টেট পরীক্ষা দিয়েছেন বাবা ও ছেলে। —নিজস্ব চিত্র।
টেট দিলেন বাবা ও ছেলে। ৫০ বছর বয়সে বাবা পরীক্ষা দিলেন লালবাগের একটি কেন্দ্রে, ছেলে বহরমপুরের গোয়ালজানের স্কুলে। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া ফরাক্কার চাঁদোর গ্রাম থেকে শনিবারই বেরিয়েছিলেন পরীক্ষা দিতে। রবিবার পরীক্ষা দিয়ে ঘরে ফিরলেন আঁধার গড়িয়ে।
প্রাথমিক শিক্ষকতার চাকরি পেতে রবিবার টেট পরীক্ষায় বসলেন ছেলের সঙ্গে বাবাও।ফরাক্কার চাঁদোর গ্রামের বাসিন্দা বছর সাতাশ বয়সী ছেলে দেলোয়ার হোসেন এম এ পাশ করে ডিএল এড প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। অতীতের টেট পরীক্ষাগুলির মতো এ বারের টেটের ভাগ্যও যে অনিশ্চিত তা বিলক্ষণ জানেন তারা।তাই তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন বাবা ছেলে দুজনেই।
বাবা মোকাম্মেল হক অবশ্য এই প্রথম নয়। এর আগে সব টেটেই বসেছেন তিনি।কিন্তু ডাক আসে নি।পেশায় গ্রামেরই চাঁদোর প্রাথমিক স্কুলের পার্শ্ব শিক্ষক বাবা মোকাম্মেল।বয়স ৫০ পেরিয়েছে।উচ্চ মাধ্যমিক পাশ।
তিনি বলছেন,“সারা জীবন কি পার্শ্ব শিক্ষক হয়েই কাটাব?সামান্য বেতন।সংসার চালিয়ে ছেলেদের উচ্চ শিক্ষায় বাইরে পাঠাব সে সামর্থ্য ছিল না।চেয়েছিলাম পূর্ণ সময়ের শিক্ষক হতে। তাতে বেতনটাও বাড়বে।পার্শ্ব শিক্ষকদের জন্য টেটে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ রয়েছে।সেই আশাতেই তাই পর পর টেট দিয়ে চলেছি যদি ভাগ্যের চাকা ঘোরে।এই বয়সে আর পড়াশুনোয় কি মন বসে ? তবু আশা যদি চাকরিটা পাই।আর পেলেইবা কবছর করতে পারব ? তাই আশা করছি আমি না পেলেও ছেলেটা যেন পায়। ”
বাবা মোকাম্মেল বলেন,“টেট পরীক্ষার সেন্টার পড়েছিল লালবাগে।চাঁদোর গ্রামটি পশ্চিমবঙ্গের ফরাক্কায় ঝাড়খণ্ড লাগোয়া,ঝাড়খণ্ড মাত্র ১০০ মিটার দূরে।তাই আগের দিনই লালবাগে পৌঁছে সেখানেই রাত কাটায়।”
বাবার পরীক্ষা কেন্দ্র লালবাগে থাকলেও ছেলে দেলোয়ার হোসেনের পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল বহরমপুরের গোয়ালজানে।বাবার সঙ্গেই বেরিয়েছিলেন আগের দিন পরীক্ষা দিতে।
ছেলে দেলোয়ার বলছেন, “বাবার সঙ্গে পরীক্ষা দিতে যেতে যেমন ভালও লেগেছে ,তেমনই খারাপও লেগেছে।এমনটা তো হওয়ার কথা ছিল না ?৫০ বছর বয়সে বাবাকে পরীক্ষায় বসতে হচ্ছে একটা চাকরির জন্য এটা কি কাম্য ছিল?আগের টেটগুলি যদি ঠিক মত হত তবে বাবা হয়ত চাকরিটা পেতেন।পরিবারের আর্থিক স্বচ্ছলতা থাকলে আমিও আরও অন্যদিকে যাওয়ার সুযোগটা পেতাম।এটা কি বাবার পরীক্ষা দেওয়ার বয়স?সেই কবে মাধ্যমিক দিয়েছি বাবার হাত ধরে গিয়ে।আজ বাবার সঙ্গে চাকরির পরীক্ষায় বসতে একটু কষ্ট তো হয় !
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy