ধোঁয়া ওঠা লাল চায়ের গেলাস হাতে নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চা’য় মাতেন সেলিম। —নিজস্ব চিত্র।
চায়ের ঠেকে পাঁচ জন বসলে তিন জনেরই আলোচনার বিষয় হয় রাজনীতি। মুর্শিদাবাদের কান্দির জীবন্তী বাজারে চায়ের দোকানটি এ ক্ষেত্রে আবার অনন্য। সেখানে আড্ডাবাজদের আলোচনার মূল এবং একমাত্র বিষয়ই হল রাজনীতি। বাম-ডান, সব মনোভাবাপন্নই এই চায়ের দোকানে আড্ডা দেন। তবে দোকানের নাম বামেদের পতাকার রঙের সঙ্গে মেলে— ‘জীবন্তী লাল চা কমিটি’। রবিবার সন্ধ্যায় সেই দোকানে আচমকা হাজির সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। তাঁর আসার খবর শুনে দোকানও গমগমিয়ে উঠল সাধারণের ভিড়ে। সেখানে পঞ্চায়েত ভোটের আগে আড্ডা হল, আলোচনা হল আর খানিক জনসংযোগও সেরে ফেললেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক।
রবিবার বীরভূমে দলীয় কর্মসূচি শেষ করে কান্দি হয়ে বহরমপুর যাচ্ছিলেন সেলিম। তবে কান্দির জীবন্তীর বাজারে গিয়ে থমকে গেল সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের গাড়ি। বাম ছাত্রযুবদের আড্ডার ঠেক হিসেবে পরিচিত ‘জীবন্তী লাল চা কমিটিতে’ ঢুঁ দেন তিনি। সবার সঙ্গে খানিক জনসংযোগ করেন। ধোঁয়া ওঠা লাল চায়ের গেলাস হাতে নিয়ে ‘চায়ে পে চর্চা’য় মাতেন সেলিম।
‘জীবন্তী লাল চা কমিটি’ দোকানটির ক্রেতা স্থানীয় বাসিন্দারা। সকাল থেকে রাত্রি, সকলেই এখানে রাজনৈতিক তরজায় মাতেন। গরম চায়ের সঙ্গে জমে যায় আড্ডা-তর্ক, বিশ্লেষণ। ‘জীবন্তী লাল চা কমিটি’র নামে সমাজমাধ্যমে যে প্রোফাইল আছে, সেখানে তুলে ধরা হয় বামপন্থী মতাদর্শের কথা। সেই দোকানে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদকের এই হঠাৎ আগমনে উচ্ছ্বসিত যুবকরা। সেলিমের আসার খবর মেলায় কিছু ক্ষণের মধ্যেই জসীমউদ্দিনের চায়ের দোকানে ভিড় জমাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। শুরু হয় নিজস্বী তোলার হিড়িক। সেলিমের সঙ্গে হাসিমুখে ছবি তোলেন শাসকদলের কর্মী-সমর্থকেরাও।
চায়ের আড্ডায় বসে সেলিম বলেন, ‘‘চায়ের ঠেকে শ্রমজীবী মানুষের আনাগোনা বেশি থাকে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা হয়। অনেক কিছু জানার সুযোগ তৈরি হয়।’’
‘জীবন্তী লাল চা কমিটি’র সম্পাদক সফিউরের কথায়, ‘‘লাল চায়ের ঠেক হিসেবে পরিচিত হলেও এখানে (দোকানে) সব রাজনৈতিক দলের সমর্থকেরাই থাকেন। সেলিম’দার সঙ্গে যাঁরা ছবি তুলেছেন, তাঁদের মধ্যেও তৃণমূল, কংগ্রেস এমনকি, বিজেপির কর্মী-সমর্থকেরাও ছিলেন।’’
যদিও চায়ের আড্ডায় সেলিমের যোগদান নিয়েও কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। শাসকদলের মুর্শিদাবাদ জেলার চেয়ারম্যান আবু তাহের খানের কটাক্ষ, ‘‘লাল রক্তে বাংলাকে রাঙিয়ে এখন লাল চা খাচ্ছেন। এর থেকে বড় পরিহাস আর কী হতে পারে!’’
২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে বিজেপির প্রচারের অন্যতম ছিল ‘চায়ে পে চর্চা’। নরেন্দ্র মোদীর দলের তৎকালীন ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের মস্তিষ্কপ্রসূত এই প্রচার জনপ্রিয় হয়। তার পর বিভিন্ন দলের নেতাকেই দেখা গিয়েছে চায়ের আড্ডায় গিয়ে জনসংযোগ করতে। বাংলায় যেমনটা আকছার করেন বিজেপির সর্বভারতীয় সহ-সভাপতি দিলীপ ঘোষ। এ বার চায়ের আড্ডায় জুড়লেন সেলিমও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy