সীমান্তে কাঁটাতারের ওপারে পাট ও কলার মত লম্বা-উঁচু গাছ বা ফসল চাষ না করার জন্য গ্রামবাসীদের অনুরোধ করল বিএসএফ। সেই সঙ্গে কাঁটাতারের এ পারে ভারতীয় ভূখন্ডের দিকেও দু’শো মিটার পর্যন্ত এই ধরনের গাছ বা ফসল চাষ না করার কথাও বলা হয়েছে। যাতে অনুপ্রবেশকারীরা লম্বা-উঁচু গাছের আড়ালে আত্মগোপন করতে না পারে।
জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে অনুপ্রবেশ আটকাতেই এই ধরণের অনুরোধ করা হচ্ছে বলে বিএসএফের দাবি। বিএসএফের তরফে সীমান্তের গ্রামগুলিতে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে গ্রামবাসীদের সঙ্গে বৈঠক করে এমন আবেদন রাখা হচ্ছে। বাংলাদেশের বর্তমান অস্থির পরিস্থিতিতে এমন পদক্ষেপ জরুরি হয়ে পড়েছে বলে বিএসএফের দাবি।
বেশ কয়েক বছর আগে থেকেই সীমান্তে কাঁটাতারের দুই পারে জমিতেই পাট ও কলাগাছ না লাগানোর জন্য অনুরোধ করে আসছে সীমান্তরক্ষী বাহিনী। কখনও কখনও বিএসএফের তরফে এই বিষয়ে কড়া অবস্থানও নেওয়া হয়েছে। কিন্তু সীমান্তে উঁচু গাছের ফসল চাষ বন্ধ করা যায়নি। কারণ, সীমান্ত এলাকার মানুষ দীর্ঘদিন ধরেই এই ধরনের চাষ করে অভ্যস্ত হয়ে আছেন। সেই সঙ্গে এই দুই ফসল অপেক্ষাকৃত অর্থকরী হওয়ায় চাষিদের আগ্রহও বেশি। কিন্তু বর্তমানে সীমান্তের অবস্থা খুবই গুরুতর হওয়ায় বিএসএফ নতুন করে একই আবাদন করতে শুরু করেছে। বিএসএফ কর্তা জানান, সীমান্তে উঁচু ফসলের সাহায্যে ভারতে অনুপ্রবেশের আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যে কারণে সীমান্তে অতিরিক্ত সতর্কতার প্রয়োজন। বিএসএফের কর্তারা সীমান্ত গ্রামের বাসিন্দাদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
চাপড়ার হাটখোলা গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান আতিয়ার হালসানা বলেন, ‘‘বিএসএফ বলছে, চার ফুটের বেশি ফসল বোনা যাবে না। কিন্তু সেটা কী করে সম্ভব। কারণ, এখন পাট ছাড়া অন্য ফসল হবে না। আর ধান চাষ করতে গেলে জলের খরচ অনেক। তাতে কৃষকের খরচ উঠবে না। তাই অনেকেই রাজি হচ্ছে না।” তিনি বলেন, “সম্প্রতি আমাদের সঙ্গে বিএসএফ বৈঠক করেছে। আমরা গ্রামবাসীদের বোঝানোর চেষ্টা করছি। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ভাল না।”
বিএসএফের দক্ষিণবঙ্গের মুখপাত্র এন কে পান্ডে বলেন, “দেশের সার্বিক নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা অনুরোধ করছি। কোনও ভাবেই জোরকরা হচ্ছে না।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)