তুলি হাতে কান্দির প্রাক্তন বিধায়ক শফিউল। —নিজস্ব চিত্র।
খুব ছেলেবেলায় খেলার ছলে শুরু করেছিলেন মূর্তি গড়ার কাজ। হাতে তুলি তুলে দিয়েছিলেন বাবা। ছবি আঁকার সেই শুরু। তার পর কাঁচা হাতে বিভিন্ন মডেল বানাতেন সফিউল আলম খান। প্রথম দুর্গামূর্তি তৈরি করেছিলেন সপ্তম শ্রেণিতে পড়তে পড়তেই। সেই শুরু। এ ভাবেই ৪০ বছর ধরে দুর্গামূর্তি তৈরি করে চলেছেন মুর্শিদাবাদের কান্দির প্রাক্তন বিধায়ক সফিউল ওরফে বনু।
এলাকায় সফিউল পরিচিত বনু’দা নামে। বয়স হয়েছে ৬২। এ বার শারীরিক কারণে খুব বেশি প্রতিমা গড়ছেন না। তবু শখটাকে আঁকড়ে আছেন। মহালয়ার আগের দিন প্রাক্তন বিধায়কের ব্যস্ততা তুঙ্গে। এ বার একটি বারোয়ারি পুজোর প্রতিমা তৈরি করছেন। শনিবার দিচ্ছেন শেষ মুহূর্তের তুলির টান। এখানে মুসলমান শিল্পীর হাতে মৃন্ময়ী থেকে চিন্ময়ী হয়ে ওঠে দুর্গা।
মূর্তির জন্য কাঠামো বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া থেকে রং, প্রতিমা তৈরির সবটাই নিজের হাতে করেন সফিউল। বনু’দার হাতের প্রতিমার ভক্ত অনেকে। কিন্তু অন্য সম্প্রদায়ের হয়ে মূর্তি গড়তে কখনও সমস্যার মুখোমুখি হননি? সফিউল ওরফে বনুর কথায়, ‘‘সেই ১২ বছর বয়স থেকে প্রতি বছর প্রতিমা তৈরি করি। মাটির প্রতিমায় তো প্রাণ থাকে না। প্রাণ থাকে আমাদের হৃদয়ে। হৃদয় দিয়ে এই কাজ করার চেষ্টা করি।’’ প্রাক্তন বিধায়কের সংযোজন, ‘‘এখন বয়স হয়েছে। তাই একটি প্রতিমাই খুব সূক্ষ্ম ভাবে করার চেষ্টা করি।’’ স্থানীয় মসজিদের ইমাম নুর আলম বলেন, ‘‘বনুর এই কাজে আমরা গর্বিত।’’ স্থানীয় ক্লাবের সদস্য রবিউল ইসলামের কথায়, ‘‘সঙ্গীত, শিল্পচর্চা থেকে সামাজিক কাজ— সবেতেই অত্যন্ত উৎসাহী এক জন মানুষ আমাদের বনু’দা।’’
২০১৯ সালে কান্দি বিধানসভা উপনির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হন সফিউল। বিধায়ক থাকাকালীনও দুর্গাপুজোর সময় চরম ব্যস্ত থাকতেন। এখন আর জনপ্রতিনিধি নন। তবে পুজো এলেই দারুণ ব্যস্ত হয়ে পড়েন বৃদ্ধ। সাম্প্রদায়িক বিভেদের এই বিষাদঘন পরিবেশে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের এক জন প্রতিনিধির হাতে দুর্গা তৈরির এই ছবিই বর্তমান প্রেক্ষাপটে এক অন্য বার্তা দেয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy