Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
CBI Raid

সিবিআই দেখে চাকরি যাওয়ার ভয়

কৃষ্ণনগর পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টি অনেক আগেই সামনে এসেছিল। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কৃষ্ণনগর পুরসভা বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগের পরীক্ষা নেয়।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চলে যাওয়ার পর রানাঘাট পুরসভার অফিস ঘর।

কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা চলে যাওয়ার পর রানাঘাট পুরসভার অফিস ঘর। ছবি: সুদেব দাস

নিজস্ব সংবাদদাতা
কৃষ্ণনগর , রানাঘাট শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:১৫
Share: Save:

প্রাক্তন পুরপ্রাধনের বাড়িতে পর পর দু’দিন সিবিআই হানা। আর তাতেই মনে মনে চাকরি হারানোর শঙ্কায় ভুগছেন পুর-কর্মীদের কেউ কেউ। তদন্তের গতিপ্রকৃতি কোন দিকে যাবে, তা এখনও পরিষ্কার নয় কারওর কাছেই। তবে এর মধ্যেই দুই পুরসভার চাপা অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। কেউ কেউ জানাচ্ছেন, একটা অনিশ্চয়তা বোধ কাজ করতে শুরু করেছে ‘বিতর্কিত’ সময়ে নিয়োগ হওয়া কর্মীদের একটা অংশের মধ্যে। অনেকেই খোঁজখবর নিয়ে বোঝার চেষ্টা করছেন, দুর্নীতির অভিযোগ সত্যি প্রমাণিত হলে তাঁদের নিয়োগের প্যানেল বাতিল হয়ে যাবে কিনা। চাকরি খোয়ানোর ভয় কাজ করছে তাঁদের মধ্যে।

কৃষ্ণনগর পুরসভার নিয়োগ সংক্রান্ত অনিয়মের অভিযোগের বিষয়টি অনেক আগেই সামনে এসেছিল। ২০১৭ ও ২০১৮ সালে কৃষ্ণনগর পুরসভা বিজ্ঞপ্তি জারি করে নিয়োগের পরীক্ষা নেয়। ২০১৭ সালে ১০১ জন ও ২০১৮ সালে ১০০ জনকে বিভিন্ন পদে নিয়োগ করা হয়। হাঁসখালির জয়নারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা শান্তনু সরকার নামে ২০১৮ সালের এক পরীক্ষার্থী তথ্য জানার অধিকার আইনে ওই পরীক্ষা সংক্রান্ত বেশ কিছু বিষয় জানতে চান। তারই উত্তর দিতে গিয়ে কৃষ্ণনগর পুরসভা কর্তৃপক্ষ জানান, তাঁদের কাছে ওই পরীক্ষার কোন ওএমআর সিট বা উত্তরপত্র নেই। শুধু তাই নয়, বর্তমান পুরপ্রধান রিতা দাস ওএমআর সিট খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না জানিয়ে কোতোয়ালি থানায় একটি জেনারেল ডায়েরিও করেন।

বিষয়টি জানাজানি হতেই শোরগোল পড়ে যায়। ওএমআর সিট গায়েবের বিষয়টি সামনে রেখে নিয়োগ-দুর্নীতির অভিযোগ তুলতে থাকে বিরোধীরা। এরই মধ্যে পুরসভায় হানা দিয়ে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র নিয়ে যান সিবিআই তদন্তকারী আধিকারিকেরা। তখন থেকেই পুরসভার অন্দরে অনেক কর্মীর চাকরি হারানোর শঙ্কা কাজ করতে শুরু করে। রবিবার প্রাক্তন পুরপ্রধান অসীম সাহার বাড়িতে সিবিআই হানা দিতেই সে ভয় কয়েক গুণ বেড়ে গিয়েছে। ২০১৭ সালে নিয়োগ হওয়ায় এক কর্মীর কথায়, “টাকা দিয়ে চাকরি হয়েছে কী হয়নি, সেটা পরের কথা। ভয় পাচ্ছি, আদালত না সেই সময়ের প্যানেল ধরে চাকরি বাতিল করে দেয়। তা হলেই সর্বনাশ।” কর্মীদের মনে যে ভয় আশঙ্কা কাজ করছে, তা স্বীকারও করে নিয়েছেন সংগঠনের নেতারাও। কৃষ্ণনগর পুর কর্মচারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক জ্যোতিষ দাস বলেন, “ওই সময়ে যাঁরা চাকরি পেয়েছেন, তাঁদের ভিতরে ভয় তো কাজ করছেই।”

সোমবার সিবিআই হানার পর রানাঘাট পুরসভার কর্মীদের মধ্যেও একটা চাপা ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। ২০১৪ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত তিন দফায় রানাঘাট পুরসভায় মোট ১৬১ জন কর্মী নিয়োগ হয়েছেন। চিন্তিত তাঁদের অনেকেই। এ দিন সিবিআই আধিকারিকেরা পুরসভায় দীর্ঘ ক্ষণ বসে নিয়োগ সংক্রান্ত নথিপত্র উল্টেপাল্টে দেখার সময় কয়েক জন কর্মীকে বেশ চিন্তিত দেখা গিয়েছে। এক কর্মী বলেন, ‘‘সিবিআই তাদের মতো করে তদন্ত করছে। জানি না, কোথা থেকে কী হয়।’’

যদিও রানাঘাট পুরসভার কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক বুদ্ধদেব চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা পুরসভায় অস্থায়ী কর্মী হিসেবে কাজ করেছেন, পরবর্তীতে তাঁরা পরীক্ষার মাধ্যমে স্থায়ী হয়েছেন। রানাঘাট পুরসভা নিয়োগের ক্ষেত্রে কোনও রকম আর্থিক লেনদেন হয়নি। তাই কর্মচারীরা এই তদন্ত নিয়ে কোনও ভাবেই চিন্তিত নন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Krishnanagar Municipality
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy