুর্শিদাবাদের ফরাক্কা, শমসেরগঞ্জ ও সুতির অবস্থানের বেশ কিছু সুবিধে রয়েছে। ১২ নম্বর জাতীয় সড়ক লাগোয়া এই তিন থানার যে কোনও গ্রাম থেকে সরাসরি ঝাড়খণ্ড ও বাংলাদেশ সীমান্তে যাওয়া যায় অতি সহজেই। রেল পথেও যে কোনও রাজ্যে চলে যাওয়ার সহজ পথ নিউ ফরাক্কা জংশন স্টেশন। ফরাক্কা, ধুলিয়ান বা সুতি থেকে যে সব সড়ক ঝাড়খণ্ডের দিকে গিয়েছে সেগুলিতে পুলিশের নাকাবন্দি কম হয়। দুষ্কৃতীরা সেই সুযোগ নিচ্ছে বলে অভিযোগ। যদিও পুলিশ সদাসতর্ক দাবি করে জঙ্গিপুর পুলিশ জেলার সুপার আনন্দ রায় বলেন, ‘‘যখনই কিছু ঘটেছে কড়া পদক্ষেপ করেছে পুলিশ। দ্রুত দুষ্কৃতীদের ধরেছি আমরা।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Arms Fire Arms STF

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}